নব্বই মিনিটের খেলায় দশ মিনিটের বিরতি। ফুটবল খেলায় এটাই দস্তুর। কিন্তু প্রবল গরমে নাজেহাল খেলোয়াড়দের বাঁচাতে ফুটবলের সেই চিরাচরিত নিয়ম বদলাতে বাধ্য হলেন ফুটবল আয়োজকেরা। মূল বিরতি ছাড়াও দুই অর্ধেই খেলার মাঝে দেওয়া হচ্ছে জলপানের বিরতি বা ‘কুল ব্রেক’।
নদিয়া ও মুর্শিদাবাদে স্থানীয় ফুটবল লিগে শুরু হয়ে গিয়েছে এ মরসুমের ছোটদের বিভাগের খেলা। চলছে অনূর্ধ্ব ষোলো বয়সীদের সাব জুনিয়র লিগ। ফুটবল ক্যালেন্ডার মেনে প্রতি বছর জুন থেকে সাব জুনিয়র লিগ দিয়েই শুরু হয় ফুটবল মরসুম। এর পরে একে একে জুনিয়র, সিনিয়র, সুপার লিগের নির্ঘণ্ট তৈরি হয়। এ বারেও সেই একই নিয়মে খেলা শুরু হয়েছে। কিন্তু বিপত্তি ঘটিয়েছে জুনের গরম আর তাপপ্রবাহ। চল্লিশ-একচল্লিশ ডিগ্রির ঝলসে দেওয়া তাপমাত্রায় খেলোয়াড়দের স্বস্তি দিতে ফুটবল কর্তারা সতর্ক। এমনিতে প্রায় সর্বত্র খেলা শুরুর সময় পিছিয়ে গিয়েছে। চালু করা হয়েছে প্রতি অর্ধের খেলার মাঝামাঝি সময়ে স্বল্পকালীন বিরতি। সেই সময় দেওয়া হচ্ছে নুন-চিনির সরবত কিংবা গ্লুকোজ মেশানো জল। রেফারি-লাইন্সম্যানদের জন্য ব্যবস্থা রাখা হয়েছে পর্যাপ্ত ঠান্ডা জলের।
বহরমপুরে গত ৭ জুন থেকে শুরু হয়েছে মুর্শিদাবাদ জেলা ফুটবলের জুনিয়র লিগ। সেখানে যোগ দিয়েছে জেলার বিভিন্ন প্রান্তের মোট চোদ্দোটি দলের অনূর্ধ্ব সতেরো বছর বয়সী খেলোয়াড়েরা। অন্য দিকে, নবদ্বীপে ১৭ জুন থেকে শুরু হয়েছে অনূর্ধ্ব ষোলো বয়সীদের নিয়ে সাব জুনিয়র লিগ। খেলছে নবদ্বীপ পুরঅঞ্চল এবং ব্লকের ন’টি দল।
নবদ্বীপে ফুটবল লিগের আয়োজক আঞ্চলিক ক্রীড়া সংস্থার সম্পাদক জয়ন্ত গোস্বামী জানান, গরমে খেলোয়াড়দের কথা ভেবে খেলা শুরুর সময় চারটে থেকে পিছিয়ে সাড়ে চারটে করা হয়েছে। প্রতি অর্ধে এক বার করে বিরতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। মুর্শিদাবাদ জেলা ক্রীড়া সংস্থার ফুটবল সাব কমিটির সভাপতি অর্ঘ্য দাস বলেন, “প্রবল গরমে বহরমপুর লিগের জুনিয়র ডিভিশনের খেলায় প্রতি অর্ধে সাড়ে বাইশ মিনিটের মাথায় দেওয়া হচ্ছে ছোট্ট বিরতি। ওই সময়ে খেলোয়াড়, রেফারি, লাইন্সম্যানদের দেওয়া হচ্ছে গ্লুকোজ-জল।
বিরতির এই নতুন নিয়ম প্রসঙ্গে ফুটবল কর্তাদের বক্তব্য, মানুষের জন্যই নিয়ম। ফুটবলের যে নির্ঘণ্ট তাতে করে খেলা পিছিয়ে দেওয়ার উপায় নেই। কারণ, তাতে গোটা মরসুমের ক্রীড়া-ক্যালেন্ডার ওলটপালট হয়ে যেতে পারে। তাই এই গরমে খেলোয়াড়দের সুস্থতার কথা মাথায় রেখে এমন সিদ্ধান্ত। মুর্শিদাবাদ জেলা ক্রীড়া সংস্থার সম্পাদক বিশ্বজিৎ ভাদুড়ী বলছেন, ‘‘এ বারে ভীষণ গরম পড়ছে। এমনিতে মাঠে পর্যাপ্ত জল ও অন্য সরঞ্জামের ব্যবস্থা থাকছে। গরমের জন্য প্রতিটি ম্যাচ শুরু হচ্ছে বিকেল সাড়ে চারটের সময়। মাঠে অক্সিজেন সিলিন্ডার রাখার কথাও ভাবা হচ্ছে।’’
প্রতিদিন এফইউসি ময়দান এবং বহরমপুর স্টেডিয়ামে এক সঙ্গে দুটো করে ম্যাচ খেলিয়ে দ্রুত লিগ শেষ করতে চাইছেন ফুটবল কর্তারা। অন্য দিকে নবদ্বীপ আঞ্চলিক ক্রীড়া সংস্থার সম্পাদক জয়ন্তবাবু জানান, সাব জুনিয়র লিগের মোট বাইশটা খেলার প্রতিটিই বিবেকানন্দ স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হচ্ছে। সেখানে সার্বিক পরিকাঠামো ভাল। সব মিলিয়ে ফুটবলে ‘কুল ব্রেক’ নিয়ে সরগরম দুই জেলার ময়দান। (তথ্য সহায়তা: শুভাশিস সৈয়দ)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy