উস্কানিমূলক কিছুই বলেননি বাংলাদেশে নিহত দীপুচন্দ্র দাস! ময়মনসিংহে যুবককে পিটিয়ে খুন এবং দেহ জ্বালিয়ে দেওয়ার ঘটনার তদন্তে এ বার এমনটাই জানিয়ে দিল বাংলাদেশের র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)।
ময়মনসিংহ র্যাব-১৪ কোম্পানির কমান্ডার মহম্মদ সামসুজ্জামানকে উদ্ধৃত করে বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যম ‘দ্য ডেলি স্টার’ জানিয়েছে, নিহত যুবক সমাজমাধ্যমে বা প্রকাশ্যে উস্কানিমূলক কোনও কথা বলেছিলেন, এমন প্রমাণ এখনও পর্যন্ত পাওয়া যায়নি। তদন্তে নেমে প্রত্যক্ষদর্শী এবং স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলেছেন র্যাবের আধিকারিকেরা। তাতে জানা গিয়েছে, সে দিন উপস্থিত জনতার কেউই দীপুকে উস্কানিমূলক কিছু বলতে নিজ কানে শোনেননি। বেশির ভাগেরই দাবি, তাঁরা অন্যের মুখে বিষয়টি শুনেছিলেন।
সামসুজ্জামান বলেন, ‘‘নিহত ব্যক্তি ফেসবুকে কিছু লিখেছেন, এমন তথ্য পাওয়া যায়নি। স্থানীয় লোকজন ও শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলেও এমন কিছু পাওয়া যায়নি।’’ বছর ২৭-এর দীপু স্থানীয় একটি পোশাকের কারখানায় কাজ করতেন। বৃহস্পতিবার রাতে পরিস্থিতি হাতের বাইরে চলে গেলে কারখানার নিরাপত্তার স্বার্থে দীপুকে বাইরে বার করে দেওয়া হয় বলে খবর। মুহূর্তে তাঁকে ঘিরে ফেলে উন্মত্ত জনতা। বেধড়ক মারধর করা হয় তাঁকে। তাতে যুবকের মৃত্যু হয়। এর পর দেহটি গাছের সঙ্গে বেঁধে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয় তাতে। সেই ভিডিয়ো দ্রুত সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে বৃহস্পতিবার রাতেই ঘটনাস্থলে পৌঁছোয় পুলিশ। পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার পর যুবকের দেহের অবশিষ্টাংশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়।
আরও পড়ুন:
ওই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত ১০ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। শনিবার রাতে বিবৃতি দিয়ে এ কথা জানিয়েছেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান মুহাম্মদ ইউনূস। ইউনূস বিবৃতিতে বলেছেন, ‘‘ময়মনসিংহের ভালুকায় দীপুচন্দ্র দাসকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় দশ জনকে গ্রেফতার করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। তাঁদের মধ্যে সাত জনকে গ্রেফতার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) এবং তিন জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।’’ ধৃতদের নামও প্রকাশ করেছে প্রধান উপদেষ্টার দফতর। র্যাবের হাতে ধৃতেরা হলেন মহম্মদ লিমন সরকার, মহম্মদ তারেক হোসেন, মহম্মদ মানিক মিয়া, এরশাদ আলি, নিজুম উদ্দীন, আলমগির হোসেন এবং মহম্মদ মিরাজ হোসেন আকন। পুলিশের হাতে ধৃতদের নাম মহম্মদ আজমল হাসান সগীর, শাহিন মিয়া এবং মহম্মদ নাজমুল। ময়মনসিংহের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবদুল্লা আল মামুন জানিয়েছেন, ধৃত ১০ জনকে ভালুকা থানায় পাঠানো হয়েছে। সেখানে তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।