নিয়মিত পরিষ্কার না হওয়ায় মজে গিয়েছে নিকাশি নালা। — নিজস্ব চিত্র
হাটে আধুনিক পরিকাঠামোর অভাব রয়েছে
ভাগীরথীর পারে মধ্যবঙ্গের অন্যতম বাণিজ্যিক শহর বেলডাঙা। এক সময় জল ও স্থল উভয় পথেই ব্যবসা-বাণিজ্য হত। বর্তমানে বেলডাঙার বাণিজ্যিক পরিচিতি শহরের হাটকে ঘিরে। ফি মঙ্গলবার এই হাট বসে। আশেপাশে জেলার লক্ষাধিক মানুষ এই হাটে কেনাবেচা করতে আসেন। কিন্তু এখনও পর্যন্ত হাটের জন্য কোনও আধুনিক পরিকাঠামো গড়ে ওঠেনি।
হাটের পাশে পাঁচরাহার মোড়ে সারাক্ষণই যানজট লেগে রয়েছে। যানজটের জেরে প্রতিদিন বিভিন্ন স্কুলের শিক্ষক শিক্ষিকা সময়ে বেলডাঙা এসেও ঠিক সময়ে স্কুলে পৌঁছাতে পারেন না। কিছুদিন আগে শোনা যাচ্ছিল আন্ডারপাস হবে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত তা হল না। যদিও সেটা হওয়া খুব জরুরি।
সবচেয়ে করুণ অবস্থা শহরে নিকাশি ব্যবস্থার। সামান্য বৃষ্টিতে রাস্তাঘাটে জল থইথই করে। বাজারের কেন্দ্রস্থলে রবীন্দ্র মূর্তির পিছেনে একটি দুগর্ন্ধযুক্ত ভ্যাট থাকে। এতে পরিবেশ যেমন দূষিত হচ্ছে তেমনি ইচ্ছে থাকলেও কেউ মূর্তির পাদদেশে গিয়ে শ্রদ্ধা জানাতে পারেন না। এটা অবিলম্বে দূর হওয়া উচিৎ।
আব্দুল হালিম বিশ্বাস, শিক্ষক।
নাট্যচর্চার জন্য স্থায়ী মঞ্চ হোক
মুর্শিদাবাদ গেজেটিয়ার (২০০৩) থেকে জানা যায়, ১৯২১ সালে ব্রিটিশ সরকার বেলডাঙাকে শহরের স্বীকৃতি দিয়েছে। আর শহরে নাট্যচর্চা শুরু হয় ১৯২৪ সালে। তৈরি হয় অন্নপূর্ণা থিয়েটার। তাদের প্রযোজনায় প্রথম নাটক গিরীশচন্দ্র ঘোষের ‘প্রফুল্ল’। বেলডাঙার হাজরা বাড়িতে তা মঞ্চস্থ হয়। সেখানে প্রমথনাথ ভাদুড়ী, অতিশ ঘোষ, মণীন্দ্রমোহন হাজরা, গৌর আঢ্য, গোকুল চট্টোপাধ্যায় প্রমুখ অভিনেতারা অভিনয় করেন। পরে ‘চন্দ্রগুপ্ত’, ‘টিপু সুলতান’ নাটকেও তাঁরা অভিনয় করেন। তারপর ১৯৫২ সালে বেলডাঙায় গ্রুপ থিয়েটার তৈরি হয়। অনিলকুমার দত্ত বেলডাঙা রেলবাজারে ‘শাহজাহান’ মঞ্চস্থ করেন। সেই ধারা পরেও চলতে থাকে।
বছর কয়েক আগেও বেলডাঙা নেতাজি পার্কে নাটকের চর্চা হত। বর্তমানে বন্ধ। সম্প্রতি শহরের কয়েকজন প্রবীণ মিলে নাটকের চর্চা শুরু করেছেন। কিন্তু কোনও স্থায়ী মঞ্চ না থাকায় তাঁরা বেশি দূর এগোতে পারেননি। তাই পুরসভা উদ্যোগী হয়ে যদি স্থায়ী নাট্যমঞ্চ তৈরি করে তা হলে শহরের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য কিছুটা হলেও ফিরবে।
সন্তোষরঞ্জন দাস, সাংস্কৃতিক কর্মী।
জমা জল সরে কই
রেললাইনের দু’দিকে বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে ১৪ ওয়ার্ডের এই শহর। ২০০০ সালের সেপ্টেম্বর মাসে বন্যায় বেশ কয়েকটি ওয়ার্ড কয়েকদিন ১০ ফুট জলের তলায় ছিল। টানা ১৭ দিন শহরে বিদ্যুৎ ছিল না। অনেক দিন ধরে জল জমে থাকায় শহরে নানা রোগের প্রাদুর্ভাব হয়।
কিন্তু দিন বদলের সঙ্গে শহরের নিকাশি ব্যবস্থার কোনও পরিবর্তন হয়নি। প্লাস্টিক জমে নিকাশিনালা বন্ধ হয়ে গিয়েছে। তাই জল শহর থেকে বেরোনোর পথ বন্ধ হয়ে গিয়েছে। বর্তমানে নিকাশি নালার বিকল্প হিসাবে বড় ড্রেন তৈরি হয়েছে। কিন্তু সমস্যা মেটেনি। তাই শহরবাসী হিসেবে আমাদেরও প্লাস্টিকের ব্যবহার কমাতে হবে। তা হলে আগামী দিনে আর বন্যার কবলে পড়তে হবে না।
নেপাল সরকার, প্রাক্তন সরকারি কর্মী
হাসপাতালে পর্যাপ্ত ওষুধ নেই
ছোট থেকেই গুজরাতে মানুষ। পরে কর্মসূত্রে আরও কয়েক বছর সেখানে কাটিয়েছি। দেখেছি সেখানকার সরকারি স্বাস্থ্য ব্যবস্থা কত উন্নত। সরকারি হাসপাতলে সব শ্রেণির মানুষ সুন্দর চিকিৎসা পরিষেবা পান। কয়েক মাস হল বেলডাঙায় বাস করছি। কিন্তু বেলডাঙা গ্রামীণ হাসপাতালে অক্সিজেন নেই। পর্যাপ্ত ওষুধ নেই। এক্স-রে মেশিনে কাজ হয় না। শল্যচিকিৎসক না থাকায় অপারেশন হয় না। অ্যাম্বুলেন্স নেই। প্রয়োজনের তুলনায় চিকিৎসকের সংখ্যা খুব কম। এ বিষয়ে স্বাস্থ্য দফতর নজর দিলে বাধিত হব।
রাজেশ দাস, বেসরকারি সংস্থার কর্মী
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy