Advertisement
E-Paper

মাথায় বিস্কুটের টিন, কোমরে নাইন এমএম, এই বাদশাকে চিনতে পুলিশও নাকাল

গায়ের রং শ্যামবর্ন, সাদামাটা চেহারা দোহারা চেহারা, পরনে নীল গেঞ্জি আর ছাপা লুঙ্গি। আর নিতান্তই ছাপোষা চেহারার সেই বাদশা শেখকে ধরতে মাথার ঘাম  পায়ে কম ফেলতে হয়নি পুলিশকে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৫ অগস্ট ২০১৮ ০২:৫৭
বাদশা শেখ। —নিজস্ব চিত্র।

বাদশা শেখ। —নিজস্ব চিত্র।

জীবন বদলে ফেলেছিল সে, তবে যাপন নয়।

আর সে জন্যই— মাদক চক্রের মাথা হয়ে ক্রোড়পতি বনে গেলেও, টিনের ঘর, ম্যাড়মেড়ে মোটকবাইক, গেঞ্জি-লুঙ্গির দিন যাপন দেখে বোঝার উপায় ছিল না লোকটার কোমরে নাইন এমএম, কোঁচড়ে টাকার বান্ডিল। উচ্চতা মেরেকেটে ফুট পাঁচেক। গায়ের রং শ্যামবর্ণ, সাদামাটা দোহারা চেহারা, পরনে নীল গেঞ্জি আর ছাপা লুঙ্গি। আর নিতান্তই ছাপোষা চেহারার সেই বাদশা শেখকে ধরতে মাথার ঘাম পায়ে কম ফেলতে হয়নি পুলিশকে।

চার দিন আগে সীমান্তের এই ত্রাসকে শেষ পর্যন্ত ধরার পরে জেরার মুখে সে যা জানিয়েছে, জেলা পুলিশের কর্তারা বলছেন, ‘‘সে এক রোমাঞ্চকর কাহিনির মতো!’’

পুলিশের যাতে নজরই না পড়ে তার দিকে, সাগরেদদের তাই সে পাখি পড়া করে বোঝাত— ‘পুলিশের চোখে ধুলো দিতে সব সময় পুলিশের কাছাকাছি থাকাই ভাল, সন্দেহ কম হয় তাতে!’ মাদকের কারবারে বোলবোলা হলেও, পড়শির যাতে চোখ না টাটায় সে জন্য আর পাঁচটা সাধারণ মানুষের মতোই তারও ঠিকানা ছিল নিতান্তই টিনের বাড়ি। ইচ্ছে করেই তা পাকা করেনি সে।

পাঁজরা বেরনো ইটের দেওয়াল যেখানে প্লাস্টারও নেই। জানলায় নেই শিক। বাদশা হয়েও সে থাকত নিতান্তই আম আদমির মতো।

অথচ জেরায় পুলিশ জানতে পেরেছে, সাগরদিঘিতে রয়েছে তার নিজের ইটভাটা, লালগোলার বালুটুঙিতে একটি বি.এড কলেজ। লালগোলায় রয়েছে পাঁচটি পুকুর এবং বহু বিঘা চাষজমি। তবে তা সবই পরিবারে অন্যদের নামে।

মাদকের কারবারের জন্য তাকে বেশ কিছু দিন ধরেই খুঁজছিল পুলিশ। কিন্তু এমন সাধারণ চেহারার ছাপোষা জীবনযাপনে অভ্যস্ত মানুষকে প্রথম দিকে সন্দেহের তালিকাতেই আনেনি পুলিশ। তবে, পুলিশ যে জাল গুটিয়ে আনছে তা টের পেয়েছিল সে। তাই পালানোর একটা ছক কষে ফেলেছিল বাদশা। ১ অগস্ট লালগোলা মুক্ত সংশোধনাগার সংলগ্ন মাঠ থেকে রাত ১২টা নাগাদ তিনশো কুড়ি গ্রাম হেরোইন ও দু’শো গ্রাম নেশা বাড়ানোর জন্য পাওয়ার-পাউডার-সহ তাকে গ্রেফতার করে লালগোলা থানার পুলিশ। তারপর তাকে বহরমপুর নারকোটিক্স আদালতে হাজির করানো হলে, বিচারক তিন দিন পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেন। পুলিশের দাবি, এই তিন দিনে তাকে জেরা করে জানতে পেরেছে তার ছদ্ম-রূপ। পুলিশকে সে জানিয়েছে, পুলিশের চোখে ধুলো দিতেই সে টিনের ট্রাঙ্ক মাথায় করে কেক-বিস্কুট ফেরি করত নবগ্রাম ও কান্দির গ্রামগুলিতে। মাদকের পাচারও হত সেই ভাবেই।

Drug racket Lalgola
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy