রেশম, পাট, আম— মুর্শিদাবাদের এই তিনটি ফসলের নাম গোটা দেশে রয়েছে। কিন্তু নানা কারণে মুর্শিদাবাদের কৃষকেরা এই তিনটি ফসল থেকে মুখ ফেরাচ্ছেন। বরাবরই কৃষকেরা এই সব কৃষিজ ফসলকে তুলে ধরতে সরকারি হস্তক্ষেপের দাবি তোলেন। সেই সঙ্গে দেশ বিদেশের পর্যটকদের কাছে মুর্শিদাবাদের পর্যটন শিল্পের নামও রয়েছে। জেলার বিড়ি মহল্লার উন্নয়নের দাবি যেমন ওঠে, তেমনই গঙ্গা পদ্মার ভাঙন রোধের দাবিও ওঠে। তাই তো কেন্দ্রীয় বা রাজ্য সরকারের বাজেট এলেই সেদিকে তাকিয়ে থাকেন তামাম মুর্শিদাবাদবাসী। বিশেষ করে, আম ও রেশম এবং পর্যটন নিয়ে নয়া প্রকল্পের আশায় রয়েছেন জেলাবাসী।
আগামী বছরে রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন। তার আগে চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে কেন্দ্রীয় সরকার বাজেট পেশ করেছে। তাতে মুর্শিদাবাদের কপালে তেমন কোনও প্রকল্প নেই। রাজ্য বাজেট কি মুর্শিদাবাদের প্রতি সদয় হবে, সেই প্রশ্ন উঠছে।
মুর্শিদাবাদ ডিস্ট্রিক্ট চেম্বার্স অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের সাধারণ সম্পাদক স্বপন ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘কেন্দ্রীয় সরকারের বাজেটে মুর্শিদাবাদ তেমন কিছুই পায়নি। আমরা চাই মুর্শিদাবাদের উন্নয়নে রাজ্য সরকারের বাজেটে ছাপ থাকবে।’’ বহরমপুর মুর্শিদাবাদ সাংগঠনিক জেলা তৃণমূলের চেয়ারম্যান রবিউল আলম চৌধুরী বলেন, ‘‘বাজেটে কী হয় তা আগে থেকে বোঝা যায় না। নিশ্চয় বাজেট ভাল হবে।’’ বিজেপির বহরমপুর মুর্শিদাবাদ সাংগঠনিক জেলার সভাপতি শাখারভ সরকার বলেন, ‘‘বিজেপির নেতৃত্বে চলা কেন্দ্রীয় সরকার কোনও একটি জেলার কথা নয়, সারা দেশের সার্বিক মানুষের কথা ভাবে। সে কারণে দেশের সকলের কথা ভেবে বাজেট করেছে।’’ তাঁর দাবি, ‘‘এত কিছুর পরেও কেন্দ্রীয় সরকার ১১ কিলোমিটার বহরমপুর বাইপাস রাস্তা করেছে, চুঁয়াপুর উড়ালপুল চালু করেছে, নশিপুর রেলসেতু চালু করেছে। তৃণমূল আগে এমন কিছু করুক।’’
কী কী দাবী রয়েছে?
জেলার বাসিন্দারা জানান, পর্যটনের জেলা হচ্ছে মুর্শিদাবাদ। এই জেলার পর্যটন শিল্পের উন্নয়নে প্রকল্প চাই। দিন কয়েক আগেই বিশ্ববঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলন হয়েছে। সেখানে মুর্শিদাবাদের জন্য কোনও চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়নি। ভারী অথবা মাঝারি শিল্পের উদ্যোগ নিতে হবে রাজ্যকে। জেলাবাসীর দীর্ঘদিনের দাবি নদী বন্দরের। মুর্শিদাবাদ বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে উঠলেও আজও খুড়িয়ে চলছে। তাই পূর্ণাঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় গড়ার দাবি উঠেছে। নদী সংস্কারের দাবি উঠেছে। বেলডাঙা ২ ব্লক এবং ভগবানগোলা ১ ও ২ ব্লকে কোনও কলেজ নেই। পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য প্রকল্প আনতে হবে।
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)