উদ্ধার: শিকারপুরে।
সামান্য ক’টা টাকা ফেললেই হল।
ব্যস, গাঁ-গঞ্জের হা-হদ্দ বেকার ছিলেপিলেগুলো অমনি তৈরি। ভোরের দিকে, নয়তো রাতের অন্ধকারে পাঁচ সেলের একটা টর্চ নিয়ে তরতর করে উঠে পড়ে গাছে। আর তার পর কোটরে হাত ঢুকিয়ে বের করে আনে সদ্য ফোটা টিয়ার ছানা। বছরের এই সময়টা শিকারপুর কিংবা নাটনায় এটাই দস্তুর। টিয়ার নিরাপদ রাজ্যপাটে অবাধ আনাগোনা চোরা কারবারিদের।
এ দিনও তাই হয়েছিল। প্রস্তাবটা পাড়তেই দুই কিশোর বলে, ‘তা দাদা, জোড়া চার হাজার’।
—‘‘একটু বেশি হয়ে যাচ্ছে না। কিছুটা কমাও। তা আমি তিনটে নেব।’’ অনুরোধ করেন ক্রেতা।
খানিক দরাদরির পর একরোখা ছেলেগুলো জানিয়ে দেয়, হাজারের এক পয়সা কম হবে না।
খদ্দের রাজি হতেই অপেক্ষা করতে বলে পা চালায় ছেলেগুলো। কিছু পরেই হাজির তিনটে টিয়ার ছানা। এ দিকেও পকেট থেকে বেরিয়ে আসে কড়কড়ে নোট। একটা দু’হাজার, দু’টো পাঁচশো। হাত বদল হতেই চেপে ধরে ক্রেতা।
বমাল গ্রেফতার।
আসলে শিকারপুর এলাকা থেকে এ ভাবে টিয়ার ছানা চুরির অভিযোগ আসছিল বারবার। সম্প্রতি খবরের কাগজেও লেখালিখি হয়। এর পরেই নড়ে বসে বন দফতর।
টিয়া চুরির অভিযোগে ধৃত বছর ষোলোর ওই কিশোর মুরুটিয়া থানার কেচুয়াডাঙার বাসিন্দা। তার সহযোগী আর একটি ছেলে রাকেশ পাল পলাতক। রবিবার ধৃত ছেলেটিকে করিমপুর থানায় পুলিশ হেফাজতে রাখেন বন দফতরের মহকুমা আধিকারিক অনুকুল রায়। সোমবার আদালতে তোলা হবে। অনুকূলবাবু জানান, দীর্ঘদিন ধরেই অভিযোগ আসছিল। প্ল্যান করেই এ দিন হানা দেওয়া হয়। তিনি বলেন, ‘‘গাছের কোটর থেকে খুব ছোট কিংবা চোখ না ফোটা টিয়ার ছানা চুরি করে সেই বাচ্চাগুলোকে চড়া দামে বিক্রি করছিল এলাকার কিছু অসৎ মানুষ। গোপনে খবর পেয়ে রবিবার ক্রেতা সেজে যাই। গাছ থেকে সদ্য পেড়ে আনা টিয়াপাখির তিনটি বাচ্চা হাতে দিতেই ছেলেটাকে ধরে ফেলি।’’
শিকারপুর গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান প্রসেনজিৎ বিশ্বাস বলেন, “মাস খানেক ধরেই সতর্ক করা হচ্ছিল। ব্যাপারটা যে কথার কথা নয়, এ বার অন্তত লোকজন বুঝবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy