বাজেয়াপ্ত: উদ্ধার হওয়া আগ্নেয়াস্ত্র ও যন্ত্রপাতি। নিজস্ব চিত্র
একেই বলে, কান টানলে মাথা আসে।
বৃহস্পতিবার পুলিশের জালে ধরা পড়েছিল ইসলামপুরের কেশবপুর গ্রামের মোক্তার শেখ। তাকে জেরা করে শুক্রবার সকালে রানিনগরের কালীতলা থেকে দু’টি আগ্নেয়াস্ত্র-সহ লালবাগের যুবক মুরসালিম শেখকে পুলিশ গ্রেফতার করে। মুরসালিমের সূত্র ধরে জলঙ্গিতে হদিস মেলে অস্ত্র তৈরির কারখানার। সন্ধ্যায় জলঙ্গির ভাদুরিয়াপাড়া বাজারে মুরসালিমকে নিয়ে সাদা পোশাকে পুলিশ হানা দেয় সেলিম বিশ্বাস ও গোলাম কিবরিয়ার সাইকেল সারায়ের দোকানে। দু’জনই গ্রেফতার হয়েছে। তাদের হাতে তৈরি অস্ত্রের হদিস মিলেছে ভাদুরিয়াপাড়া এলাকায় সেলিমের বাড়ি থেকে।
পুলিশ জেনেছে, সেলিম এবং গোলাম সাইকেল সারাইয়ের আড়ালে আগ্নেয়াস্ত্র তৈরির কারবার চালাত। তাদের কাছ থেকে তিনটি পুরোপুরি ও দু’টি অর্ধেক তৈরি পাইপগান, একটি পিস্তল এবং বেশ কিছু অস্ত্র তৈরির সরঞ্জাম মিলেছে। সেলিম বছর দুয়েক আগে একই অপরাধে গ্রেফতার হয়েছিল।
সাইকেল সাইয়ের দোকান বলতে ফুটপাথে দু’টো গুমটি ঘর। একটিতে ইটের দেওয়ালে টিনের ছাউনি, অন্যটি কাঠের। চালায় ঝুলছে গোটা কয়েক নষ্ট টায়ার। শনিবাক দু’টো দোকানই সকাল থেকে বন্ধ। স্থানীয় মানুষের দাবি, সেলিম এর আগে এক বার গ্রেফতার হলেও গোলাম এই প্রথম পুলিশের জালে পড়ল। পুলিশ বলছে, এর আগেও অনেক অস্ত্রের কারবারি ধরা পড়েছে, কিন্তু এত দ্রুত সাফল্য আগে মেলেনি।
পুলিশের দাবি, সেলিমের কারবার দীর্ঘ দিনের। বৃহস্পতিবার বিকেলে মোক্তার ধরা পড়ার পরে তাকে জেরা করেই লালবাগের উত্তর হাসানপুর থেকে শুক্রবার ধরা হয় মুরসালিম শেখকে। ওই সন্ধ্যাতেই মুরসালিমকে নিয়ে সাদা পোশাকে রানিনগরের পুলিশ যায় ভাদুরিয়াপাড়া বাজারে। সেখান থেকেই গ্রেফতার হয় সেলিম আর গোলাম কিবরিয়া।
এত দিন বাইরে থেকে আমদানি হওয়া অস্ত্রের কারবার সামাল দিতেই নাজেহাল হত পুলিশ। এ বার ঘরেই কারখানা মিলেছে। ডোমকলে অবশ্য এর আগেও গড়াইমারিতে রেডিও সারাইয়ের দোকানের আড়ালে অস্ত্র কারবারের হদিস মিলেছিল। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, নজর রাখলেই পুলিশ এমন কারবারিদের ধরতে পারবে। অনেক সাইকেল সারাইয়ের দোকান বা লেদ কারখানায় দিনরাত খুটখাট শব্দ লেগে থাকে। তাদের আয়ের সঙ্গে ব্যয়ের সামঞ্জস্য নেই। অনেকেই ঝাঁ চকচকে দোতলা বাড়ি হাঁকিয়েছে।
এসডিপিও (ডোমকল) মাকসুদ হাসান বলেন, ‘‘আড়ালে আরও এমন কারখানা আছে কি না, তা আমাদের দেখতে হবে। সেলিম ফের ধরা পড়ায় মনে হচ্ছে, পুরনো নথি ঘেঁটে আবার মাঠে নামতে হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy