বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিজেপির বহরমপুর সাংগঠনিক জেলার সভাপতি হলেন মলয় মহাজন। এতদিন সেখানে সভাপতি ছিলেন শাখারভ সরকার।
মঙ্গলবার জেলা সভাপতি নির্বাচনের জন্য মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার দিন ছিল। সে দিনই জেলা সভাপতি নির্বাচনে একমাত্র বিজেপির জেলা সাধারণ সম্পাদক মলয় মনোনয়নপত্র জমা দেন। বুধবার দলের সাংগঠনিক নির্বাচনের রাজ্য নির্বাচনী আধিকারিক তথা দলের বিধায়ক দীপক বর্মন মলয়ের নাম বহরমপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি হিসেবে ঘোষণা করেন।
রাজ্যের অনেক জেলায় পুরনো সভাপতিদের রাখলেও শাখারভকে কেন সভাপতি পদ থেকে সরানো হল, তা নিয়ে গুঞ্জন শুরু হয়েছে। দলের এক নেতার কথায়, ‘‘শাখারভ জেলা সভাপতি হওয়ার পর থেকে জেলায় দল কার্যত আড়াআড়ি ভাগ হয়ে গিয়েছিল। সেই থেকে দলের একাংশের সঙ্গে বিরোধ রয়েছে শাখারভের। তার প্রভাব গত লোকসভা নির্বাচনে পড়েছে।’’ যদিও শাখারভ সে কথা উড়িয়ে বলেন, ‘‘আমাদের মধ্যে কোনও কোন্দল ছিল না। আমরা ঐক্যবদ্ধ ভাবেই কাজ করেছি। দ্বিতীয় দফায় জেলা সভাপতি হতে চাইনি। আমিই মলয় মহাজনকে দায়িত্ব দেওয়ার কথা বলেছি। সেই অনুরোধ দল রাখায় কৃতজ্ঞ।’’
মলয় বলেন, ‘‘মুর্শিদাবাদ ও জঙ্গিপুরের সভাপতিদের সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। এই তিন জেলার প্রাক্তন সভাপতি, বর্তমান সভাপতি, বিধায়ক লোকসভার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী, সিনিয়র নেতৃত্বকে নিয়ে একত্রিত হয়ে লড়াইয়ের প্রস্তুতি নিচ্ছি।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘নেতারা একত্রিত হয়ে লড়াইয়ের প্রস্তুতি নিচ্ছেন দেখলে নিচুতলার কর্মীদের সব সংশয় দূর হবে।’’ বহরমপুরের বিজেপি বিধায়ক সুব্রত মৈত্র রাখঢাক না করে বলেন, ‘‘আগের সভাপতির অহঙ্কার ছিল। এটা বিজেপিতে মানায় না। তাই তাঁকে এড়িয়ে চলতাম। এ বার ভাল সভাপতি হয়েছেন। তিনি দলের শ্রীবৃদ্ধি করবেন। আমরা তাঁর সঙ্গে থাকব।’’ গত বিধানসভা নির্বাচনের সময় বহরমপুর ও মুর্শিদাবাদ সাংগঠনিক জেলা মিলে বিজেপির দক্ষিণ মুর্শিদাবাদ সাংগঠনিক জেলা ছিল। সে বার জেলায় মুর্শিদাবাদ আসনে গৌরীশঙ্কর ঘোষ এবং বহরমপুরে সুব্রত মৈত্র জয়ী হয়ে বিধায়ক হন। সেই সময় গৌরীশঙ্কর দক্ষিণ মুর্শিদাবাদ জেলা সভাপতি ছিলেন। নির্বাচনের কয়েক মাস পরে ২০২১ সালের ২৫ ডিসেম্বর গৌরীশঙ্করকে সরিয়ে শাখারভ কে জেলা সভাপতির দায়িত্ব দেওয়া হয়। তার কয়েক মাস পরেই দলের দুই বিধায়ক -সহ একদল নেতা-নেত্রী শাখারভের বিরুদ্ধে কার্যত বিদ্রোহ ঘোষণা করেন। এমনকি, সাংবাদিক বৈঠক ডেকে দলীয় পদ থেকে কয়েক জন ইস্তফাও দিয়েছিলেন। রাজ্য নেতৃত্ব সে সময় পরিস্থিতি কিছুটা সামাল দিলেও দলের বিধায়ক ও তাঁদের অনুগামীদের সঙ্গে সঙ্গে শাখারভের সম্পর্ক ভাল হয়নি বলে দাবি। এর মধ্যেই ২০২৩ সালের ৫ অগস্ট দক্ষিণ মুর্শিদাবাদ ভেঙে বহরমপুর ও মুর্শিদাবাদ সাংগঠনিক জেলা তৈরি করে বিজেপি। শাখারভকে বহরমপুরের দায়িত্ব দেওয়া হয়।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)