Advertisement
E-Paper

বাড়ি ফেরেননি ওঁরা, জমল না ইদের মেলা

কারণ, এই এলাকার হাজার হাজার শ্রমিক কাজ করেন কেরলে। বন্যায় তাঁদের আটকে পড়া নিয়ে সব পরিবাবে একটা আতঙ্ক তৈরি হয়েছিল। অনেকে ফিরে এসেছেন। কিছুটা স্বস্তি ফিরেছে। কিন্তু পকেট খালি থাকায় তাঁরাও সে ভাবে মেলামুখো হতে চাইছেন না।

সুজাউদ্দিন

শেষ আপডেট: ২৪ অগস্ট ২০১৮ ০৭:০০
মেলা আছে, উচ্ছ্বাস নেই: বৃহস্পতিবার জলঙ্গিতে। নিজস্ব চিত্র

মেলা আছে, উচ্ছ্বাস নেই: বৃহস্পতিবার জলঙ্গিতে। নিজস্ব চিত্র

মেলা আছে। কিন্তু বেমালুম উধাও সেই উচ্ছ্বাস। পদ্মায় ঢেউ আছে। কিন্তু জলঙ্গির পদ্মাপাড়ে পদ্মাশ্রী মিলন মেলাতে সে ভাবে মানুষের ঢেউ কই! মেলা কমিটির কর্তা থেকে প্রশাসনের কর্তারাও জানাচ্ছেন, অন্য বছর ইদকে ঘিরে এই মেলায় ভিড় সামাল দিতে হিমশিম খেতে হয়। এ বারে সেই ভিড়টাই উধাও।

মেলা কমিটির সভাপতি প্রভাতরঞ্জন সরকার বলছেন, ‘‘এ বছর কেরলের বন্যায় সব এলোমেলো হয়ে গেল অনেক কিছুই। এই মেলাও তার মধ্যে পড়ে। আমরা মুখে যাই বলি না কেন, এই এলাকার অর্থনীতি অনেকটাই নির্ভর করে কেরলের উপরে। কেরল থেকে ফেরা শ্রমিকদের জন্য অপেক্ষা করে পুজো কিংবা ইদের বাজার। এ বছর বন্যার কারণে বহু শ্রমিক ঘরে ফেরেননি। কারও কারও এখনও পর্যন্ত খোঁজ নেই। যাঁরা ঘরে ফিরেছেন তাঁদের হাতেও নেই টাকা। ফলে মানুষের আনাগোনা কম। তার পরে যারা আসছেন তাঁরাও কেনাকাটা করছেন না। অনেক ব্যবসায়ী আমাদের জানিয়েছেন, এ ভাবে চললে তাঁদের পক্ষে এখানে টানা দশ দিন দোকান রাখা কঠিন হবে।’’

কেবল জলঙ্গি নয়, ডোমকলের কাটাকোপরা, রানিনগরের শেখপাড়ায় ইদকে ঘিরে বসা মেলাতেও একই অবস্থা তৈরি হয়েছে বলে দাবি মেলা কমিটির কর্তাদের। তাঁদের দাবি, ইদের আগে থেকেই ডোমকলের আকাশে আশঙ্কার মেঘ ঘনিয়েছিল। কারণ, এই এলাকার হাজার হাজার শ্রমিক কাজ করেন কেরলে। বন্যায় তাঁদের আটকে পড়া নিয়ে সব পরিবাবে একটা আতঙ্ক তৈরি হয়েছিল। অনেকে ফিরে এসেছেন। কিছুটা স্বস্তি ফিরেছে। কিন্তু পকেট খালি থাকায় তাঁরাও সে ভাবে মেলামুখো হতে চাইছেন না।

জলঙ্গির সিতাবুল ইসলাম ঘরে ফিরেছেন বৃহস্পতিবার। তাঁর কথায়, ‘‘আমরা অনেকেই খালি পকেটে কেরল থেকে চলে এসেছি। অনেকে না খেয়ে বিনা টিকিটে ঘরে ফিরেছেন। এর পরে মেলায় যাওয়ার পয়সা কোথায়।’’ জলঙ্গির সাহেবরামপুর এলাকার বাবু মণ্ডলের পরিবার মেলা দূরের কথা, এ বার ইদটাও তাঁদের কেটেছে চোখের জলে। কারণ, বন্যার কারণে তিনি ঘরেই ফিরতে পারেননি। তাঁর মেয়ে সুলেখা খাতুনের কথায়, ‘‘আব্বা প্রতি বছর কেরল থেকে ফিরে ইদের দিন বা পরের দিন আমাদের জলঙ্গি নিয়ে যায়। এ বার তো আব্বাই আসতে পারল না।’’ জলঙ্গিতে মিষ্টির দোকান দিয়েছেন ধোড়াদহের ধনঞ্জয় পাল। ধনঞ্জয়, আকবর আলি বলছেন, ‘‘অন্য বছর ভিড় সামাল দিতে পারতাম না। এ বার ক্রেতা কই! দোকান খুলে মাছি তাড়াতে হচ্ছে।’’

Kerala Floods Eid al-Adha
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy