Advertisement
E-Paper

হাসপাতালে ফাঁসে ঝুলে বন্দির দেহ

রবিবার সকালে শক্তিনগর জেলা হাসপাতালের শৌচাগারে দরজার উপরের আংটায় গলায় ব্যান্ডেজের ফাঁস‌ লাগানো অবস্থায় পাওয়া যায় বন্দির মৃতদেহ। কিন্তু ঝুলন্ত নয়, বরং বসা অবস্থায়। ফলে পুলিশের হেফাজতে থাকা এক বন্দি কী ভাবে মারা গেল, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৩ জুলাই ২০১৮ ০০:২৯
সেই ঘরের সামনে। নিজস্ব চিত্র

সেই ঘরের সামনে। নিজস্ব চিত্র

হাসপাতালের ওয়ার্ডে ভর্তি বন্দি। অথচ রাতে তার ঘরের বাইরে কোনও পাহারা নেই!

রবিবার সকালে শক্তিনগর জেলা হাসপাতালের শৌচাগারে দরজার উপরের আংটায় গলায় ব্যান্ডেজের ফাঁস‌ লাগানো অবস্থায় পাওয়া যায় বন্দির মৃতদেহ। কিন্তু ঝুলন্ত নয়, বরং বসা অবস্থায়। ফলে পুলিশের হেফাজতে থাকা এক বন্দি কী ভাবে মারা গেল, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।

পুলিশ জানায়, মৃতের নাম রবীন রায় (৬০)। বাড়ি তাহেরপুরের রায়দিঘি এলাকায়। গত ১৮ জুলাই নাবালিকাকে ধর্ষণ ও আর এক নাবালিকার শ্লীলতাহানির অভিযোগে এলাকার লোকজন তাকে ধরে গণপিটুনি দেয়। পুলিশ তাকে আহত অবস্থাতেই গ্রেফতার করে। আঘাত গুরুতর হওয়ায় প্রথমে রানাঘাট হাসপাতালে এবং ২০ জুলাই তাকে শক্তিনগর জেলা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়।

হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, প্রিজনার ওয়ার্ডে রাখা হয়েছিল রবীনকে। সেটির শৌচাগারেই মেলে তার মৃতদেহ। শনিবার রাতে দরজার বাইরে তালা দিয়ে ঘুমোতে গিয়েছিলেন পাহারার দায়িত্বে থাকা পুলিশকর্মীরা। সকালে চিকিৎসাধীন আরেক বন্দি শৌচাগারে গিয়ে রবীনের দেহ দেখতে পায়। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে মৃতদেহটি উদ্ধার করে। পরে জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট এবং এগজ়িকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট গিয়ে তদন্ত করেন। প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশের অনুমান, গলায় ফাঁস দিয়ে সে আত্মঘাতী হয়েছে।

গলায় ফাঁস লাগানো থাকলেও দেহটি বসা অবস্থায় পাওয়া যাওয়ায় এটা আত্মহত্যা না খুন, সেই প্রশ্ন তুলেছেন রবীনের পরিবারের লোকেরা। রবীনের জামাই স্বপন সরকার বলেন, “উনি প্রায় মেঝের উপরে বসে ছিলেন। গলায় ফাঁস দিয়ে মরলে এটা কি হতে পারে?’’

শনিবার সন্ধ্যাতেই রবীনের স্ত্রী ও ছেলে তাঁর সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন। ছেলে প্রতাপের দাবি, তখন তাঁদের মনেই হয়নি এ রকম কোনও ঘটনা ঘটতে পারে। তিনি বলেন, “কালও বাবার সঙ্গে কথা বলে গিয়েছি। রাতারাতি কী এমন ঘটল? এর পিছনে অবশ্যই কোনও রহস্য আছে।”

যদিও পুলিশ জোর দিয়ে বলার চেষ্টা করছে, আত্মহত্যাই করেছে রবীন। প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, ওই ঘরের আরও দুই বন্দি ছিল। তাদের এক জন রাতে ঘুমের ওষুধ খেয়ে ঘুমোয়। সে ঘুমিয়ে পড়ার পর তার হাতের ব্যান্ডেজ খুলে নিয়েছিল রবীন। সেই ব্যান্ডেজই দরজার আংটায় লাগিয়ে ঝুলে পড়ে সে। তাদের দাবি, ঝুলে পড়লে বসা অবস্থায় দেহ পাওয়া অস্বাভাবিক নয়। মৃত্যুর পরে ভারে দেহ ঝুলে পড়তেই পারে। এ দিনই দেহের ময়নাতদন্ত হয়েছে। তার রিপোর্ট পাওয়ার পরে বিষয়টি স্পষ্ট হবে।

আত্মহত্যা হোক বা না হোক, নিজেদের হেফাজতে থাকা বন্দির মৃত্যুর দায় পুলিশ এড়াতে পারে না বলেই দাবি গণতান্ত্রিক অধিকার রক্ষা সমিতির রাজ্য কমিটির সহ-সভাপতি তাপস চক্রবর্তীর। তিনি বলেন, “উনি যদি আত্মহত্যাও করেন, তার দায় অস্বীকার করতে পারে না পুলিশ। কোথায় ছিল নিরাপত্তারক্ষীরা? কেন তিনি আত্মঘাতী হলেন?” জেলার পুলিশ সুপার রূপেশ কুমার বলেন, “তদন্ত হচ্ছে। আমরা সব দিক খতিয়ে দেখছি।”

Death Suicide Mysterious Death Hospital
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy