Advertisement
E-Paper

সত্যজিতের উপরে কেন ওদের রাগ? প্রশ্ন স্থানীয়দের

রাতেই তার বাড়িতে ভাঙচুর হয়েছিল। কিন্তু রবিবার রাত পর্যন্ত সেই অভিজিৎ পুণ্ডারীকে অধরাই। 

সুস্মিত হালদার

শেষ আপডেট: ১১ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০১:০৫
নিহত বিধায়কের মা অঞ্জনা বিশ্বাস।

নিহত বিধায়কের মা অঞ্জনা বিশ্বাস।

রাতেই তার বাড়িতে ভাঙচুর হয়েছিল। কিন্তু রবিবার রাত পর্যন্ত সেই অভিজিৎ পুণ্ডারীকে অধরাই।

তদন্তকারীদের পাশাপাশি স্থানীয় বাসিন্দাদের একটা বড় অংশেরই সন্দেহ, গায়ের ঝাল মেটাতে বিধায়ক সত্যজিৎ বিশ্বাসকে সে খুন করেছে। কিন্তু তার রাগের কারণ কী? সে ছাড়া আর যে তিন জনের নামে অভিযোগ, তারাই বা এই তালিকায় এল কেন?

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, এক সময়ে বগুলা কলেজের টিএমসিপি নেতা ছিল অভিজিৎ। ছাত্র সংসদের কোষাধ্যক্ষও ছিল এক বার। তবে সত্যজিৎ বিশ্বাসের গ্রামে বাড়ি হলেও এর আগে নিহত ব্লক তৃণমূল সভাপতি দুলাল বিশ্বাসের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত ছিল সে।

অভিজিতের পরিবার সূত্রের দাবি, বছর দুয়েক আগে সে খাদ্য দফতরে চাকরির পরীক্ষা দিয়েছিল। এ দিন তার দাদা প্রসেনজিৎ পুণ্ডারী বলেন, “অনেক আশা করে বিধায়ককে আমরা অনুরোধ করেছিলাম, চাকরিটা করে দিতে। তার পরেও চাকরি হয়নি। হয়তো তাতেই ক্ষোভ তৈরি হয়ে থাকতে পারে ভাইয়ের।” অভিজিৎকে না পেয়ে ওই রাতে পুলিশ তাঁদের মাকে নিয়ে গিয়ে আটকে রাখে বলেও তিনি অভিযোগ করেছেন।

আরও পডু়ন: প্রত্যক্ষদর্শীদের বয়ানে অসঙ্গতি, বিধায়ক খুনে প্রশ্ন ধৃতদের নিয়েও

কিন্তু শুধু ওই ঘটনাই নয়। স্থানীয় সূ্ত্রের খবর, গত দুর্গাপুজোর সময়ে মণ্ডপের সামনে বাজি ফাটানোয় অভিজিৎকে চড় মারেন সত্যজিতের ছোট ভাই, তখন মজিদপুর বুথের পঞ্চায়েত সদস্য অমিত বিশ্বাস। পরে কলেজ নির্বাচনে অভিজিৎকে টিকিটও দেননি বিধায়ক। এর পরে সত্যজিতের নামে নানা কথা বলতে শুরু করে অভিজিৎ। তদন্তকারীরা জেনেছেন, সত্যজিৎ তাঁর বাড়িতে অভিজিৎকে ডেকে সতর্ক করেছিলেন। কিন্তু সে কান দেয়নি। বিরোধিতা চালিয়ে যেতে থাকে। কালী পুজোর সময়ে সত্যজিৎ তাকে প্রকাশ্যে চড়ও মারেন। সেই রাগ থেকে সে এমনটা ঘটিয়ে থাকতে পারে বলে মনে করছেন তদন্তকারীরা।

আর বাকি তিন জন?

পুলিশের একটি সূত্রের মতে, সত্যজিতের পাশের পাড়া মসজিদপুরে তৃণমূলের একচ্ছত্র আধিপত্য ছিল। ধৃত কার্তিক মণ্ডলের একেবারেই ছোট্ট একটা গেঞ্জি কারখানা আছে। একদা বিধায়কের অনুগামী বলে পরিচিত, কিন্তু বিজেপির সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠতা বাড়তে থাকে। তা নিয়ে কার্তিককে বকাঝকা করেন সত্যজিৎ, এমনকি চড়ও মারেন বলে তাঁর পরিবারের অভিযোগ। তবে তাঁর মা জানকী মণ্ডলের দাবি, “আমার ছেলে কাল ওখানে যায়নি। কারখানায় ছিল।”

লরির চালকের সহকারী হিসাবে কাজ করত আর এক ধৃত সুজিত মণ্ডল। বছরখানেক আগে মানসিক সমস্যা হয়েছিল তার, এখনও ওষুধ চলছে বলে দাবি মা ভানু মণ্ডলের। তিনি জানান, শনিবার সন্ধ্যায় সে পুজোর মাঠে গিয়েছিল। রাতে ফিরে বলে, কাজে চলে যাচ্ছে। পরে অবশ্য সে ধরা পড়ে যায়।

কার্তিকের জ্যাঠার ছেলে কালীদাস মণ্ডল রংমিস্ত্রি। সে-ও তৃণমূল ছেড়ে বিজেপির দিকে ঝুঁকছিল। ফেসবুকে বিজেপির হয়ে তৃণমূলের বিরুদ্ধে পোস্ট করে সে সত্যজিতের রাগের কারণ হয়েছিল বলে তার পরিবারের দাবি। তার বাবা মঙ্গল মণ্ডল বলেন, “ছেলে বিজেপির হয়ে পোস্ট করায় সত্যজিৎ ওকে ডেকে ধমকেছিল।”

বিজেপির নদিয়া দক্ষিণ সাংগঠিক জেলা সভাপতি জগন্নাথ সরকার অবশ্য দাবি করছেন, “ওই চার জন কোনও দিনই আমাদের দলে যোগ দেয়নি। বরং ওরা তৃণমূলেরই সক্রিয় কর্মী। তদন্ত করে দেখা হোক, ওরা যদি সত্যিই এ কাজ করে থাকে, দলের কোন নেতার অঙ্গুলিহেলনে চলছে।”

TMC MLA Murder Krishnaganj TMC Satyajit Biswas
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy