প্রতীকী ছবি।
এক দিকে নাগরিকপঞ্জি এবং নাগরিকত্ব আইন নিয়ে ভয়, অন্য দিকে ভোটার কার্ড-আধার কার্ড সংশোধনের কাজে জটিলতা। এই দুইয়ের ধাক্কায় জেলার বিভিন্ন প্রান্তে কিছু অসাধু লোক জাল আধার কার্ড বা ভোটার কার্ড তৈরির ব্যবসা ফেঁদে বসেছে বলে অভিযোগ উঠছে। পরিচয়পত্র হাতে রাখার মরিয়া চেষ্টায় অনেকেই এদের শরণাপন্ন হচ্ছেন বলে পুলিশ ও প্রশাসন সূত্রের খবর।
মঙ্গলবার তেহট্টের পাথরঘাটা এলাকার একটি বাড়িতে এই রকম ভুয়ো আধার কার্ড তৈরি হচ্ছে বলে খবর আসে বিডিও-র কাছে। অভিযোগকারী জানান, এলাকায় রীতিমতো মাইকে প্রচার চলছে যে, পাথরঘাটা এলাকার একটি গ্রামে আধার কার্ড তৈরি ও সংশোধন করে দেওয়া হবে।
অভিযোগ পেয়ে তেহট্ট-১ ব্লকের বিডিও অচ্যুতানন্দ পাঠক নিজে পুলিশের সঙ্গে অভিযান চালান। কিন্তু ঘটনাস্থলে গিয়ে তিনি সেই দোকানটি বন্ধ দেখেন। তবে পুলিশ ও প্রশাসন বিষয়টির দিকে নজর রাখছে এবং খোঁজখবর নিচ্ছে। দিন কয়েক আগে টাকা নিয়ে জাল আধার কার্ড তৈরি ও সংশোধন করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল মুরুটিয়া থানার রসিকপুর গ্রামে। অভিযোগ পেয়ে তেহট্টের মহকুমাশাসক অনীশ দাশগুপ্ত সেই দোকানে তল্লাশি চালিয়ে একটি স্ক্যানার, একটি ল্যাপটপ ও একটি ফিঙ্গার প্রিন্ট যন্ত্র আটক করেছিলেন। একই রকম অভিযোগ মঙ্গলবার ফের তেহট্ট-য় উঠল।
যে ব্যক্তি এখানে অভিযোগ জানিয়েছেন তিনি গোবিন্দপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এক কর্মী। তাঁর কথায়, ‘‘মঙ্গলবার সকাল থেকে এলাকায় মাইকে প্রচার করা হচ্ছিল যে, পাথরঘাটা গ্রামের একটি দোকানে আধার কার্ড সংশোধন হবে। আমার আধার কার্ডে জন্ম তারিখ ছিল না। আমি ব্যাঙ্কে গিয়ে সেটা ঠিক করাতে পারিনি। এ দিন মাইকে প্রচার শুনে প্রথমে ভেবেছিলাম সেখানে যাব।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘ মাইকে একটা ফোন নম্বর বলা হচ্ছিল। সেই নম্বরে ফোন করে আমার আধার কার্ড সংশোধন করা যাবে কিনা জানতে চাই। অন্য প্রান্ত থেকে এক জন জানান, এক হাজার টাকা নিয়ে আসতে হবে। টাকার কথা শুনে আমার সন্দেহ হয়। তখন বিডিওকে জানাই।’’
এলাকার বাসিন্দাদের মত, সরকারের উচিত আরও বেশ কিছু জায়গায় আধার কার্ড তৈরি ও সংশোধনের কেন্দ্র তৈরি করা। মাসখানেক আগে অনেকেই তেহট্ট স্টেট ব্যাঙ্কে সারা রাত লাইন দিয়ে কুপন পেয়েছেন। তাঁদের কার্ডের কাজ শেষ হতেই ২০২৩ সাল লেগে যাবে। এ দিকে নাগরিকত্ব আইন নিয়ে সাধারণ মানুষের মনে আতঙ্ক বাড়ছে। এই পরিস্থিতির সুযোগ নিচ্ছে কিছু অসাধু লোক। যেখানে ব্যাঙ্কে আধার কার্ড করতে মাত্র ২৫ টাকা লাগে সেখানে এই সব অসাধু চক্র ৮০০-১০০০ টাকা দাবি করছে বলে অভিযোগ। তেহট্টের মহকুমাশাসক অনীশ দাশগুপ্ত বলেন, ‘‘অভিযোগ পেয়ে বিডিও নিজে তদন্তে গিয়েছিলেন। তবে সেখানে দোকান বন্ধ থাকায় কিছু পাওয়া যায়নি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy