Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

শাসক-ঘনিষ্ঠ বলেই ছাড়, মত ডাক্তারের

কর্তব্যরত চিকিৎসকের উপরে হামলার ঘটনার পর ২৪ ঘণ্টার বেশি সময় পার হয়ে গেলেও কাউকে গ্রেফতার করতে পারল না পুলিশ। উল্টে অভিযোগ উঠছে যে, গোটা ঘটনাটিকেই ছোট করে দেখাতে চাইছে পুলিশের একটা অংশ।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কৃষ্ণনগর শেষ আপডেট: ০৩ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০২:০১
Share: Save:

কর্তব্যরত চিকিৎসকের উপরে হামলার ঘটনার পর ২৪ ঘণ্টার বেশি সময় পার হয়ে গেলেও কাউকে গ্রেফতার করতে পারল না পুলিশ। উল্টে অভিযোগ উঠছে যে, গোটা ঘটনাটিকেই ছোট করে দেখাতে চাইছে পুলিশের একটা অংশ। চিকিৎসকেরা গোটা ঘটনা নিয়ে ফুঁসছে‌ন। তাঁদের সংখ্যাগরিষ্ঠের অভিযোগ, শাসক দল-থাকায় পিছু হটতে বাধ্য হচ্ছে পুলিশ। তবে এই অভিযোগ পুরোপুরি উড়িয়ে দিচ্ছেন জেলা পুলিশের কর্তারা। তাঁদের দাবি, সেই সময় অনেকেই ছিলেন। ঠিক কে বা কারা ওই চিকিৎসককে হেনস্তা করেছেন তা নিশ্চিত ভাবে চিহ্নিত করতে সময় লেগে যাচ্ছে।

তৃণমূলের চাপড়া ব্লক সভাপতি জেবের শেখও দাবি করেন, “এই অভিযোগ ঠিক না। দল কখনই এই ধরনের ঘটনা সমর্থন করে না। আমরাও চাই দোষীরা শাস্তি পাক।” পুলিশ সুপার রূপেশ কুমার বলছেন, “প্রকৃত দোষীদের চিহ্নিত করার কাজ চলছে। সিসি ক্যামেরার ফুটেজ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। দোষীরা শাস্তি পাবে।”

চিকিৎসক নিগ্রহে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে অনেক দিন ধরেই। কখনও হাসপাতালে যথাযথ নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ বলে চিকিৎসকেরা অভিযোগ জানিয়েছেন, আবার কখনও দোষীদের পুলিশ ধরছে না বলে কথা উঠেছে। অতি সম্প্রতি কলকাতার এক বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসক নিগ্রহের অভিযোগ উঠেছে যাদবপুর থানার ওসি পুলককুমার দত্তের বিরুদ্ধে। এই ঘটনার পরেও পুলিশের ভূমিকা নিয়ে সমালোচনার ঝড় উঠেছে। কেন পুলকবাবুকে গ্রেফতার করা হয়নি, কেন শুধু মৌখিক ভাবে দুঃখপ্রকাশ করার পরে তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে বা কেন কলকাতা পুলিশের ফেসবুক পেজে পুলকবাবুর সমর্থনে লেখা হয়েছে তা নিয়ে চিকিৎসক মহল সরব হয়েছে। ফেসবুকে প্রচুর লেখালেখি হচ্ছে, বিভিন্ন চিকিৎসক সংগঠনও আন্দোলন-প্রচার চালাচ্ছে। পুলিশ ও চিকিৎসক দু’পক্ষের অনেকেই মনে করছেন, সম্প্রতি চিকিৎসক নিগ্রহের বিরুদ্ধে প্রচার শুরু করেছিল পুলিশ। এই ঘটনায় সেই প্রচেষ্টা ধাক্কা খাবে।

মাস কয়েক আগেই কলকাতা ও আশপাশের একাধিক থানা থেকে স্থানীয় হাসপাতালের চিকিৎসকদের কাছে গ্রিটিংস কার্ড ও গোলাপ ফুল পাঠানো হয়। পোস্টার পড়েছিল ও লিফলেট বিলি হয়েছিল। ডাক্তারদের ‘সমাজবন্ধু’ এবং ‘দেবতা সমতূল’ বলে হামলাকারীদের মন বদলানোর চেষ্টা ছিল। তার পরেই একাধিক ঘটনায় চিকিৎসকেরা পুলিশের ভূমিকা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।

চাপড়া হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি, হাসপাতালে আনার আগেই মারা গিয়েছিলেন ওই যুবক। কিন্তু পরিবারের লোকজন তা বিশ্বাস করতে চাননি। হাসপাতালের সুপার রণবীর সাহা বলছেন, “কোনও মতে বেঁচে গিয়েছি। এর পর যদি হামলাকারীদের শাস্তি না-হয় তা হলে আমাদের মতো চিকিৎসকদের মনোবল ভেঙে যাবে।”

চিকিৎসকদের সংগঠন ‘ ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন’-এর কৃষ্ণনগর শাখার সভাপতি রমেন্দ্রনাথ সরকার বলেন, “ আমরা জেলাশাসক ও পুলিশ সুপারের সঙ্গে কথা বলেছি। আর একটা দিন অপেক্ষা করব। তার পরেও যদি কেউ গ্রেফতার না হয় তা হলে পথে নামব।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Attack Doctors TMC
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE