ভোটবাদ্যি। ভাগের দেওয়াল। ডোমকলে। নিজস্ব চিত্র
জৈষ্ঠ্যের গোড়ায় ভোট, এখনও প্রায় মাস খানেকের দূরত্ব।
তবে, নির্বাচনের প্রস্তুতি পর্বেই, প্রখম বৈশাখে ডোমকল তার চেনা চেহারায় ফিরতে চলেছে।
মঙ্গলবার, বাম-কংগ্রেসের অলিখিত জোটের মিছিলে হামলা চালিয়ে তারই ইঙ্গিত দিল ডোমকল। অভিযোগের আঙুল, তৃণমূলের দিকে।
নির্বাচনের সঙ্গে ডোমকলের হনন-রক্তস্রোতের সম্পর্ক নতুন নয়। গত বিধানসভা নির্বাচনেও রাজ্যে এক মাত্র খুনের ঘটনার সাক্ষী ছিল মুর্শিদাবাদের এই প্রান্তিক এলাকা। মঙ্গলবার, মনোনয়নের প্রথম প্রহরেই হামলার ঘটনা, স্থানীয় বাসিন্দাদের সেই পুরনো স্মৃতিই ফিরিয়ে দিয়েছে। ডোমকলের ফারুক শেখ বলছেন, ‘‘সব বদলাচ্ছে, কিন্তু ডোমকলের হিংস্র স্বভাবের বদল আর হল না!’’
মঙ্গলবারের ঘটনা যে জেলা পুলিশের ঘুমও কেড়েছে, কথাবার্তায় মালুম হচ্ছে তা-ও। এক পুলিশ কর্তা বলছেন, ‘‘ডোমকলে ভোট মানেই বুক কেঁপে ওটা। পুরভোট নিয়ে ইতি মধ্যেই গভীর রাতে আমাদের কাছে চাপা গলার অনেক ফোন আসতে শুরু করেছে। কোথাও বলছে, নদীর ওপারে জড় হয়েছে লোক, আবার কোথাও মাঠে বোমা বাধা চলছে বলে আসছে খবর।’’ মঙ্গলবার মনোনয়পত্র জমা দিতে আসার সময় ডোমকলের আমিনাবাদ গ্রামে দু’পক্ষের মধ্যে বড় মাপের গণ্ডগোল বাধে। দু’পক্ষ মিলিয়ে জখমের সংখ্যা অন্তত দশ। তৃণমূলের অবশ্য দাবি, কংগ্রেস-সিপিএম জোট মিছিল করে মনোনয়ন জমা করতে আসার পথে গ্রামের মাচায় বসে থাকা তৃণমূল কর্মীদের মারধর করেছে। আর, তার জেরেই গণ্ডগোল বাধে। অন্য দিকে, কংগ্রেসের দাবি, মনোনয়নপত্র জমা করতে আসার সময় তাদের সমর্থকদের বাধা দিয়ে বেধড়ক পেটায় তৃণমূল সমর্থকেরা। এই তোপ পাল্টা তোপের আবহেই বলে দিচ্ছে, নির্বাচনে ফিরছে ডোমকল।
ইতিহাসও অন্য কথা বলছে না। গত বিধানসভা নিবার্চনে ভোটের দিন সকালে রাজ্যের এক মাত্র খুনটি হয়েছিল ডোমকলে। হরিডোবা গ্রামে বুথের সামনেই বোমায় লুটিয়ে পড়েছিলেন সিপিএম কর্মী তহিদুল ইসলাম। তার আগের পাঁচটি নির্বাচনে ডোমকলে হানাহানির বলি কখনও এগারো, কখনও তেরো কখনওবা সতেরো জন।
আশঙ্কার এই মেঘের নীচে ডোমকলের এসডিপিও মাকসুদ হাসান অবশ্য ভরসা জোগাচ্ছেন, ‘‘আমিনাবাদের গণ্ডগোলটা নিতান্তই ছোট। তবে, জেনে রাখুন পুলিশের তরফে কোনও খামতি থাকবে না। আমরা তো আছি।’’
ডোমকলের বিধায়ক সিপিএমের আনিসুর রহমান অবশ্য বলছেন, ‘‘ও সব মুখের কথা, আমাদের নীচুতলার কর্মীদের তো সারাক্ষণ হুমকি দিচ্ছে তৃণমূল, কে দেখছে!’’ জোট সঙ্গী কংগ্রেস নেত্রী শাওনী সিংহ রায়ের কথায়, ‘‘শাসক দলের রাজ্যের নেতা থেকে মন্ত্রীরা যে ভাবে ডোমকলে এসে প্রকাশ্য সভা থেকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ছেন তাতে আমাদের পুরানো দিনের কথাই মনে পড়ছে। মনে হচ্ছে আবারও একটা রক্তাক্ত নিবার্চনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছি আমরা।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy