প্রতীকী ছবি।
বুধবার ট্রেনে চড়ব বলে মঙ্গলবার অফিস ছুটি নিয়েছিলাম!
আসলে লকডাউনের পর অফিস শুরু হওয়া ইস্তক নবদ্বীপ থেকে বাসে কলকাতা যাতায়াত করছিলাম। কিন্ত যে মুহূর্তে শুনলাম যে বুধবার থেকে ট্রেন চলবে, সঙ্গে সঙ্গে সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেললাম, প্রথম দিনেই ট্রেনে চড়ব।
অবশেষে লোকাল ট্রেন চলল। ছোটবেলার মতো ট্রেনে চড়ার আগে অদ্ভুত উত্তেজনা বোধ করছিলাম। কত চেনামুখ। কেউ কলকাতায় ছোট-বড় বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মচারী, কেউ দোকানে কাজ করেন। নিম্নবিত্ত মানুষের অনেকে শুধু যাতায়াত করতে পারেননি বলে কাজ ছাড়তে বাধ্য হয়েছিলেন। ছ’সাত হাজার টাকা মাস মাইনেয় যাতায়াতের জন্য চার হাজার টাকা খরচ করা যায়? কিন্তু প্রথম দিনের ট্রেনে অনেককেই খুঁজে পাইনি।
নবদ্বীপ ছেড়ে ট্রেন কলকাতার যত কাছাকাছি গিয়েছে, মনে হয়েছে এ বার লোক উঠবে। সমুদ্রগড়, কালনা, গুপ্তিপাড়া, সোমড়া, জিরাট, ত্রিবেণী, ব্যান্ডেল… ওঠেননি মুখার্জিদা, রায়দা, সাহাদা বা মজুমদার বাবুরা। জানলা দিয়ে নিঃঝুম স্টেশন দেখতে-দেখতে পেরিয়েছি লিলুয়া, কারশেড… শেষে হাওড়া। কিন্তু সবই যেন প্রাণহীন, আট মাসের জড়তা যায়নি বুঝি।
আসতে যেতে যাঁদের দেখতাম, কোথায় তাঁরা? এত দিন রোজগারহীন থেকে কেমন আছেন? আদৌ সবাই আছেন তো? যাঁরা রয়েছেন ফিরতে পারবেন তো রোজগারের অক্লান্ত পরিশ্রমের পর একমুখ হাসি নিয়ে?
লেখক দমকল বিভাগের কর্মী
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy