চলছে কাগজ পরীক্ষা। রঘুনাথগঞ্জে তোলা নিজস্ব চিত্র।
যানজটে লাগাম টানতে শহর জুড়ে বেআইনি টোটো ধরতে পথে নামল পুলিশ।
শুক্রবার থেকে অভিযান শুরু হয়েছে রঘুনাথগঞ্জে। প্রথম দিনেই ৭০টি টোটো আটক করা হয়। কোনটিরই বৈধ কাগজপত্র ছিল না। সে খবর ছড়িয়ে পড়তে শনিবার শহর থেকে ম্যাজিকের মতো উধাও হয়ে যায় বেশিরভাগ টোটো।
পুলিশ ও জঙ্গিপুর পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, পুরসভা শহরে চলাচলের জন্য ৯০০ টোটোকে অনুমতি দেওয়া হয়। কিন্তু সে জায়গায় শহরে অন্তত ২২০০ টোটো চলছে। গতি অত্যন্ত শ্লথ হওয়ায় যানজট বেড়েছে। তাই ‘বেআইনি’ টোটো ধরতে পথে নেমেছে পুলিশ। জঙ্গিপুর পুরসভাও জানিয়েছে, ১৯ মের পর বেআইনি টোটোর বিরুদ্ধে অভিযানে নামবে তারাও।
রঘুনাথগঞ্জ শহরের ফুলতলা এলাকায় ফুটপাথের দখল নিয়েছে আম, লিচু বিক্রেতারা। রাস্তার একপাশে ট্রেকার ও অটোর দাপাদাপি। অন্য পাশে, যাত্রী তুলতে খুশিমতো যেখানে সেখানে দাঁড়িয়ে পড়ছে টোটো। আর এ সবের ফলে সকাল থেকেই দুপুর পর্যন্ত যানজটে নাকাল হতে হচ্ছে মানুষজনকে। একই অবস্থা বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত। এ দিকে, সাগরদিঘি যাওয়ার বাসস্ট্যান্ডের যানজটও লাগাম ছাড়া। রাস্তার অর্ধেকটাই টোটো ও অটোর দখলে। তার মধ্যেই বাস বা লরি রাস্তায় ঢুকলে থমকে যাচ্ছে সেতুর দক্ষিণমুখী রাস্তা। ডিভাইডার থাকলেও তা মানার বালাই নেই দাদাঠাকুর মোড়ে। সেখানেও সেই টোটোর দাপট। রাস্তা জুড়ে দাঁড়িয়ে থাকা টোটো যানজট পাকিয়ে তুলছে রঘুনাথগঞ্জ বাসস্ট্যান্ড এলাকায়ও।
পথচারীদের অভিযোগ, ফুলতলায় যানজট বাড়াচ্ছে মাটি, পাথর ভর্তি ট্রাক্টর ও লরি। সঙ্গে রয়েছে যন্ত্রচালিত রিকশা, লছিমনও। এমনিতেই ফুলতলায় রাস্তার দু’পাশ দখল করেছে লিচুর কারবারিরা। ফুটপাথ আছে, তবে সেখানে পথচারিদের যাতায়াতের উপায় নেই। ফলে পথচারীরা এখন রাস্তায় নেমেছেন। যানজটের মধ্যেই হঠাৎ করে দাঁড়িয়ে পড়ছে অটো, টোটো ও বাস। ফুলতলা থেকে শহরের নান্নুর মোড় পর্যন্ত টোটো আরও বেলাগাম। ফুলতলায় পুরসভার মার্কেট কমপ্লেক্স তৈরির পর সেখান থেকে কিছু দোকান উঠলেও ওই এলাকার বিপজ্জনক সড়কের না হয়েছে সংস্কার, না বেড়েছে সড়কের পরিসর।
রঘুনাথগঞ্জ জঙ্গিপুর মহকুমার সদর শহর। মহকুমার সরকারি দফতর, নানা ব্যাঙ্কের শাখা, আদালত রঘুনাথগঞ্জে অবস্থিত। শহরে ঢোকার মুখেই বাস, ট্রেকার, ছোট গাড়ি ও টোটোর স্ট্যান্ড। দশ বছরের মধ্যে শহরের জনসংখ্যা বেড়েছে লাফিয়ে লাফিয়ে। পাল্লা দিয়ে বেড়েছে মোটরবাইক, গাড়ির সংখ্যাও। ফলে যানজট বাড়ছে বই কমছে না।
জঙ্গিপুরের পুরপ্রধান মোজাহারুল ইসলাম জানান, প্রথম বছর শহরের রাস্তায় চলার জন্য ১৬০টি টোটোকে অনুমতি দিয়েছিল পুরসভা। টোটোর গায়ে নম্বরও পড়ে। পরে আরও ৭৪০টিকে টোটোকে অনুমতি দেওয়া হয়। তিনি বলেন, “৯০০ টোটো অনুমতি পেলেও প্রতি বছর অনুমতিপত্রের নবীকরণ করার কথা। কিন্তু গোটা ত্রিশেক টোটো ছাড়া কোনও টোটো তা করেনি।’’
পুরপ্রধানের অভিযোগ, টোটোর জন্য শহরের সর্বত্র যানজট হচ্ছে। কোনও নিয়ম মানা হয় না। একাধিক দুর্ঘটনা ঘটলেও ক্ষতিগ্রস্ত যাত্রীরা ক্ষতিপূরণ পান না। তাই পুরসভাও এ বার টোটোর বিরুদ্ধে অভিযান করবে।
পুলিশও মানছে, শহরে যানজট বেড়েছে টোটোর জন্য। যাত্রী তোলার জন্য যেখানে সেখানে টোটো দাঁড়িয়ে পড়ছে। যাঁরা টোটো চালাচ্ছেন তাঁদের কোনও লাইসেন্স নেই। চালকদেরও অনেকেই নাবালক। রঘুনাথগঞ্জ থানার আইসি অতনু ঘোষাল জানান, “টোটো চালাতে হবে আইন মেনে। আদালতও টোটো নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। এখন থেকে তাই পুলিশি অভিযান ধারাবাহিক ভাবেই চালানো হবে শহরে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy