Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪
দ্রুত ভেঙে যাচ্ছে রাস্তা
Roads

গ্রামের পথে দাপিয়ে চলছে ভারী ট্রাক

নিয়াল্লিশপাড়ার এই রাস্তাটি সংস্কারের জন্য প্রায় সাড়ে তিন কোটি টাকা খরচ হয়েছিল। কিন্তু ওভারলোডেড গাড়ি চলাচল আটকানো যায়নি। 

অবাধ চলাচল। নিজস্ব চিত্র।

অবাধ চলাচল। নিজস্ব চিত্র।

ইন্দ্রাশিস বাগচী
বহরমপুর শেষ আপডেট: ২১ ডিসেম্বর ২০২০ ০০:০১
Share: Save:

গ্রামীণ সঙ্কীর্ণ রাস্তায় দাপিয়ে বেড়াচ্ছে ইট, বালি ভর্তি ভারী ভারী ট্রাক। যার জেরে ভাঙছে রাস্তা। ফলে নিত্য হয়রানির শিকার হচ্ছেন বহরমপুরের নিয়াল্লিশপাড়ার বাসিন্দারা। তাঁদের অভিযোগ, প্রশাসনের কাছে একাধিকবার সমস্যার কথা জানিয়েও সুরাহা হয়নি।

স্থানীয়রা জানান, নিয়াল্লিশপাড়া থেকে আজিমগঞ্জ যাওয়ার প্রায় আট কিমি রাস্তাটির বছরখানেক ধরেই এমন ভগ্নদশা। জেলা পরিষদের অধীন এই রাস্তাটি বর্ষায় জল-কাদায় ডুবে যায়। অন্য সময় ধুলোয় ঢেকে থাকে। তার মধ্যে দিয়েই প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ যাতায়াত করেন। এই রাস্তা দিয়েই স্কুলের গাড়ি, অ্যাম্বুল্যান্সও চলাচল করে। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, নবগ্রামের শিবপুরে টোল প্লা‌জ়া এড়াতে বালি ও পাথরভর্তি বড় বড় ট্রাক বাইপাসের এই রাস্তা দিয়ে চলাচল করে। অতিরিক্ত ভার বহন করতে না পেরে রাস্তাটি ক্রমেই ভেঙে যাচ্ছে।

ওই এলাকার বাসিন্দা মারফত শেখের দাবি, ‘‘বহুদিন আগে একবার এই রাস্তা সংস্কার করা হয়েছিল। তারপর আর একবারও হাত পড়েনি রাস্তায়। রাস্তার পাশেই দোকান রয়েছে বেশ কিছু। বিক্রেতাদের দাবি, সর্বক্ষণ ট্রাক চলায় সারাদিনই ধুলোর মধ্যে বসে থাকতে হয় তাদের। অনেকে দোকানের সামনের রাস্তায় জল ছিটিয়ে ধুলো দূর করার চেষ্টা করেন। জাতীয় সড়ক ছেড়ে সংকীর্ণ ও ভগ্নপ্রায় এই রাস্তা দিয়ে ভারী ট্রাক চলাচল করছে কেন? এই প্রশ্নের উত্তরে টোল ট্যাক্স ফাঁকি দেওয়ার যুক্তি উড়িয়ে দিয়ে এক ট্রাক চালক রাকেশ ইসলাম বলেন, ‘‘জাতীয় সড়ক দিয়ে গেলে গন্তব্যে পৌঁছতে যেখানে চার ঘণ্টা সময় লাগে, বাইপাসের রাস্তা দিয়ে গেলে তা দেড় ঘণ্টায় পৌঁছনো যায়। সেই কারণেই এই রাস্তা দিয়ে যাওয়া।’’ স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, রামেশ্বর, মালপাড়া, খোসবাগ, ভীমেশ্বর-সহ আশপাশের প্রায় পনেরোটি গ্রামের মানুষের যাতায়াতের জন্য এটিই একমাত্র রাস্তা। জেলা পরিষদ সূত্রে খবর, ২০১৬ সালের পর ২০১৮ সালে রাস্তা সংস্কার করা হয়েছিল। সেই সময় নিয়াল্লিশপাড়ার এই রাস্তাটি সংস্কারের জন্য প্রায় সাড়ে তিন কোটি টাকা খরচ হয়েছিল। কিন্তু ওভারলোডেড গাড়ি চলাচল আটকানো যায়নি।

ফলে ভাঙা রাস্তা দিয়ে প্রাণের ঝুঁকি নিয়েই সাধারণ মানুষকে চলাচল করতে হয়। রাস্তা ভেঙে যাওয়ার কারণ হিসেবে ভারী ট্রাকের দাপাদাপিকেই দায়ী করেছেন নিয়াল্লিশপাড়া পঞ্চায়েতের তৃণমূলের প্রধান সাদেক আলি। তিনি বলেন, ‘‘এর আগেও ওভারলোডেড গাড়ি চলাচল বন্ধ করার জন্য পুলিশ প্রশাসনকে বলা হয়েছিল। তারপর কিছুদিন বন্ধ থাকলেও ফের ওভারলোডেড যান চলাচল শুরু হয়েছে। তাই রাস্তা ভেঙে যাচ্ছে। রাস্তা সারাইয়ের জন্য পঞ্চায়েতের পক্ষ থেকে চেষ্টা করা হচ্ছে।’’

জেলা পরিষদের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ রাজীব হোসেন বলেন, ‘‘ওই রাস্তা দিয়ে যাতে ভারী ট্রাক চলাচল করতে না পারে তার জন্য পুলিশকে বলা হয়েছে। ওই রাস্তায় টোল গেট বসিয়ে ভারী ট্রাক চলাচল নিয়ন্ত্রণের পরিকল্পনা রয়েছে। যত দ্রুত সম্ভব রাস্তা মেরামত করা হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

poor condition Roads Berhampore
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE