Advertisement
E-Paper

ব্যাগ খুলতেই নাইন এমএম

দুপুর ১২টা। কাঠফাটা রোদে মাঠঘাট পুড়ছে। ঠিক এমন সময়ে মোরগ্রামে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কে শুরু হল পুলিশের নাকাবন্দি।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৭ এপ্রিল ২০১৭ ০১:৩১
উদ্ধার: বাজেয়াপ্ত করা আগ্নেয়াস্ত্র দেখাচ্ছেন পুলিশ সুপার। নিজস্ব চিত্র

উদ্ধার: বাজেয়াপ্ত করা আগ্নেয়াস্ত্র দেখাচ্ছেন পুলিশ সুপার। নিজস্ব চিত্র

দুপুর ১২টা। কাঠফাটা রোদে মাঠঘাট পুড়ছে। ঠিক এমন সময়ে মোরগ্রামে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কে শুরু হল পুলিশের নাকাবন্দি।

খবর পাক্কা। স্টিল কালারের গাড়ি। এক পুলিশকর্মী মাঝেমধ্যেই পকেট থেকে চিরকুট বের করে মিলিয়ে নিচ্ছিলেন গাড়ির নম্বর। তবুও ঝুঁকি নিতে রাজি নয় পুলিশ। সন্দেহ হলেই হাত তুলে থামানো হচ্ছিল একের পর এক গাড়ি। মঙ্গলবার ভরদুপুরে পুলিশের এই তৎপরতা দেখে স্থানীয় লোকজনও কিছুটা অবাক হয়েছিলেন। এন দিকে এক ঘন্টা পার। কিন্তু স্টিল কালারের সেই গাড়ি কোথায়?

অবশেষে অপেক্ষার অবসান। মোরগ্রামের দিক থেকে ছুটে আসতে দেখা গেল সেই গাড়ি। গাড়ি থামানো হল। চিরটুট বের করে মেলানো হল নম্বর। গাড়ি থেকে নামলেন বছর ৪৫ এর এক ব্যক্তি। নিজের পরিচয় দিয়ে সে জানায়, তার নাম সাইদুল শেখ। বাড়ি খড়গ্রামের এড়োয়ালি। ততক্ষণে গাড়ি থেকে নেমে এসেছে চালক সফর আলি ওরফে মিলন। তার বাড়ি খড়গ্রামের পার্বতীপুর।

ইতিমধ্যেই গাড়িতে ঢুকে পুলিশকর্মীরা শুরু করে দিয়েছেন তল্লাশি। পিছনের গেট খুলতেই মিলল একটা ঢাউস ব্যাগ। সেটা খুলতেই এক এক করে বেরলো রাইফেল, কার্বাইন, পাইপগান ও নাইনএমএম পিস্তল মিলিয়ে ১৬টি আগ্নেয়াস্ত্র। সাগরদিঘি থানায় নিয়ে গিয়ে শুরু হল জিজ্ঞাসাবাদ। মুর্শিদাবাদ থানার বাঘিরাপাড়ার আরও দুই আগ্নেয়াস্ত্র কারবারিদের নাম উঠে এল।

কোনও অপেক্ষা নয়। ধৃত সাইদুল ও সফরকে নিয়ে বেড়িয়ে পড়ল পুলিশ। গন্তব্য বাঘিরাপাড়া। বিকেল ৫টা নাগাদ সাগরদিঘির পুলিশ হাজির বাঘিরাপাড়ার তাজিয়া শেখের বাড়িতে। এলাকার লোকজন তাকে অবশ্য একবর নামেই বেশি চেনেন। তার ঘর থেকে মিলল একটি পাইপগান। পাশেই বাড়ি নেকবর শেখের। পুলিশের খবর পেয়ে সে পালানোর চেষ্টা করে। কিন্তু শেষরক্ষা হয়নি।

দু’জনকে পাকড়াও করে গাড়ি ছুটল কান্দির আন্দুলিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের চাঁদনগরে। তখন সন্ধ্যে নেমেছে। সাইদুলই চিনিয়ে দেয় গাফফার শেখের বাড়ি। গাফফারকে গ্রেফতার করে তার ঘর থেকে মিলল একটি দোনলা বন্দুক, ২টি সেভেনএমএম পিস্তল ও ৩টি দিশি পাইপগান। গাফফারকে নিয়ে অভিযান শেষে পুলিশ যখন চাঁদনগর থেকে থানার দিকে রওনা দিল তখন সন্ধ্যে সাড়ে সাতটা। মঙ্গলবারের এই পুলিশি অভিযানে ২৪টি আগ্নেয়াস্ত্র ছাড়াও মিলেছে ৫০ রাউন্ড গুলি। ধৃত ৫ জনকেই বুধবার হাজির করা হয় জঙ্গিপুর আদালতে। বিচারক তাদের ৬দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেন। এর আগে গত দু’মাসে সুতি ও সামশেরগঞ্জ থেকে ৪০টি আগ্নেয়াস্ত্র ও প্রায় ১৫০ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করেছে পুলিশ। পুলিশ সুপার মুকেশ কুমার জানান, ধৃতদের জেরা করে বেশ কয়েক জন আগ্নেয়াস্ত্র কারবারির নাম পাওয়া গিয়েছে। তাদের খোঁজে তল্লাশি চালানো হচ্ছে।

Police Arms
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy