— প্রতীকী ছবি।
প্রথম বিবাহবিচ্ছেদের সময় স্বামীর কাছে ছেড়ে আসতে হয়েছিল প্রিয় সন্তানকে। সেই শোকেই হারিয়ে ফেলেন মানসিক ভারসাম্য। দীর্ঘ চিকিৎসায় কিছুটা সুস্থ হয়েছিলেন বটে কিন্তু তার মধ্যেই দ্বিতীয় বার বিয়ে দিয়ে দেওয়া হয় বেলুয়ারা বিবির। তার পর তিন কন্যাসন্তানের জন্ম দিলেও ভুলতে পারেননি প্রথম সন্তান বিচ্ছেদের যন্ত্রণা। মেনে নিতে পারেননি দ্বিতীয় স্বামীর সন্তানদেরও। সন্তানদের প্রতি উদাসীনতা, স্বামী-স্ত্রীর মাদকাসক্তি, আর্থিক অনটন— সব মিলিয়ে চূড়ান্ত মানসিক জটিলতার শিকার হয়েছিলেন বেলুয়ারা। তিন মাসের সদ্যোজাত কন্যাসন্তানকে আছড়ে খুনের অভিযোগ ওঠে সেই বেলুয়ারা ও তাঁর স্বামী রিন্টু শেখের বিরুদ্ধেই। দু’জনকে গ্রেফতার করে নিজেদের হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করতেই চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এল পুলিশের হাতে।
মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজের মনোরোগ বিভাগের বিভাগীয় প্রধান রঞ্জন ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘গল্প, উপন্যাস, উপাখ্যানে বার বার এই ধরনের মানসিক জটিলতার কথা বর্ণিত হয়েছে। কর্ণ-কুন্তী সংবাদে কর্ণকে ছেড়ে আসার যন্ত্রণা কুন্তী সারা জীবন বয়ে বেড়িয়েছেন। এ ক্ষেত্রেও তার ব্যতিক্রম হয়নি। প্রথম সন্তানকে ছেড়ে আসার বেদনা কোনও একটা জায়গায় বাকি সন্তানদের প্রতি বিতৃষ্ণা তৈরি করেছিল। তাই স্বামীর হাতে সন্তান খুন হতে দেখেও তাকে নিরস্ত্র করা তো দূরে থাক বরং প্রচ্ছন্ন মদত দিয়েছিলেন এই মহিলা।’’ ডোমকল এসডিপিও শুভম বাজাজ বলেন, ‘‘অভিযুক্ত মহিলার প্রথমে এক বার বিয়ে হয়েছিল। প্রথম দাম্পত্যে তাঁর একটি সন্তানও রয়েছে। বিচ্ছেদের সময় সেই সন্তানকে ছেড়ে আসার যন্ত্রণা অভিযুক্তের মধ্যে আছে কি না খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’
পুলিশ সূত্রে খবর, ভাতশালার রিন্টু কেরলে কাজ করেন। মাস তিনেক আগে তাঁদের তৃতীয় কন্যাসন্তানের জন্ম হয়। সেই খবর পেয়ে সপ্তাহখানেক আগে গ্রামে ফিরেছিলেন রিন্টু। বাবা দবির শেখের দাবি, ছেলে রিন্টুই তাঁর নাতনিকে আছাড় মেরে খুন করেছেন। খুনে জড়িত পুত্রবধূও। দু’জনের বিরুদ্ধেই থানায় অভিযোগ দায়ের করেছিলেন দাদু। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে পরে দম্পতিকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy