Advertisement
০২ মে ২০২৪
Death

রক্তমাখা পচা দেহ উদ্ধার রানাঘাটে, মা বললেন, ‘চার দিন ধরে ঘুমোচ্ছে ছেলে, কেউ ডাকবি না’!

বিছানা থেকে প্রৌঢ়ের রক্তাক্ত এবং পচাগলা দেহ উদ্ধার করতে গেলে বাধা দিলেন মা। জানালেন, ছেলে ঘুমোচ্ছেন। তাঁকে যেন না বিরক্ত করা হয়। নদিয়ার রানাঘাট পুর এলাকার ঘটনায় চাঞ্চল্য এলাকায়।

—প্রতীকী চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
রানাঘাট শেষ আপডেট: ১৬ অক্টোবর ২০২৩ ২১:৩১
Share: Save:

মা-ছেলের সংসার। ছেলেকে শেষ বার এলাকায় দেখা গিয়েছিল দিন পাঁচেক আগে। এক ব্যবসায়ী ওই বাড়িতে যেতেই মিলল ছেলের মৃতদেহ। প্রৌঢ়ের পচাগলা দেহের পাশেই দিব্যি ঘুমিয়ে পড়তেন মা। এ ভাবে ছেলের দেহ আগলে কাটিয়ে দেন চার চারটি দিন। বিছানা থেকে প্রৌঢ়ের রক্তাক্ত এবং পচাগলা দেহ উদ্ধার করতে গেলে বাধা দিলেন মা। জানালেন, ছেলে ঘুমোচ্ছেন। তাঁকে যেন না বিরক্ত করা হয়। নদিয়ার রানাঘাট পুর এলাকার এই ঘটনার সঙ্গে বছর কয়েক আগে কলকাতার রবিনসন স্ট্রিটের ঘটনার তুলনা টানছেন স্থানীয়রা। শেষ পর্যন্ত পুলিশ দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছে।

স্থানীয় সূত্রে খবর, মৃতের নাম স্বপন দাস। ৫২ বছর বয়সি ওই প্রৌঢ় দীর্ঘ দিন ধরে শ্বাসকষ্টের সমস্যায় ভুগছিলেন। তাঁর মা সাধনা দাসও বয়সজনিত কারণে অসুস্থ। অনুমান করা হচ্ছে, শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা থেকেই মৃত্য হয় স্বপনের। কিন্তু ছেলের মৃত্যু কোনও ভাবে মেনে নিতে পারেননি ওই বৃদ্ধা। পুলিশ সূত্রে খবর, সোমবার স্বপনের বাগানের সুপারি কিনতে যান এক ব্যবসায়ী। তিনি স্বপনের নাম ধরে ডাকাডাকি করেন। বেশ কিছু ক্ষণ পর স্বপনের মা বেরিয়ে এসে বলেন, ‘‘ছেলে চার দিন হল ঘুমোচ্ছে। কেউ ডাকবি না।’’ বৃদ্ধার কথা শুনে খটকা লাগে ওই ব্যবসায়ীর। তা ছাড়া বাড়ির দরজায় দাঁড়িয়ে তীব্র দুর্গন্ধ পান তিনি। স্থানীয়দের এই কথা জানান। এর পর বৃদ্ধাকে দরজা থেকে এক রকম সরিয়ে দিয়েই কয়েক জন প্রতিবেশী ঘরে ঢুকেছিলেন। আর ঢুকেই থ হয়ে যান তাঁরা। দেখেন, বিছানায় স্বপনের নিথর দেহ পড়ে আছে। বিছানার চাদরে রক্তের দাগ শুকিয়ে গিয়েছে আর তার পাশেই বৃদ্ধার শোয়ার জায়গা! আনন্দ পুরকায়েত নামে স্থানীয় এক বাসিন্দার কথায়, ‘‘রবিবার সন্ধ্যা থেকেই দুর্গন্ধ পাচ্ছিলাম। কিন্তু তার উৎস পাচ্ছিলাম না। আজ যা দেখলাম, তাতে চমকে উঠেছি।’’

২০১৫ সালের জুনে শেক্সপিয়র সরণি থানার রবিনসন স্ট্রিটের একটি ফ্ল্যাটের শৌচাগারের বাথটব থেকে উদ্ধার হয়েছিল এক বৃদ্ধের দেহ। পরে উদ্ধার হয় এক মহিলা এবং দু’টি পোষ্যের কঙ্কাল। মৃতার ভাই পার্থ দে দিদি এবং বাবার কঙ্কাল আগলে বসেছিলেন। তাঁর ধারণা ছিল, আবার বেঁচে উঠবেন তাঁরা। তা নিয়ে তোলপাড় পড়ে গিয়েছিল। তার পরও বেশ কয়েকটি একই রকমের ঘটনা ঘটেছে রাজ্যে। এ বার রানাঘাটে এমন ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Death Mother and son Nadia
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE