নিম্ন মানের ইট-বালি-সিমেন্ট দিয়ে শৌচাগার তৈরির অভিযোগ উঠল ঠিকাদারি কাজের সঙ্গে জড়িত এক তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে। ধুবুলিয়ার চুঁয়াখালি এলাকার উপভোক্তারা এ নিয়ে প্রতিবাদ করায় ওই নেতা হুমকিও দিচ্ছেন বলেও অভিযোগ। শৌচাগার তৈরিতে বরাতপ্রাপ্ত ওই ঠিকাদার সুধাংশু ঘোষ নওপাড়া-২ নম্বর অঞ্চলের তৃণমূলের সভাপতি।
দিন কয়েক আগে এলাকার জনা ১৭ উপভোক্তা তাঁর বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করেছেন কৃষ্ণনগর-২ ব্লকের বিডিও ও নদিয়ার জেলা শাসক পিবি সালিমের কাছে।
তাঁদের অভিযোগ, বছর খানেক আগে জেলা জুড়ে একশো দিনের কাজ ও নির্মল ভারত অভিযানের অর্থানুকুল্যে শুরু হয় শৌচাগার নির্মাণ। জেলার ১৭ টি ব্লকের লক্ষাধিক পরিবারে শৌচাগার তৈরির কাজ চলছে। বাড়ি পিছু ৯ হাজার ১০০ টাকা বরাদ্দ করা হয়। বাকি ৯০০ টাকা উপভোক্তার দেওয়ার কথা। অসহায় উপভোক্তারা টাকার পরিবর্তে শ্রমও দিতে পারেন।
ওই প্রকল্পের অধীনে কৃষ্ণনগর-২ ব্লকের নওপাড়া-২ গ্রাম পঞ্চায়েতে কাজের বরাত পায় ধুবুলিয়া ইউনানি দাতব্য চিকিৎসালয়। এই বেসরকারি সংস্থা ওই পঞ্চায়েতে অলিখিতভাবে কাজের দায়িত্ব দেয় স্থানীয় তৃণমূল নেতা সুধাংশু ঘোষকে।
কিন্তু সুধাংশুবাবু নিম্নমানের ইমারতি সামগ্রী দিয়ে কাজ করছেন বলে অভিযোগ। জেলা শাসকের দফতর থেকে জারি হওয়া নির্দেশিকায় পরিষ্কার উল্লেখ রয়েছে, বাজারের এক নম্বর ইট দিয়ে তৈরি করতে হবে শৌচাগার। কিন্তু তিনি তিন নম্বর ইট দিয়ে শৌচাগার বানাচ্ছেন বলে অভিযোগ জানিয়েছেন উপভোক্তারা।
চুঁয়াখালি গ্রামের বাসিন্দা ফারুক মণ্ডল বলেন, “বালি-সিমেন্টেও রয়েছে ভেজাল। শৌচাগারের জন্য ব্যবহৃত কুয়োর পাতে একটু ঘষা লাগলেই লক্ষ্য করা যাচ্ছে কঞ্চি।” আর এক বাসিন্দা নিমাই প্রামাণিক বলেন, ‘‘শৌচাগার তৈরিতে পুরোটাই অনিয়ম করছেন সুধাংশু ঘোষ। প্রতিবাদ করলেই আমাদের মারধরের হুমকি দিচ্ছে। শাসকদলের নেতা বলে আমরা তেমন কিছু বলতেও পারছি না।”
সুধাংশু ঘোষ অবশ্য তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা সমস্ত অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে বলেন, “কে কোথায় শৌচাগার বানাচ্ছেন আমি কিছুই জানি না।”
এ দিকে ইউনানি দাতব্য চিকিৎসা কেন্দ্রের কোষাধ্যক্ষ নিয়ামত শেখ পরিষ্কার বলছেন, ‘‘সুধাংশু ঘোষকে নওপাড়া এলাকায় কাজ দেখাশোনার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। ওঁর বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ উঠলে তা খতিয়ে দেখা হবে।”
ঘটনা প্রসঙ্গে বিডিও শাশ্বত দাশগুপ্ত জানান, বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। অনিয়ম প্রমাণিত হলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কিন্তু বিডিও-র কাছে অভিযোগ জমা পড়েছে দিন পাঁচেক আগে। বাসিন্দাদের ক্ষোভ, এখনও প্রশাসনিক তরফে একজনকেও এলাকায় আসতে দেখা যায়নি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy