Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

সবুজের দাবি করিমপুরে

পাড়ার ছোট্ট পার্ক। ঘাসও তেমন নেই। আছে ধুলো। কিন্তু ঘাসের অভাব পরোয়া না করে যারা খেলবে সেই সবুজ বাচ্চাগুলো কই! অভিভাবকেরা সমস্বরে বলছেন, ‘‘দোলনা-সহ খেলার অন্য সামগ্রী তো কবে থেকেই বেহাল হয়ে পড়ে রয়েছে।

বেহাল: অযত্নে পার্ক।নিজস্ব চিত্র

বেহাল: অযত্নে পার্ক।নিজস্ব চিত্র

কল্লোল প্রামাণিক
করিমপুর শেষ আপডেট: ২৮ মার্চ ২০১৭ ০১:২৫
Share: Save:

পাড়ার ছোট্ট পার্ক। ঘাসও তেমন নেই। আছে ধুলো। কিন্তু ঘাসের অভাব পরোয়া না করে যারা খেলবে সেই সবুজ বাচ্চাগুলো কই!

অভিভাবকেরা সমস্বরে বলছেন, ‘‘দোলনা-সহ খেলার অন্য সামগ্রী তো কবে থেকেই বেহাল হয়ে পড়ে রয়েছে। বাচ্চাদের জায়গাটুকুও তো বড়রা দখল করে বসে থাকে। ওই পার্কে যাওয়ার থেকে বাড়িতে খেলা করা ঢের ভাল।’’

আর স্কুল থেকে বাড়ি যাওয়ার পথে আদ্রিক দত্ত, সৌমিলী বিশ্বাস, সমৃদ্ধ স্বর্ণকার পার্কের বাইরে কিছুক্ষণ দাঁড়ায়। নিজেদের মধ্যেই বলাবলি করে, ‘‘আগে রোজ বিকেলে আমরা এখানে কত হইহই করে খেলতাম!’’

অথচ বছর দুয়েক আগেও করিমপুর আনন্দপল্লির মধু শৈবলিনী শিশু উদ্যান উপচে পড়ত শিশুদের ভিড়ে। বিকেল হলেই কচিকাঁচারা মা-বাবার হাত ধরে পার্কে ভিড় করত। তারপর যত্ন ও পরিচর্যার অভাবে কমতে শুরু করল সবুজ। খেলার সামগ্রীগুলোও বিগড়ে গেল। আনন্দপল্লির অপূর্ব দত্ত বলছেন, ‘‘প্রশাসন এই পার্কের ব্যাপারে একটু উদ্যোগী হলে এলাকার বাচ্চারা একটু অক্সিজেন পেত।’’

২০০৯ সালে আনন্দপল্লির বাসিন্দা হীরেন্দু মণ্ডলের পরিবারের লোকজন ওই পার্কের জন্য জমি দান করেন। করিমপুর ২ গ্রাম পঞ্চায়েতের উদ্যোগে ও বিধায়ক তহবিলের টাকায় জলঙ্গি নদীর ধারে তৈরি হয় পার্ক। এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, সন্ধ্যার পরেই পার্কে বসে নেশার আসর। ভিড় বাড়ে অপরিচিত মুখের। গভীর রাত পর্যন্ত সেই পার্ক থাকে তাদেরই দখলে। প্রশাসনের নজরদারি থাকলে কিছুতেই এমনটা ঘটত না। করিমপুরে আরও দুটি পার্ক রয়েছে থানা ও হাসপাতাল চত্বরে। সেগুলোর অবস্থা অবশ্য মন্দের ভাল।

স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, করিমপুরে শিশুদের জন্য আরও বেশ কয়েকটি পার্কের প্রয়োজন। সেই সঙ্গে পার্কগুলো সংস্কারের পাশাপাশি সেখানে নিয়মিত নজরদারিও চালানো দরকার। করিমপুর ২ গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান সিপিএমের জ্যোৎস্না শর্মা জানান, আনন্দপল্লির ওই পার্কের খেলাধুলার সামগ্রী মেরামতি ও পার্ক সংস্কারের জন্য এক লক্ষ পঁচিশ হাজার টাকা অনুমোদন করা হয়েছে। পার্কে নজর রাখার জন্য স্থানীয় লোকজনকে নিয়ে একটি কমিটিও তৈরি করা হবে।

করিমপুর ১ গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান কংগ্রেসের তারক সরখেল বলেন, “জায়গা পেলে আরও পার্ক তৈরি করা হবে। পুলিশকেও অনুরোধ করব, পার্কগুলোতে একটু নজরদারি চালাতে। যাতে সেখানে অবাধে শিশুরা খেলতে পারে।’’

খুশিতে চকচক করে খুদেদের চোখ। তারা বলে, ‘‘সত্যি সত্যিই আমরা আবার এখানে খেলতে পারব!’’ পড়ন্ত বিকেলে কাত হয়ে ঝুলে থাকা নিঃসঙ্গ দোলনাটা কি একটু নড়ে উঠল?

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Park Renovate
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE