Advertisement
E-Paper

গন্ডগোল এড়াতে রুটমার্চ পুলিশের

তখনও পাকা রাস্তা দিয়ে মশ মশ করে বুটের আওয়াজ হারিয়ে যায়নি। জলপাই রঙের মিছিলটা হেঁটে চলে যাচ্ছে। পাশে বসা বৃদ্ধ ভেজাল সেখের উত্তরটা দিতে একটু দেরি হল।

সুজাউদ্দিন

শেষ আপডেট: ০৫ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০১:১৮
ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

মাচায় বসে ছেলেপুলেরা বিড় বিড় করে— ‘ভোট-ফোট নাই পুলিশের দাবড়ানি (টহল)
কেন কত্তা?’
জলঙ্গির খয়রামারি গ্রামের মাচায় বসে ফিসফিস করে জিয়ারুল সেখ। তখনও পাকা রাস্তা দিয়ে মশ মশ করে বুটের আওয়াজ হারিয়ে যায়নি। জলপাই রঙের মিছিলটা হেঁটে চলে যাচ্ছে। পাশে বসা বৃদ্ধ ভেজাল সেখের উত্তরটা দিতে একটু দেরি হল। কানে পৌছবেনা এমন দুরত্ব বুঝে বলে উঠলেন, ‘‘গৃহ যুদ্ধ, গৃহ যুদ্ধের আশঙ্কায় দাবড়িয়ে বেড়াচ্ছে পুলিশ। এক সময় দাবড়ে ভোট করেছে, এখন তার ফল সামাল দিতে হচ্ছে। দেখ কেমন লাগে!’’
মঙ্গলবার সকালে জলঙ্গির বিভিন্ন এলাকায় পুলিশর অকাল রুট মার্চকে ঘিরে এমন নানা প্রশ্ন উঠে এসেছে মানুষের মনে। সাধারণত ভোট এলেই এমন ছবি দেখতে অভ্যস্থ ডোমকল। ঘন ঘন পুলিশের রুট মার্চ, সন্ধ্যা হলেই চায়ের দোকানের ঝাঁপ বন্ধ। মাচা উল্টে দেওয়া ইত্যাদি। কিন্তু সামনে কোনও ভোট নেই। নেই এলাকায় গোনও গণ্ডগোল। তা হলে এমন অকাল রুট মার্চ কেন? জেলা পুলিশের এক কর্তা বলছেন, ‘‘আরে এটা আবার খুলে বলতে হবে! রাজ্য জুড়ে যা হচ্ছে দেখতেই তো পাচ্ছেন। তার পরে আর ঝুকি নেওয়া ঠিক হবে? আগাম একটু দাবড়ে দিয়ে যদি কিছুটা লাগাম ধরা যায় সেই চেষ্টাই করছি।’’ সে সব অবশ্য মানছেন না ডোমকলের পুরপ্রধান সৌমিক হোসেন, ‘‘কোনও গন্ডগোল নেই, পুলিশ পুলিশের
কাজ করছে।’’
মঙ্গলবার সকালে জলঙ্গির ভাদুরিয়াপাড়া, খয়রামারি ও ধনিরামপুর এলাকায় রুট মার্চ করেছে পুলিশ। বিরাট বাহিনী নিয়ে ডোমকলের এসডিপিও মাকসুদ হাসান ও ওসি দেবাশিষ সরকার লাঠি উচিয়ে হেঁটেছেন পথে। আর অসময়ে এমন রুট মার্চ দেখে চমকে উঠেছেন এলাকার মানুষ, কেউ বলেছেন লোকসভা ভোট কি চলে এল ভাই। আবার আর কেউ বলেছেন ঠেলা বোঝ। বিনা লড়াইয়ে ভোট করে এখন ঘর সামলাও। মুচকি হেসেছেন বিরোধী দলের নেতারাও। জলঙ্গি ব্লক কংগ্রেস সভাপতি আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘‘এত সবে শুরু, পিকচার আভি বাকি হ্যায়! বিরোধী হটিয়ে এখন বুমেরাং হয়ে ফিরে এসেছে গোষ্ঠীকোন্দল! গৃহ যুদ্ধের ভয়ে এখন রুট মার্চ করতে হচ্ছে পুলিশকে।’’
একে রাজ্য জুড়ে পঞ্চায়েতের পদের দখল নিয়ে দলের অন্দরে চলছে গণ্ডগোল। কোথাও আবার তা নিয়ে খুনের ঘটনাও ঘটেছে। ফলে ডোমকল মহকুমায় শাসক দল ‘আনকনটেস্টেড’ হয়েও গণ্ডগোলের আশঙ্কায় এখন বুক চাপড়াতে হচ্ছে।
জলঙ্গির তৃণমূল নেতা আরিফ বিল্লা বলছেন, ‘‘কোনও গৃহযুদ্ধ নয়, বিরোধিরা ভোটে লড়তে না পেরে এখন প্রাধান গঠনের সময় নানা সুড়সুড়ি দিচ্ছে। কিন্তু তাতে কোনও লাভ হবে না।’’
তবে বিজেপি’র জেলা সভাপতি গৌরীশঙ্কর ঘোষ বলছেন, ‘‘লাখ লাখ টাকা তুলে সব্বাইকে প্রধান করার আশ্বাস দিয়েছিল তৃণমূল। এখন পুলিশ নামিয়ে সামাল দেওয়ার চেষ্টা!’’

Police Crime Violence
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy