Advertisement
E-Paper

কেক কেটে পোষ্য কুকুরের জন্মদিন পালন

কলকাতার এক সরকারি হাসপাতালে কুকুরের যোলোটি ছানাকে পিটিয়ে মারায় ঘটনা যখন তোলপাড় ফেলেছে, সেই সময়ে রানাঘাট শহর এক অন্য রকমের দিন দেখা গেল। বাড়ির প্রিয় পোষ্যের জন্মদিন উপলক্ষে মাংস-ভাত খেল এলাকার পথকুকুরেরা।

সৌমিত্র সিকদার

শেষ আপডেট: ১৮ জানুয়ারি ২০১৯ ০২:২৫
সন্তানসম: পোষ্য পুসু।

সন্তানসম: পোষ্য পুসু।

কলকাতার এক সরকারি হাসপাতালে কুকুরের যোলোটি ছানাকে পিটিয়ে মারায় ঘটনা যখন তোলপাড় ফেলেছে, সেই সময়ে রানাঘাট শহর এক অন্য রকমের দিন দেখা গেল। বাড়ির প্রিয় পোষ্যের জন্মদিন উপলক্ষে মাংস-ভাত খেল এলাকার পথকুকুরেরা।

এ বার পাঁচ বছরে পা রেখেছে প্রিয় পোষ্য কুকুর পুসু। তাই বাড়ির লোকেদের এ বারে বেশি আনন্দ। জন্মদিনটাও মনের মতো করে পালন করা হয়েছে। বেশ কয়েক জন আত্মীয় ও প্রতিবেশিদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। সকলের উপস্থিতিতে পুসুর জন্মদিনের কেক কাটা হয়েছে।

তবে এখানেই শেষ নয়। প্রিয় পোষ্যের জন্মদিন উপলক্ষে বুধবার রাতে শহরের বিভিন্ন জায়গায় পথকুকুরদের মাংস-ভাত খাওয়ানো হয়েছে। এ দিন রাত দশটা নাগাদ একটি ভ্যানে ভাত, মাংস নিয়ে শহরের বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে-ঘুরে কাগজের থালায় কুকুরদের খেতে দেওয়া হয়। তিন ঘণ্টায় প্রায় একশোটিরও বেশি কুকুরকে খাওয়ানো হয়েছে।

চিল্ড্রেন্স পার্কের পাশে একটি আবাসনের বাসিন্দা উজ্জ্বল মুখোপাধ্যায়। তিনি জানান, পাঁচ বছর আগে এই দিনেই ছিল প্রচণ্ড শীত। সে রাতে বাড়ি ফিরছিলেন স্থানীয় ব্যবসায়ী উজ্জ্বল। বাড়ি ঢোকার মুখে হঠাৎ একটি কুকুরের বাচ্চার কান্নার শব্দ শুনতে পান। বেশ কিছুক্ষণ ধরেই বাচ্চাটি কান্নাকাটি করছিল। কিন্তু তাকে খুজে পাওয়া যাচ্ছিল না। শেষে তিনি দেখেন, নর্দমার মধ্যে ছোট্ট কুকুরের বাচ্চাটি পড়ে রয়েছে। সেখান থেকে তাকে বাড়িতে তুলে নিয়ে আসেন উজ্জ্বল।

সেই সময়ে তিনি একটি ভাড়া বাড়িতে বসবাস করতেন। সেই বাড়িতে কুকুরের বাচ্চাটিকে শ্যাম্পু দিয়ে স্নান করিয়ে পরিষ্কার করে ভাল করে গা শরীর মুছে দেন। বেশ কিছুক্ষণ পরে আস্তে আস্তে বাচ্চা কুকুরটির কাঁপুনি বন্ধ হয়।

দলছুট হয়ে সে এই এলাকায় চলে এসেছিল। যে কারণে বাড়িতে বদ্ধ হয়ে থাকতে চাইছিল না। দু’দিন পরেই বাচ্চাটি বাড়ি থেকে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। কিন্তু বাড়ির কাছেই গাড়ির ধাক্কার তার সামনের একটি পা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ফের কুকুর ছানাটিকে রাস্তা থেকে তুলে এনে সুস্থ করে তোলেন উজ্জ্বলের পরিবার। তার পর থেকে সে আর এই বাড়ি ছেড়ে যায়নি। সেখানেই থেকে গিয়েছে। নাম রাখা হয় পুসু। প্রতি বছর এই দিনটিতেই কুকুরটির জন্মদিন পালন করা হয়।

প্রতিবেশীরা জানিয়েছেন, এ ভাবে রাস্তার কুকুরকে বাড়িতে তুলে নিয়ে আনতে সচারচর দেখা যায় না। ব্যতিক্রম এই পরিবারটি। এক প্রতিবেশী বলেন, ‘‘ওরা তো এক বিছানায় নিয়ে শুয়ে থাকে!’’

উজ্জ্বলের স্ত্রী কাকলি মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আমার এক মেয়ে রয়েছে। লেখাপড়ার জন্য সে বাইরে থাকে। পুসুকে আমি আমার আরও একটি মেয়ে বলে ভাবি। ওকে ছাড়া কিছু ভাবতে পারি না।’’

Dog Stray Dogs
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy