প্রতীকী ছবি
বিজেপির প্ররোচনাতেই মহিশুরা পঞ্চায়েতের বাসিন্দাদের একটা বড় অংশ রেলপথ নির্মাণের জমি দিতে অনিচ্ছা প্রকাশ করছেন। থমকে গিয়েছে ‘নবদ্বীপ ধাম-নবদ্বীপ ঘাট’ রেল প্রকল্পের কাজ। শনিবার মহিশুরার সভা থেকে সরাসরি এই অভিযোগ তুলেছে তৃণমূল। যদিও অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দিয়েছে বিজেপি।
নবদ্বীপ থেকে শিয়ালদহ পৌঁছনোর জন্য এখনও তিনটি ট্রেন বদল করতে হয়। একটি ট্রেনে ব্যান্ডেল, সেখান থেকে নৈহাটি। সেখান থেকে আবার ট্রেন বদলে শিয়ালদহ। প্রায় সাড়ে তিন থেকে চার ঘণ্টা সময় লেগে যায়। গঙ্গার উপর দিয়ে সেতু গড়ে পশ্চিম পাড়ের নবদ্বীপের সঙ্গে পূর্ব পাড়ের কৃষ্ণনগরকে যুক্ত করে এক ট্রেনে সোজা শিয়ালদহ আসার স্বপ্ন নবদ্বীপের বেশিরভাগ বাসিন্দাই দীর্ঘদিন ধরে লালন করছেন। এতে আড়াই থেকে তিন ঘণ্টার মধ্যে সরাসরি পৌঁছে যাওয়া যাবে শিয়ালদহে।
প্রশাসন সূত্রের খবর, প্রকল্পের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ গঙ্গার উপরে রেল ব্রিজও তৈরি হয়ে গিয়েছে। পূর্ব পারেও কোনও সমস্যা নেই। শান্তিপুর থেকে কৃষ্ণনগর জংশন এবং কৃষ্ণনগর থেকে নবদ্বীপ ব্লকের আমঘাটা পর্যন্ত ব্রডগেজ লাইনের কাজ সম্পূর্ণ। কিন্তু পশ্চিম পারে রেল ব্রিজ থেকে নেমে প্রায় পাঁচ কিলোমিটার রাস্তায় রেললাইন পাতার কাজ বাকি। এই লাইন দিয়েই রেল ব্রিজের সঙ্গে যুক্ত হবে নবদ্বীপধাম স্টেশন। এই পাঁচ কিলোমিটার পথেই জমি অধিগ্রহণে গোল বেঁধেছে।
এই অংশ নবদ্বীপ ব্লকের মহিশুরা পঞ্চায়েতের গদখালি মৌজা এবং তেঘড়ি মৌজার অন্তর্গত। রেলপথের জন্য জমি দিতে কোনও মতেই রাজি নন মহিশুরার বাসিন্দারা। জমি দিতে অনিচ্ছার কথা তাঁরা লিখিত ভাবে সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে জানিয়েও দিয়েছেন। ফলে এক ট্রেনে নবদ্বীপধাম থেকে শিয়ালদহ পৌঁছনোর বহু-চর্চিত প্রকল্প থমকে গিয়েছে। তৃণমূল অভিযোগ করছে, গ্রামের সরল মানুষকে মিথ্যা এবং ভুল বুঝিয়ে উন্নয়নের কাজে বাধা দেওয়ার চক্রান্ত করছে বিজেপি।
শনিবার সন্ধ্যায় মহিশুরা গ্রামে অনিচ্ছুক জমিদাতাদের বোঝাতে একটি সভার আয়োজন করে নবদ্বীপ শহর এবং ব্লক তৃণমূল। ছিলেন নবদ্বীপের বিধায়ক পুণ্ডরীকাক্ষ সাহা। সভায় পুণ্ডরীকাক্ষবাবু বলেন, “মহিশুরা অঞ্চলের কিছু মানুষকে ভুল পথে চালিত করছে বিজেপি। বিজেপির কথায় বিভ্রান্ত হবেন না।” রানাঘাট কেন্দ্রের সাংসদ তাপস মন্ডল বলেন, “ বিজেপির তরফে উস্কানিমূলক প্রচার করা হচ্ছে এই রেলপথ নিয়ে। মনে রাখবেন, তৃণমূলের ঘোষিত নীতি হল, কারও ইচ্ছার বিরুদ্ধে জমি অধিগ্রহণ করা হবে না। মানুষ স্বেচ্ছায় জমি দিলে তবেই উন্নয়নের কাজ হবে।’’
বিজেপির নদিয়া উত্তর জেলা সভাপতি মহাদেব সরকার বলেন, “এই রেলপ্রকল্প কেন্দ্রের টাকায় হচ্ছে। সে কাজে বাধা দেব কেন? আসলে উন্নয়ন নিয়ে তৃণমূলের বলা কথা আর কাজের মধ্যে অনেক ফারাক। তাতেই ভয় পেয়েছেন তৃণমূলের নেতারা। এখন দায় এড়াতে বিজেপির কাঁধে বন্দুক রাখতে চাইছেন।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy