প্রতীকী ছবি।
খুনের পরে ঠাণ্ডা মাথায় বাড়িতে এসে ঘুমিয়ে পড়েছিলেন সিভিক ভলান্টিয়ার মোতাহার আলি। পরে ভোরের দিকে বড়বাবুর ফোন পেয়ে সটান হাজির হয়েছিলেন থানায়। ভাব খানা এমন ছিল যে, সে ঘটনার বিন্দুবিসর্গও জানে না। শেষ পর্যন্ত অবশ্য শেষ রক্ষে হয়নি। পুলিশের টানা জেরার মুখে ভেঙে পড়ে মোতাহার গোটা ঘটনা স্বীকার করে নিয়েছিল। এক সময়ের বন্ধু তথা সহকর্মী সজিবর রহমানকে কী ভাবে খুন করেছে সবটাই নিজের মুখে স্বীকার করে নিতে বাধ্য হয় সে। এমনকি বুধবার রাতেই যে তরবারি দিয়ে খুন করেছিল, সেটাও খুনের ঘটনাস্থল লাগোয়া পুকুর থেকে উদ্ধার করে তুলে দিয়েছে পুলিশের হাতে। তবে পুলিশের দাবি, নিজের দোষ কবুল করেছে ঠিকই। কিন্তু তার আগে পুলিশকে অনেক কাঠখড় পোড়াতে হয়েছে। মোতাহার সহজে তার কুকীর্তির কথা স্বীকার করেনি।
মোতাহার এমনটা কেন করল?
পুলিশের দাবি, কর্মস্থলে কিছু ভুল বোঝাবুঝি থেকে মোতাহারের সঙ্গে ভিলেজ পুলিশ জাহাঙ্গিরের গণ্ডগোলের সূত্রপাত। তাতে জড়িয়ে পড়ে সজিবর। ফলে পুরনো বিবাদ একটা ছিলই। পরে গত মঙ্গলবার রাতে পাচারের মোষ ধরাকে কেন্দ্র করে সেই বিবাদ চরম আকার নেয়।
ঘটনার পর থেকেই পরিবারের লোকজন দাবি করেছিলেন, ঘটনার রাতে মোতাহার বাড়িতেই ছিল। কিন্তু পুলিশের জেরায় মোতাহার নিজেই স্বীকার করে নেয় সহকর্মীদের খুন এবং জখমের ঘটনায় সে জড়িত। কিন্তু এমন ক্ষোভের কারণ নিয়ে গোটা খয়রামারি এলাকা এখনও ধন্দে রয়েছে।
এলাকার মানুষের দাবি, নিজেদের মধ্যে সামান্য মন কষাকষিকে ঘিরে এমন খুনের ঘটনা ঘটবে কল্পনাও করতে পারেননি তাঁরা। এমনকি মোতাহারের বাবা বাবা হারুন আল রশিদ এদিন বিশ্বাস করতে পারেনি ছেলের এমন কীর্তির কথা। তিনি বলছেন, ‘‘আমার এখনও বিশ্বাস হচ্ছে না মোতাহার খুনে জড়িত।’’
জেলা পুলিশের এক কর্তা বলছেন, মোতাহার আদতে খুব ঠাণ্ডা মাথার খুনি। খুনের পরে তরবারিটা পা দিয়ে বাঁকিয়ে জলে ফেলে দিয়েছিল। পরে সকলের অজান্তে নিজের বাড়িতে ঢুকে ঘরের মধ্যে শুয়ে ঘুমিয়ে পড়েছিল।
যদিও অভিযুক্ত মোতাহার আলি বারবার পুলিশের সামনে দাবি করেছে, ‘‘কী করে কী হয়ে গেল কিছুই বুঝতে পারছি না স্যার। মাথাটা খুব কম সময়ের মধ্যে গরম হয়ে গিয়েছিল।’’
তবে এই খুনের ঘটনার পরে সিভিক ভলান্টিয়ারদের নিয়ে গ্রামবাসীদের মনে সন্দেহের চোরা স্রোত বইতে শুরু করেছে। গ্রামবাসীরা বলছেন, এখনই রাশ না টানলে সিভিক ভলান্টিয়ারদের নিয়ে পুলিশ প্রশাসন সমস্যায় পড়বে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy