এক বছর পরেই রাজ্যের বিধানসভা ভোট। ওই ভোটের আগে নিজের বিধানসভা কেন্দ্রে প্রার্থী হওয়া নিয়ে প্রকাশ্যে মুখ খুললেন ভরতপুরের বিধায়ক তৃণমূলের হুমায়ুন কবীর। তিনি বলেন, “আমার বিধানসভা কেন্দ্র দু’টি ব্লক নিয়ে গঠিত। দু’জন ব্লক সভাপতি আছেন। দলের ব্লক সভাপতি পদ থেকে তাঁদের সরানো না হলে আমি ভরতপুর কেন্দ্রে প্রার্থী হব না।”
যদিও তৃণমূলের বহরমপুর মুর্শিদাবাদ সাংগঠনিক জেলার সভাপতি অপূর্ব সরকার বলেন, “আমাদের দল অত্যন্ত শৃঙ্খলাবদ্ধ দল। দলের টিকিট দেওয়া হয় কাজের পারফরমেন্সের বিচারে। যেটা আমাদের দলের সর্বোচ্চ নেত্রী ও নেতা দেখেন। তাঁরাই সিদ্ধান্ত নেন কে বা কারা টিকিট পাবেন। এখানে আমি কেউ নয়।”
সপ্তাহ দু’য়েক আগেই জেলা সফরে লালবাগে এসেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ওই সভায় দলের মধ্যে কোনও গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব তিনি মেনে নেবেন না বলেও ঘোষণা করেছিলেন। এমনকি নেত্রীর এমন মন্তব্যের পর হুমায়ুন জানিয়ে ছিলেন, “নেত্রীর মন্তব্যে আমি খুশি।” কিন্তু দলীয় সূত্রে জানা যায়, বিধানসভা ভোট যতই এগিয়ে আসছে দলের মধ্যে টিকিট পাওনা নিয়ে ছুটোছুটি শুরু করেছেন দলের একাংশ। যদিও হুমায়ুন সেই দৌড়োদৌড়ির মধ্যে নেই। বরং হুমায়ুন বলেন, “আমি জেলার রাজনীতিটা খুব ভাল ভাবে বুঝি বা জানি। আমাকে ২০২১ সালে আমাদের নেত্রী ভরতপুরের টিকিট দিয়েছিলেন। আমি সেই আসনে জয়ী হয়েছি। কিন্তু ২০২২ সাল থেকে আমার কেন্দ্রে দু’জন ব্লক সভাপতি যে ভাবে আমাকে অপদস্থ করে চলেছে তাতে ওই সভাপতিদের না সরানো হলে আমি আর ভরতপুর কেন্দ্রে প্রার্থী হব না।”
তিনি দাবি করেন, “গোটা বিষয়টি আমি আমাদের দলের রাজ্য নেতৃত্বকে জানিয়ে দিয়েছি।” এখন দেখান দলের রাজ্য নেতৃত্ব হুমায়ুনের ওই দাবিকে কতখানি গুরুত্ব দেন।
দলীয় সূত্রে জানা যায়, ভরতপুর ১ ও ২ ব্লক নিয়ে ভরতপুর বিধানসভা গঠিত। ভরতপুর ১ ব্লক তৃণমূলের সভাপতি নজরুল ইসলাম ওরফে টারজেন ও ভরতপুর ২ ব্লক তৃণমূলের সভাপতি তথা জেলা পরিষদের মৎস্য কর্মাধ্যক্ষ মুস্তাফিজুর রহমান ওরফে সুমন। ওই দু’জন ব্লক সভাপতির নেতৃত্ব ২০২৩ সালের পঞ্চায়েত ভোটের সময় থেকেই দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে আসে। তারপর থেকে দু’ব্লক সভাপতির সঙ্গে কার্যত মুখ দেখাদেখি পর্যন্ত বন্ধ বলেও দলীয় সূত্রে খবর।
দলের ঘোষিত একই কর্মসূচি বিধায়ক হুমায়ুন ও দু’ব্লক সভাপতিরা পৃথক পৃথক ভাবে আয়োজন করেন। সবটাই দ্বন্দ্ব বলেই দাবি দলের একটি বৃহত্তর অংশের।
হুমায়ুন বলেন, “আমি বিধায়ক হিসাবে এলাকার সাধারণ মানুষের পাশে থাকব। যে ভাবে আমার নির্বাচিত কেন্দ্রে ব্লক সভাপতিদের মাধ্যমে অপদস্থের শিকার হয়েছি তাতে ওঁরা সভাপতি থাকলে আমি ভরতপুর কেন্দ্রে প্রার্থী হবো না।” তিনি আরও বলেন, “দল যদি তারপরেও আমাকে ভরতপুরেই প্রার্থী করে আমি তখন সেটা কেন গ্রহণ করতে পারব না সেটাও আবার জানিয়ে দেব।”
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)