E-Paper

অনাস্থা-বিজয়েও শান্তি ফিরবে কি

তৃণমূল পরিচালিত কৃষ্ণনগর পুরসভার ২৫টি আসনের মধ্যে একটির পুরপ্রতিনিধি মারা গিয়েছেন।

সুস্মিত হালদার

শেষ আপডেট: ২৬ জুলাই ২০২৫ ০৯:১৯
কৃষ্ণনগর পুরসভা।

কৃষ্ণনগর পুরসভা। —ফাইল চিত্র।

অনাস্থা জটিলতার মধ্যেই এখন কৃষ্ণনগর পুরসভার ভবিষ্যত নিয়ে নতুন প্রশ্ন উঠছে। কারণ অনাস্থার জেরে যদি বর্তমান পুরপ্রধানকে সরেতেই হয়, তাঁর স্থলাবিষিক্ত কে হবেন তা নিয়ে অনিশ্চয়তা পাক খাচ্ছে তৃণমূলের অন্দরেই। দলীয় সূত্রের দাবি, এ নিয়ে এখনও তেমন কোনও আলোচনাই হয়নি। ফলে তা নিয়েই নতুন করে জটিলতা সৃষ্টির আশঙ্কা করছেন অনেকেই। আবার রিতা দাস কুর্সিতে টিকে গেলেও এই জটিলতা বোর্ডের শেষ দিন কাটবে বলে কেউই আশা করছেন না।

তৃণমূল পরিচালিত কৃষ্ণনগর পুরসভার ২৫টি আসনের মধ্যে একটির পুরপ্রতিনিধি মারা গিয়েছেন। বাকি ২৪ জনের মধ্যে ১৫ জন পুরপ্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব এনেছেন, যাঁদের মধ্যে দু’জন বাদে সকলেই তৃণমূলের। তাঁরা যদি শেষ পর্যন্ত নিজেদের অবস্থানে অনড় থাকেন তা হলে আগামী ২৮ জুলাই তলবি সভায় রিতা দাসের অপসারণ সময়ের অপেক্ষা মাত্র। কিন্তু রাজনীতিতে সংখ্যাই শেষ কথা বলে না। অনেক সময়ে পাশা পাল্টেও যায়। বিশেষত যখন এর আগে একাধিক বার তৃণমূলের পুরপ্রতিনিধিদের অনেককেই গোষ্ঠী বদল করতে দেখা গিয়েছে।

তৃণমূলের এক পুরপ্রতিনিধির কথায়, “সেই সম্ভাবনা একেবারে উড়িয়ে দেওয়া যায় না ঠিকই, তবে এ বার সেই সম্ভাবনা কম। কারণ সবাইকে তো পরের ভোটে জিততে হবে। তার জন্য তো এলাকায় কাজ দেখাতে হবে।” যদিও পুরপ্রধানের ঘনিষ্ঠেরা এখনও হাল ছাড়েননি। মঙ্গলবার তলবি সভার নোটিস নেননি তিন পুরপ্রতিনিধি। ফলে ভিতরে-ভিতরে ঠিক কী অবস্থা তা ২৮ জুলাইয়ের আগে কোনও ভাবেই পুরোপুরি পরিষ্কার হওয়ার নয়।

তবে ওই দিন তলবি সভা যে হচ্ছেই সে ব্যাপারে অনেকটাই নিশ্চিত পুরপ্রতিনিধি থেকে পুরকর্মীরা। কারণ অনাস্থা প্রস্তাব জমা দেওয়ার পর থেকে না-জেলা না-রাজ্য, তৃণমূলের কোনও স্তর থেকেই বিদ্রোহী পুরপ্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করে মিটমাটে উদ্যোগী হতে দেখা যায়নি। ফলে অনেকে ধরেই নিয়েছেন যে এ ক্ষেত্রে দলীয় নেতৃত্ব দূর থেকেই পরিস্থিতির উপর নজর রাখার পক্ষপাতী। জেলা তৃণমূলের এক নেতার কথায়, “রিতা দাসকে সরিয়ে অন্য কোনও দল থেকে তো পুরপ্রধান হচ্ছে না। এ ক্ষেত্রে যিনিই পুরপ্রধান হোন না কেন, বোর্ড তো তৃণমূলের দখলেই থাকছে।”

সে ক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন হল, শেষমেশ রিতা দাসকে সরতে হলে পরবর্তী পুরপ্রধান কে হবেন? তৃণমূলের বিদ্রোহীদের নেতৃত্বে থাকা এক পুরপ্রতিনিধির কথায়, “আমাদের এখন একমাত্র লক্ষ্য রিতা দাসকে সরানো। তার পর আলোচনার মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।” কিন্তু সেই কাজটা কি আদৌ সহজ হবে? কারণ বিদ্রোহী গোষ্ঠীর মধ্যে একাধিক পোড়-খাওয়া দীর্ঘদিনের পুরপ্রতিনিধি আছেন, যাঁরা সকলেই পুরপ্রধান হওয়ার যোগ্যতা রাখেন এবং সেই পদের দাবিদারও বটে। ফলে এই বিষয়ে ঐকমত্যে আসার বিষয়ে প্রশ্নচিহ্ন থেকেই যাচ্ছে। অর্থাৎ, কৃষ্ণনগর পুরসভায় অস্থিরতার আশঙ্কাও থেকে যাচ্ছে বলে অনেকের ধারণা। তৃণমূলের শহর সভাপতি তথা অন্যতম বিদ্রোহী পুরপ্রতিনিধি প্রদীপ ওরফে মলয় দত্ত অবশ্য এই বিষয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Krishnanagar

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy