বছর কয়েক আগেও ওদের কদর ছিল। আদর করে মালিক প্রিয় ঘোড়ার নাম রাখত ‘বাসন্তী’, মিতালি বা ‘পঙ্খীরাজ’।
ছোলা-গুড় সহযোগে দু’বেলা খাবার মিলত মালিকের কাছ থেকে। গ্রামের রাস্তায় ধুলো উড়িয়ে চলার সময়ে যেমন মাঝে মাঝে চাবুক পড়ত পিঠে, আবার অবসরে সেই পিঠেই হাত বুলিয়ে দিতেন মালিক। কারণ কাঁধে করে ঘোড়ার গাড়িটা টানার সঙ্গে সঙ্গে গোটা সংসারটাকেই যে টেনে নিয়ে যেত সেই ঘোড়া। কিন্তু বছর কয়েক ধরে লছিমনের দাপটে কদর কমতে থাকে ঘোড়ার। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে টমটমের (ঘোড়ার গাড়ি) জায়গা দখল করে লছিমন।
ডোমকল মহকুমার বিশেষ করে ইসলামপুর এলাকায় বছর কয়েক আগেও দাপিয়ে চলত ঘোড়ার গাড়ি। ইসলামপুর বাজার থেকে প্রত্যন্ত গ্রামগুলিতে পৌঁছে যেতে একমাত্র ভরসা ছিল টাঙ্গা। ফলে গাড়ির মালিকের সেই ঘোড়াগুলিকে আদর-যত্ন করে বাড়িতে রাখতেন রুজি-রুটির টানে। কিন্তু ইঞ্জিনচালিত ভ্যান পথে-ঘাটে চলতে শুরু করায় যাত্রীরাও পছন্দ করতে শুরু করেন লছিমনকেই। ফলে চাহিদা কমতে থাকে ঘোড়ার গাড়ির। আর সেই সঙ্গে কদর কমতে থাকে ঘোড়ার-ও। তারপর থেকেই বেওয়ারিশ ঘোড়ার দেখা মিলতে থাকে পথে-ঘাটে।