Advertisement
E-Paper

শীতেও কাদা শুকোয়নি সিজগ্রামে

সম্প্রতি আনন্দবাজারের পাঠকদের মুখোমুখি হয়েছিলেন ভরতপুর ১ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি নুর আহম্মদ। নাগরিকদের নানা দাবি-দাওয়া, প্রাপ্তি-প্রত্যাশার বিষয় ওঠে আলোচনায়। সঞ্চালনায় ছিলেন কৌশিক সাহা। রইল বাছাই প্রশ্নোত্তর। সম্প্রতি আনন্দবাজারের পাঠকদের মুখোমুখি হয়েছিলেন ভরতপুর ১ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি নুর আহম্মদ। নাগরিকদের নানা দাবি-দাওয়া, প্রাপ্তি-প্রত্যাশার বিষয় ওঠে আলোচনায়। সঞ্চালনায় ছিলেন কৌশিক সাহা। রইল বাছাই প্রশ্নোত্তর।

শেষ আপডেট: ০২ জানুয়ারি ২০১৭ ০০:০৯
এই শীতেও এমনই বেহাল সিজগ্রামের রাস্তা (বাঁ দিকে)। নলকূপ আছে, জল পড়ে না (ডান দিকে)। — নিজস্ব চিত্র

এই শীতেও এমনই বেহাল সিজগ্রামের রাস্তা (বাঁ দিকে)। নলকূপ আছে, জল পড়ে না (ডান দিকে)। — নিজস্ব চিত্র

• একশো দিনের কাজে রাস্তা ও পুকুর খননের যতটা হওয়ার কথা ততটা কাজ হচ্ছে না। সংস্কারের নামে সরকারি টাকা অপচয় হচ্ছে কেন?

আব্দুর রহিম, তালগ্রাম

একশো দিনের কাজ পঞ্চায়েত সমিতি পরিচালন করে না। ওই কাজ করে গ্রাম পঞ্চায়েত। তবে এলাকার বাসিন্দারা যদি লিখিত অভিযোগ জানান তা হলে ব্যবস্থা নিতে পারি।

• ব্লক জুড়ে বহু নিকাশি নালা রয়েছে। কিন্তু দীর্ঘদিন সংস্কার না হওয়ায় নালাগুলি মজে গিয়েছে। নোংরা জল রাস্তার উপর দিয়ে বইছে। ফলে এলাকায় দূষণ ছড়াচ্ছে। এমনটা হচ্ছে কেন?

ইব্রাহিম শেখ, আমলা

একশো দিনের কাজে ওই নর্দমাগুলি সংস্কার করা হয়। সেখানে মাটির রাস্তা থেকে নর্দমা সংস্কার সব কিছুই হয়। কিন্তু কেন এমন হচ্ছে সেটা আমি খোঁজ নিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেব।

• করন্দি গ্রামের মাটির রাস্তাটি এতটাই খারাপ যে সামান্য বৃষ্টিতে রাস্তা দিয়ে চলাফেরা করা যায় না। রোগীকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে হলে কোনও গাড়ি যেতে চায় না।

বিদ্রোহী মুন্সি, করন্দি

মাটির রাস্তাগুলি মূলত একশো দিনের কাজের মাধ্যমে সংস্কার করা হয়। তবে মাটির রাস্তাগুলি যে সংস্কার করা হচ্ছে না সেটা অস্বীকার করার কিছু নেই। ওই রাস্তাগুলিকে মাটি থেকে সরাসরি ঢালাই রাস্তা পরিকল্পনা রয়েছে। জরিপের কাজও হয়ে গিয়েছে। অর্থের অভাবে ঢালাই করা যাচ্ছে না।

• খাদ্য সুরক্ষা কার্ডের মান অনুযায়ী যতটা খাদ্যশষ্য ও চাল পাওয়ার কথা, সেই পরিমাণ চাল ও খাদ্যশষ্য দিচ্ছে না রেশন ডিলারেরা। এর জন্য একটি কমিটি করে রেশন দোকানগুলির উপর নজরদারি রেখের কোনও ব্যবস্থা করা না হওয়ার কারণে বহু মানুষ বঞ্চিত হচ্ছে।

হাফিজুল রহমান, তালগ্রাম

অভিযোগ মাঝেমধ্যেই পাওয়া যাচ্ছে। সমস্যাও হচ্ছে। সমস্যার সমাধানের জন্য বিষয়টি আলোচনার মধ্যে আছে। তবে প্রাপকরা যদি রেশন দোকান থেকে পণ্য কম পান সেক্ষেত্রে লিখিত অভিযোগ জানালে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

• অধিকাংশ বিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা নির্ধারিত সময়ে স্কুলে আসেন না। ফলে স্কুলের পড়ুয়ারা শৃঙ্খলাবদ্ধ পরিবেশ থেকে বেরিয়ে যাচ্ছে। সারাক্ষণ স্কুলের বাইরে দেখা যায়। এতে শিক্ষকেরা তাঁদের কর্তব্যে গাফিলতি করছে না কি?

আমির হামজা, সিজগ্রাম

ব্লকে মোট ১৩টি উচ্চ বিদ্যালয় আছে। শিক্ষকদের দেরিতে স্কুলে আসার খবর আমি মাঝেমধ্যেই পাই। তাই আমি ইতিমধ্যেই জেলার বিদ্যালয় পরিদর্শককে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়ে ছিলাম। কিন্তু কোনও কিছু হয়নি। আমি ফের ওই একই দাবি জানাব জেলার স্কুল পরিদর্শককে।

• সিজগ্রামে জেলা পরিষদ একটি দাতব্য চিকিৎসা কেন্দ্র তৈরি করেছিল। কিন্তু প্রথম দিকে সেখানে সর্বক্ষণের জন্য চিকিৎসক ও নার্স থাকত। কিন্তু প্রায় এক দশক ধরে ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে মাসে এক দিন করে একজন স্বাস্থ্যকর্মী সেখানে গিয়ে পরিষ্কার কাজ করে। চিকিৎসা কিছুই হয় না।

মিঠু শেখ, সৈয়দকুলুট

দাতব্য চিকিৎসালয়টি জেলা পরিষদের অধীনে। জেলা পরিষদের সঙ্গে কথা বলে যাতে পুনরায় সেখানে চিকিৎসা হয় সেই চেষ্টা করব।

• এলাকার আর্সেনিক মুক্ত পানীয় জল সরবরাহের জন্য জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতর আঙ্গারপুরে ২০০৩ সালে একটি পাম্প বসিয়েছিল। সেখান থেকে ভরতপুর, আঙ্গারপুর ও আলুগ্রামে পাইপের মাধ্যমে পানীয় জল সরবরাহ করা হত। কিন্তু ২০১৩ সাল থেকে ওই দফতর পানীয় জল সরবরাহ করা বন্ধ করে দেয়। ফের তা চালু করার দাবি জানিয়েও কোনও কাজ হয়নি।

জাহিরুল শেখ, আঙ্গারপুর

বিষয়টি জানাছিল না। তা যাতে ফের চালু হয়, সে জন্য জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের মন্ত্রীকে জানাব।

• ব্লকে একটি গ্রামীণ হাসপাতাল ও দু’টি উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্র আছে। গ্রামীণ হাসপাতালে কথায় কথায় রোগীদের কান্দি মহকুমা হাসপাতাল অথবা বহরমপুরে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। অন্য দিকে, উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলিতে চিকিৎসকের অভাবে ফার্মাসিস্ট অথবা চতুর্থ শ্রেণির কর্মীরা চিকিৎসা করছেন। ব্লক জুড়ে স্বাস্থ্য পরিষেবার বেহাল দশা। সুরাহা কি হবে?

আরোজ শেখ, ভরতপুর

ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিকের সঙ্গে বহুবার এ বিষয়ে বৈঠক হয়েছে। কিন্তু রাজ্য জুড়ে চিকিৎসকের বড় অভাব। প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম চিকিৎসক থাকায় সমস্যা হচ্ছে। তবে জেলার বৈঠকে যোগ দিয়ে যেটা জানতে পেরেছি তাতে দ্রুত চিকিৎসক নিয়োগ করার চেষ্টা করছে স্বাস্থ্য দফতর। তখন সমস্যা থাকবে না।

• এলাকার সিংহভাগ মানুষ কৃষিজীবী। সেখানে এ বার আমন ধান ওঠার মরসুমে টাকা বাতিলের মধ্যে পরে এক রকম জলের দরে ধান বিক্রি করতে হচ্ছে চাষিদের। অথচ সহায়ক মূল্যে ধান কেনার কোনও উদ্যোগ দেখা যাচ্ছে না।

কালীচরণ দাস, ভরতপুর

সরকারি ভাবে ধান কেনার জন্য রাজ্য সরকার থেকে নির্দেশ জারি হয়। এ বার ওই নির্দেশিকা জারি হতে দেরি হওয়ায় সমস্যা দেখা দিয়েছে। ওই নির্দেশ এসেছে। সপ্তাহ খানেকের মধ্যেই ক্যাম্প করে চাষিদের কাছ থেকে ধান কেনার কাজ শুরু হবে।

Village problems
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy