শলা: তৃণমূলের কর্মিসভায় পার্থ চট্টোপাধ্যায়। শুক্রবার কৃষ্ণনগরে রবীন্দ্র ভবনে। ছবি: প্রণব দেবনাথ
ব্রিগেড সমাবেশে সপরিবার যোগ দেওয়ার জন্য কর্মীদের উজ্জীবিত করতে গিয়ে এক বামপন্থী শিক্ষকের উদাহরণ টানলেন তৃণমূলের মহাসচিব তথা দলের নদিয়া জেলা পর্যবেক্ষক পার্থ চট্টোপাধ্যায়।
আগামী ১৯ জানুয়ারি ব্রিগেড সমাবেশের ডাক দিয়েছে তৃণমূল। তার প্রস্তুতি সভা করতে শুক্রবার কৃষ্ণনগর রবীন্দ্রভবনে এসে পার্থ জানান, ১৯৭৭ সালে যখন বামেরা ক্ষমতায় এল, তখন তিনি কলেজের ছাত্র। সেই জয়ের পরে তারা ব্রিগেড সমাবেশের ডাক দেয়। পার্থর কথায়, ‘‘সেই সমাবেশে প্রত্যেকে পরিবার নিয়ে গিয়েছিল। এমন এক জনকে জানি যিনি আমার শিক্ষক ছিলেন কলেজে। তাঁর সদ্যোজাত শিশুকে নিয়ে তাঁর স্ত্রী ও তিনি যাচ্ছিলেন। আমি দেখছিলাম দূর থেকে।”
পার্থর ব্যাখ্যা, ‘‘এটা একটা টান। পরিবর্তনের টানে সকলে সামিল হয়েছিল। আজ ভারত জুড়ে যে দাঙ্গা লাগানোর চেষ্টা হচ্ছে, অর্থনীতিকে ধ্বংস করার চেষ্টা হচ্ছে, তার বিরুদ্ধে আমাদের সকলকেই রাস্তায় নামতে হবে। এ বার পরিবারকে নিয়ে চলো — এই প্রতিজ্ঞা করতে হবে।”
আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে জেলার দু’টি আসনেই জয়ের জন্য ঝাঁপাবে বিজেপি। বিশেষ করে কৃষ্ণনগর নিয়ে তাদের যথেষ্ট তৎপরতা রয়েছে। রথযাত্রা নিয়ে টালবাহানা চললেও সেই ইস্যু সামনে রেখে সমর্থকদের উজ্জীবিত করা এবং যথাসম্ভব বেশি মানুষকে নিজেদের দিকে চানার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে তারা। তৃণমূলকেও অতএব বাড়তি সতর্ক হতে হচ্ছে। নেতাকর্মীদের প্রতি পার্থর পরামর্শ, “বিজেপির নামই করবেন না। নাম করে ওদের তুলে ধরা হচ্ছে।”
দলের অনেকেই যে জনপ্রিয়তা হারিয়ে ফেলেছেন, তা মনে করিয়ে দিতেও ভোলেননি জেলা পর্যবেক্ষক। বামপন্থীদের ঢঙেই তাঁর পরামর্শ, এই সব নেতাদের ‘আত্মসমীক্ষা’ করা প্রয়োজন। পার্থ বলেন, “কোথাও কোথাও আমরা আত্মতুষ্টিতে ভুগি। মনে হয়, কেউ আমাদের কিছু করতে পারবে না। তাদের বলব, আপনারা জনগণকে বোঝেননি।” সেই সঙ্গেই তাঁর আক্ষেপ, “ক্ষমতায় আসার পরে আমরা দেওয়াল লিখতে ভুলে গিয়েছি। এক সময়ে তো আমরা মার খেয়েই দেওয়াল লিখেছি।’’ ব্রিগেড সমাবেশের জন্য প্রতিটি বুথে অন্তত একটা করে দেওয়াল লিখতে হবে বলে নির্দেশ দেন তিনি।
সেই সঙ্গে গ্রামের মানুষের সঙ্গে আরও বেশি করে মেশা এবং ত্রিস্তর পঞ্চায়েতের প্রতিনিধিদের সরকারি প্রকল্পগুলির কথা ভাল করে জেনে মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়ার কথাও বলেন পার্থ। অন্যথায় দলও যে তাঁদের কথা কানে তুলবে না, তা তিনি স্পষ্ট করে দিয়েছেন। পার্থর কথায়, “ভোটের সময়ে শুধু ‘আমার কাকাকে দাঁড় করাও, মামাকে দাঁড় করাও, বউকে দাঁড় করাও’ — তা আর হবে না।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy