ফাইল চিত্র
মাঠের কাজে ডুবে থাকা ছাপোষা কৃষকের কাছ থেকে বিড়ি চেয়ে নেওয়া, কখনও বা সটান কোনও গ্রামীণ বাড়ির রান্না ঘরে ঢুকে কলাই রুটি চেয়ে খাওয়া— ‘আমি তোমাদেরই লোক’ বোঝাতে ডোমকলের সিপিএম বিধায়ক আনিসুর রহমানের এটাই ছিল ইউএসপি। যা দেখে তৃণমূল নেতারা কটাক্ষ করতেন, ‘আরে ভাই এ সবই ভোটের নাটক!’ ভোট কুশলী পিকে’র গুঁতোয় এখন সে নাটকেই ভরসা রাখছে রাজ্যের শাসক দল।
বাম জমানায় দেখা সেই ‘নাটকের’ অুকরণেই, কখনও গলায় গামছা নিয়ে বুকে জড়িয়ে ধরতে হচ্ছে ঘাম সপসপে কৃষককে, কখনও বা সেই গামছা মাথায় বেঁধে দামি গাড়ি ছেড়ে ট্রাক্টরের চালকের আসনে বসতে হচ্ছে নেতাদের। কেউ আবার বাহারি কোট পরেই ধানের আঁটি নিয়ে মাড়াই করতে নেমে পড়েছেন গৃহস্থের উঠোনে। কাউকে দেখা গিয়েছে, বেলচা হাতে রাস্তা সংস্কারের কাজে হাত মেলাতে। যা দেখে বিরোধীরা বলছেন, ভোট বড় বালাই হে!
গায়ের নীল পাঞ্জাবী পরনের সাদা পাজামা মাথায় বাধা গামছা, হাতে নিড়ানি নিয়ে কৃষকের জমিতে বসে রবিবার এ ভাবেই ঘণ্টাখানেক কাটল রানিনগরের তৃণমূলের কো-অর্ডিনেটর সৌমিক হোসেনের। কখনও জড়িয়ে ধরলেন কৃষককে কখনও আবার চাষের কাজে যাওয়া ট্রাক্টর থেকে চালককে নামিয়ে উঠে বসলেন। আবার হরিহর পাড়ার প্রাক্তন ব্লক তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি জয়নুল আবেদিনকে চাষিদের সঙ্গে ধান মাড়াইয়ের নেমে পড়তে দেখা গিয়েছে দিন কয়েক আগে। রাস্তা সংস্কার করেছেন শ্রমিকদের সঙ্গে।
সৌমিকের দাবি, ‘‘বঙ্গধ্বনী যাত্রার অঙ্গ হিসেবে আমরা এই এ গুলো করছি। তবে, আমাদের মূল কাজ কেন্দ্রীয় সরকারের কৃষি আইনের বিরোধীতা করা। তাদের কথা মন দিয়ে শোনা।’’ যদিও বিরোধীরা দাবি, আসলে ভোটের আগে পিকে’র নির্দেশেই এখন এ ভাবে জন সংযোগ বাড়াতে চাইছে তৃণমূল নেতারা।
সিপিএমের ডোমকল এরিয়া কমিটির সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান বলেছেন, ‘‘মনে রাখবেন একসময় এ নিয়ে তৃণমূলকে হাসাহাসি করতে কম দেখা যায়নি। আমরা বরাবর মানুষের পাশে থেকেছি। তাই আমাদের ও সব নাটক করতে হয় না। কিন্তু এত দিন পরে দামী চার চাকা থেকে নেমে তৃণমূল নেতাদের যা করতে হচ্ছে তা শীত মরসুমে একেবারে চিৎপুরের যাত্রা পালা!’’ আর আনিসুর রহমান বলছেন, ‘‘আমরা লোক দেখানোর জন্য কিছু করিনি, যা করেছি এলাকার মানুষ হিসেবে, মানুষের পাশে থাকতে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy