দমকলের অনুমতি না নিয়ে পুজো-প্যান্ডেল তৈরি করলে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে বিজ্ঞপ্তি জারি করল দমকল বিভাগ। পুজো কমিটিগুলিকে সতর্ক করে ওই বিজ্ঞপ্তি ইতিমধ্যেই তেহট্ট মহকুমা এলাকার বিভিন্ন গ্রাম পঞ্চায়েত অফিস, ব্লক অফিস ও মহকুমা অফিসে সাঁটানো হয়েছে।
কয়েক দিন পরেই দুর্গাপুজো। অন্য জায়গার মতো পুজোর প্রস্তুতিতে পিছিয়ে নেই তেহট্টও। মহকুমার বিভিন্ন জায়গায় শুরু হয়ে গিয়েছে পুজো-প্যান্ডেল তৈরির কাজ। সেই প্যান্ডেল তৈরি করার সময়ে কী কী ব্যবস্থা নিতে হবে তার তালিকা তৈরি করেছে দমকল। করিমপুর দমকলের অফিসার ইনচার্জ সুখেন সরকার জানান, তেহট্ট ও ডোমকল মহকুমার বিস্তীর্ণ এলাকায় আগুন নেভানোর কাজ করতে হয় করিমপুর দমকল কেন্দ্রকে। পুজোর সময় দমকলের নির্দেশ না মানায় বড়সড় দুর্ঘটনার সম্ভাবনা থাকে। তিনি বলেন, ‘‘সামান্য টাকার বিনিময়ে দমকলের অনুমতি নিলে তা এড়ানো যায়।’’
একাধিকবার জানানো সত্ত্বেও তেহট্ট মহকুমা এলাকার অধিকাংশ পুজো কমিটি অনুমতি নেয় না বলে দমকলের বরাবরের অভিযোগ। সেই প্রবণতা রুখতে এ বার আগেভাগেই পদক্ষেপ করতে চাইছেন দমকল কর্তারা। অনুমতি ছাড়া পুজো হলে কমিটিগুলির বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তাঁরা।
দমকল বিভাগ সূত্রের খবর, তেহট্ট মহকুমার পাঁচটি থানা এলাকায় সর্বজনীন এবং পারিবারিক মিলিয়ে চারশোর বেশি পুজো হয়। তার মধ্যে কতগুলি পুজো গতবার অনুমতি নিয়েছে? সুখেনবাবু জানান, সংখ্যাটা মোটে ১৭২! তার মধ্যে করিমপুর থানা এলাকায় ৪৪টি, তেহট্ট থানায় ৯৩টি, মুরুটিয়ায় ১৮টি, হোগলবেড়িয়ায় ১৩টি ও থানারপাড়া এলাকার ৪টি পুজোর অনুমতি নেয়। এ ছাড়া ডোমকল মহকুমার জলঙ্গি থানার কয়েক’টি পুজো কমিটি দমকলের অনুমোদন নিয়েছিল। অর্থাৎ বাকি পুজোগুলো দুর্ঘটনার আশঙ্কা নিয়ে পুজো পার করেছে। তা জেনে দর্শনার্থীদের অনেকেই বলছেন, ‘‘অনেক মণ্ডপেই ঢোকা-বেরনোর জায়গা সংকীর্ণ থাকে। কোনও ভাবে আগুন লেগে গেলে বা অন্য বিপত্তি হলে তো প্রাণ সংশয় হতে পারত!’’
দুর্ঘটনা এড়াতে এ বার তাই কোমর বেঁধে নামছেন দমকল কর্তারা। তাঁরা জানালেন, দমকলের অনুমতি নিতে তেমন কোনও ঝক্কি বা খরচের ব্যাপার নেই। অনুমোদনের জন্য প্রয়োজনীয় ফর্ম করিমপুর দমকল অফিসে বিনামূল্যে দেওয়া হয়। তার সঙ্গে প্রয়োজন স্থানীয় থানার নো-অবজেকসন সার্টিফিকেট, প্যান্ডেলের নকসা, ডেকরেটরের সার্টিফিকেট, রেজিস্ট্র্রার কোনও ইলেকট্রিসিয়ানের সার্টিফিকেট। এ সবের সঙ্গে ন্যূনতম ২৫০ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ১০০০ টাকার ব্যাঙ্ক চালান ট্রেজারিতে জমা দিতে হয়।
গত বছর অনুমতি নিয়েছিল এমন এক পুজো কমিটির কর্তা জানালেন, আবেদনের ঝক্কি বা টাকা নয়, পুজোর সময় আসা দর্শনার্থীদের নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে এটুকু করা আমাদের কর্তব্য। সকলের সেই হুঁশ ফিরুক, চান দমকল কর্তারা। না হলে আইনি পথে যাওয়ার কথাও সাফ জানিয়েছেন তাঁরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy