নবগঠিত হরিণঘাটা পুরসভার ভোটে বিরোধীশূন্য ভাবে জেতে তৃণমূল। কিন্তু কে পুরপ্রধান হবে তা নিয়ে প্রবল জল্পনা তৈরি হয়। হরিণঘাটা ব্লক তৃণমূলের সভাপতি ও জেলা পরিষদের প্রাণী ও মৎস্য বিভাগের কর্মাধ্যক্ষ চঞ্চল দেবনাথের সমর্থন ছিল রাজীব দালালের দিকে। অন্যদিকে চাকদহের বিধায়ক তথা জেলা মহিলা তৃণমূলের সভানেত্রী রত্না ঘোষের পুরপ্রধান হিসেবে পছন্দ ছিলেন মানিক ভট্ট। বুধবার রাজীব দালাল পুরপ্রধান হিসেবে নির্বাচিত হওয়ায় শেষ হাসি হাসলেন চঞ্চল দেবনাথ। চঞ্চলবাবু অবশ্য বলছেন, ‘‘কাউন্সিলররাই রাজীবকে পুরপ্রধান করেছেন। এখানে আমার কোনও ব্যাপার নেই।’’ এ দিকে নিজের পছন্দের প্রার্থী পুরপ্রধান হতে না পারায় এ দিন শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে গরহাজির ছিলেন রত্নাদেবী। তিনি অবশ্য বলছেন, ‘‘মানিকবাবু দীর্ঘদিন ধরে দল করেন। তাই উনি পুরপ্রধান হলে ভাল লাগত। কলকাতায় আমার এক অসুস্থ আত্মীয়কে দেখতে গিয়েছিলাম। তাই শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে যেতে পারিনি।’’
এ দিন স্থানীয় অডিটোরিয়ামে হরিণঘাটা পুরসভার নির্বাচিত কাউন্সিলরদের শপথগ্রহণ অনুষ্ঠান হয়। দলের কাউন্সিলররা শপথ নেন। তাঁদের শপথ বাক্য পাঠ করান কল্যাণীর মহকুমার শাসক স্বপন কুণ্ডু। এ দিনের অনুষ্ঠানে হাজির ছিলেন তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়। শপথগ্রহণ শেষে পুরপ্রধান হিসেবে নির্বাচিত হন চঞ্চল দেবনাথের অনুগামী বলে পরিচিত রাজীব দালাল। রাজীববাবু ১২ নম্বর ওয়ার্ড থেকে নির্বাচিত হয়েছিলেন। এক্ষেত্রে পিছিয়ে পড়লেন রত্না ঘোষ অনুগামী বলে পরিচিত কাউন্সিলর মানিক ভট্ট। মানিকবাবু ২ নম্বর ওয়ার্ড থেকে নির্বাচিত হয়েছিলেন। এমনকী উপ-পুরপ্রধান পদেও ঠাঁই হয়নি মানিকবাবুর। উপ-পুরপ্রধান হয়েছেন ৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর দিলীপ রায়।
২৫ এপ্রিল রাজ্যের অনান্য পুরসভার সঙ্গে এখানেও নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল। এখানকার ১৭টি ওয়ার্ডের সবগুলিতেই জিতেছিল তৃণমূল। নির্বাচন পর্ব মিটে যাওয়ার পর থেকেই পুরপ্রধান নির্বাচন নিয়ে দলীয় গোষ্ঠী কোন্দল দানা বাঁধতে শুরু করে। যা সামনে আসে ১২ মে। এ দিন দুপুরে কল্যাণী বিদ্যাসাগর মঞ্চে জেলার ৭টি পুরসভার নির্বাচিত কাউন্সিলরদের নিয়ে বসেছিলেন দলের মহাসচিব তথা রাজ্যের শিক্ষা মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। সেই বৈঠকে হাজির ছিলেন নদিয়া জেলা তৃণমূলের সভাপতি গৌরীশঙ্কর দত্ত। অন্যান্য পুরসভার পুরপ্রধান নির্বাচন নিয়ে কোনও সমস্যা হয়নি। কিন্তু গোল বাধে হরিণঘাটার ক্ষেত্রে। হরিণঘাটার পুরপ্রধান কে হবেন সে ব্যাপারে সিদ্ধান্ত হয়নি ওই সভায়। কারন, পুরপ্রধান হিসেবে সে দিনের সভায় তিন জনের নাম উঠে এসেছিল। রাজীববাবু ও মানিকবাবু ছাড়াও ৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর দিলীপ রায়ের নাম শোনা গিয়েছিল। সেদিন পার্থবাবু সাতটি পুরসভার মধ্যে ৬টি পুরসভার পুরপ্রধানের নাম ঘোষণা করলেও হরিণঘাটার পুরপ্রধানের নাম ঘোষণা করতে পারেননি। বিষয়টি গড়িয়েছিল কালীঘাট পর্যন্ত। কয়েকদিন আগে সেখান থেকেই আসে রাজীব দালালের নাম।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy