Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪
সিআইডির দ্বারস্থ পরিবার

কিশোরের রহস্যমৃত্যু বাদকুল্লায়

তরতাজা ছেলেটা বন্ধুদের সঙ্গে গঙ্গায় স্নান করতে গিয়েছিল। রেল লাইনের ধারে মিলেছিল তার লাশ। পুলিশের কাছে খুনের অভিযোগ দায়ের হয়েছে দু’মাস আগে। খুন কিনা, তা নিয়েও ধন্দ রয়েছে পুলিশে। বিচার চেয়ে সিআইডি-র দ্বারস্থ হল বাদকুল্লার ওই ছাত্রের পরিবারটি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কৃষ্ণনগর শেষ আপডেট: ৩০ জুলাই ২০১৬ ০২:০৫
Share: Save:

তরতাজা ছেলেটা বন্ধুদের সঙ্গে গঙ্গায় স্নান করতে গিয়েছিল। রেল লাইনের ধারে মিলেছিল তার লাশ।

পুলিশের কাছে খুনের অভিযোগ দায়ের হয়েছে দু’মাস আগে। খুন কিনা, তা নিয়েও ধন্দ রয়েছে পুলিশে। বিচার চেয়ে সিআইডি-র দ্বারস্থ হল বাদকুল্লার ওই ছাত্রের পরিবারটি।

তাহেরপুর থানার বাদকুল্লা-সুরভিস্থানের বাসিন্দা জয়ন্ত মন্ডল(১৮) স্থানীয় ইউনাইটেড অ্যাকাডেমিতে দ্বাদশ শ্রেণিতে পড়ত। পুলিশ ও পারিবারিক সূত্রে জানা গিয়েছে, ২২ মে রাতে পাতুয়ার ধর্মদা রেল ব্রিজের কাছে তার দেহ উদ্ধার হয়। পর দিন জয়ন্তের মৃতদেহ সনাক্ত করেন তার পরিবার।

সাত দিন পর জয়ন্তর দাদা সম্রাট মন্ডল জয়ন্তেরই তিন বন্ধু, পাটুলির বাসিন্দা ভাস্কর ঘোষ, বাবন ঘোষ ও টুকাই সাহার বিরুদ্ধে কৃষ্ণনগর জিআরপি থানায় খুনের অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগ ছিল, জয়ন্তকে খুন করে তার দেহ রেল লাইনের ধারে ফেলে গিয়েছিল তার তিন বন্ধু।

তার পরে পার হয়ে গিয়েছে দু’মাস। পুলিশ কাউকে গ্রেফতার করে নি। কৃষ্ণনগর জিআরপি থানার ওসি সুনীল কুমার ঘোষ বলেন, “ময়নাতদন্তের রিপোর্টে খুন বলা হয় নি। বলা হয়েছে ভারি কিছুর ধাক্কায় মৃত্যু হয়েছে ওই ছাত্রের।” পুলিশ সেই ‘ভারি কিছু’কে ট্রেনের ধাক্কা বলেই মনে করছে। কিন্তু, তা যে ট্রেনেরই ধাক্কা, তার পক্ষে যুক্তি কী? উত্তর মেলেনি।

পুলিশের ধারণা তাহলে কী? সুনীলবাবু বলেন, “ওই তিন অভিযুক্ত যুবক খুন করেছে বলে এখনও পর্যন্ত সাক্ষ্য প্রমানে উঠে আসে নি। সেই কারণেই আমরা এখনও তাদের গ্রেফতার করিনি।”

যদিও একথা মানতে নারাজ পরিবার। সম্রাটবাবু জানিয়েছেন, তাঁর ভাই পড়াশুনোর পাশাপাশি ইলেট্রিকের কাজ শিখছিল। ঘটনার দিন বেলা সাড়ে ১১টা নাগাদ ভাইয়ের বন্ধু ভাস্কর ঘোষ তাকে ডাকতে আসে গঙ্গায় স্নান করতে যাবে বলে। বাড়ি থেকে বেরিয়ে সে আর ফেরেনি। জয়ন্তের পরিবার জানিয়েছে, তাঁরা খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, পরে সে ভাস্কর, বাবন ঘোষ এবং তাদের এক বন্ধুর সঙ্গে ফুলিয়ার বয়রা ঘাটে স্নান করতে গিয়েছিল।

ফেরার পথে শান্তিপুরের বুঁইচার কাছে একটা সাইকেলের সঙ্গে জয়ন্তদের মোটরবাইকের ধাক্কা লাগে। তাতে গুরুতর আহত হয় ভাস্কর। চোট লাগে জয়ন্তরও। দু’জনকেই ফুলিয়া প্রাথমিক চিকিৎসা কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়। ভাস্করকে ছেড়ে দেওয়া হয়। ভাস্কর এবং বাকিরা ফিরে আসে। তার পর থেকে আর খোঁজ মেলেনি জয়ন্তের। কিন্তু কেন তাঁদের মনে হচ্ছে খুন করা হয়েছে জয়ন্তকে? তার কাকা বিপুল ঘোষের যুক্তি, ইলেকট্রিকের কাজে জয়ন্তের কদর বাড়ছিল। ইলেকট্রিক মিস্ত্রি ভাস্কর তা মানতে পারেনি। এলাকার এক কিশোরীর সঙ্গে ভাস্করের এক বন্ধু টুকাই এবং জয়ন্তের সম্পর্ক ছিল। সে দিন ভাস্কররা টুকাইকে ফোন করে ডাকে। তাঁদের যুক্তি, ট্রেনের ধাক্কায় জয়ন্তের মৃত্যু হলে, রেলের কাছে তার তথ্য থাকত। কিন্তু রেলের কাছে সেই সম্পর্কে কোনও তথ্য নেই।

যদিও এই অভিযোগ অস্বীকার করে ভাস্কর ঘোষ বলেন, “সে দিন আমরা দুজনই শুধু নদীতে স্নান করতে দিয়েছিলাম। এক সঙ্গেই ফিরেছি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Ganges youth Body recovered
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE