E-Paper

স্কুলে নয়, বন্‌ধে তৃণমূল শিক্ষক নেতা পথে, বিতর্ক

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, শুধু বাইক বাহিনী নিয়ে কৃষ্ণনগর শহরে দাপিয়ে বেড়ানো নয়, পোস্ট অফিস মোড়ে বিজেপির মিছিলে হামলা করতেও দেখা গিয়েছে তৃণমূলের শিক্ষক সমিতির জেলা সভাপতিকে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ৩০ অগস্ট ২০২৪ ০৮:৪১
বুধবার, মৃণালিনী স্কুল বন্ধ করতে গেলে তৃণমূলের সাথে সংঘর্ষে এক বিজেপি কর্মীকে মারধর করছে তৃণমূলের লোকজন। ছবির ডানদিকে সাদা জমা পরা তৃণমূলের সেই শিক্ষক নেতা। কৃষ্ণনগরে। ছবি  সুদীপ ভট্টাচার্য

বুধবার, মৃণালিনী স্কুল বন্ধ করতে গেলে তৃণমূলের সাথে সংঘর্ষে এক বিজেপি কর্মীকে মারধর করছে তৃণমূলের লোকজন। ছবির ডানদিকে সাদা জমা পরা তৃণমূলের সেই শিক্ষক নেতা। কৃষ্ণনগরে। ছবি  সুদীপ ভট্টাচার্য

বন‌্ধে স্কুলে হাজিরা নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশমত তাঁর থাকার কথা ছিল স্কুলে। অথচ মুখ্যমন্ত্রী সেই নির্দেশকে কার্যত বুড়ো আঙুল দেখিয়ে বন‌্ধের দিন শুধু রাস্তাতেই থাকলেন না। বাইক বাহিনী নিয়ে দাপিয়ে বেড়ালেন তৃণমূলের এক শিক্ষক নেতা। যা নিয়ে মাঠে নেমে পড়েছে বিরোধীরা। প্রশ্ন উঠেছে তৃণমূলের অন্দরেও।

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, শুধু বাইক বাহিনী নিয়ে কৃষ্ণনগর শহরে দাপিয়ে বেড়ানো নয়, পোস্ট অফিস মোড়ে বিজেপির মিছিলে হামলা করতেও দেখা গিয়েছে তৃণমূলের শিক্ষক সমিতির জেলা সভাপতিকে। বিজেপির নেতা-কর্মীদের উপরে তাঁর হামলার ছবি সামনে আসায় রীতিমত অস্বস্তিতে তৃণমূলের জেলা নেতৃত্ব।

বুধবার বন‌্ধের দিন নির্দিষ্ট চারটি কারণ ছাড়া কোনও ভাবেই সরকারি দফতরের পাশাপাশি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অনুপুস্থিত থাকা যাবে না বলে সরাসরি নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

রাজ্য সরকারের তরফেও সেই মর্মে নির্দেশিকাও জারি করা হয়।সেখানে বলা হয় হাসপাতালে ভর্তি, ২৭ অগস্টের আগে থেকে গুরুতর অসুস্থ বা টানা ছুটিতে থাকা, পারিবারিক শোক ছাড়া শিশু যত্ন ছুটি, মাতৃত্বকালীন ছুটি, চিকিৎসা ছুটি ও ২৭ অগস্টের আগে অনুমোদিত ছুটি ছাড়া কোনও ভাবেই কর্মক্ষেত্রে অনুপস্থিত থাকা যাবে না। এর বাইরে কেউ অনুপস্থিত থাকলে কর্তৃপক্ষের তরফে কারণ দর্শানোর নোটিস পাঠানো হবে।

মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশের পরেও কী ভাবে তাঁরই দলের এক জন শিক্ষক নেতা এমন কাজ করলেন তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। নিখিলবঙ্গ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির জেলা কমিটির কোষাধ্যক্ষ কমল ঘোষ বলেন, “একজন শিক্ষক স্কুলে না গিয়ে কোনও রাজনৈতিক দলের মিছিলে হামলার নেতৃত্ব দেবেন এটা মানা যায় না। অত্যন্ত লজ্জার।’’

বিজেপির নদিয়া উত্তর সাংগঠনিক জেলার মিডিয়া আহ্বায়ক সন্দীপ মজুমদার বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী বনধ ব্যর্থ করতে যে নির্দেশ দিয়েছিলেন সেটা তাঁর দলের নেতারাই মানলেন না। বোঝাই যাচ্ছে দলের নেতা-কর্মীদের উপরে আর কোনও নিয়ন্ত্রণ নেই।’’

এই বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে পশ্চিমবঙ্গ তৃণমূল প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির কৃষ্ণনগর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি কিংশুক দাস বলেন, “আমি যে স্কুলে আসিনি তার কী প্রমাণ আছে। আপনি ফোন রাখুন।” এরপরই তিনি ফোন কেটে দেন। গোটা বিষয়টি নিয়ে অস্বস্তিতে তৃণমূলের জেলা নেতারা। দলের কৃষ্ণনগর সাংগঠনিক জেলার চেয়ারম্যান রুকবানুর রহমান বলেন, “কেউ যদি নেত্রীর নির্দেশ আমান্য করে থাকেন তাঁর বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করা হবে। তবে তিনি আদৌ অনুপস্থিত ছিলেন কিনা সেটা জানতে হবে।’’

জেলার প্রাথমিক স্কুল পরিদর্শক সুকুমার পাসারি বলেন, “আমরা জেলা সব স্কুল থেকে রিপোর্ট সংগ্রহ করছি। কেউ যদি যথাযথ কারণ ছাড়া স্কুলে অনুপস্থিত থাকেন তাহলে নিশ্চয়ই পদক্ষেপ করা হবে।”

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

BJP

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy