Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪
School

স্কুলছুট হয়ে ভিন্ রাজ্যে পরিযায়ী ক্লাস নাইন

কোভিড পরিস্থিতিতে লকডাউন ও তারপর টানা নয় মাস বন্ধ স্কুল। নতুন করে কবে স্কুল খুলবে কেউ জানে না। তার মধ্যে এসে গিয়েছে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক।

—প্রতীকী ছবি।

—প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বেলডাঙা শেষ আপডেট: ১৫ ডিসেম্বর ২০২০ ০৩:১৭
Share: Save:

স্কুলে এ বার কোন বার্ষিক পরীক্ষা হল না। ফলে নতুন শ্রেণিতে উত্তীর্ণ হওয়ার শংসাপত্রও মিলল না। তার মধ্যেই শুরু হয়েছে নতুন শিক্ষাবর্ষে ভর্তি। সেখানেই পরিষ্কার হচ্ছে কোন স্কুলে কত জন স্কুলছুট হচ্ছে।

কোভিড পরিস্থিতিতে লকডাউন ও তারপর টানা নয় মাস বন্ধ স্কুল। নতুন করে কবে স্কুল খুলবে কেউ জানে না। তার মধ্যে এসে গিয়েছে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক। চলেছে নবম ও একাদশ শ্রেণির রেজিস্ট্রেশন কাজ। তার মধ্যে একটা বড় তথ্য উঠে আসছে।

বেলডাঙা শ্রীশচন্দ্র উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আব্দুল হালিম মণ্ডল বলছেন, “আমি স্কুলের ছাত্রদের ফোন নম্বর নিজের কাছে রাখি। সেই নম্বর যাদের পাচ্ছি না তাদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে খোঁজ রাখি। সেখানে গিয়ে দেখি সপ্তম শ্রেনির অনেক ছাত্র কেউ মিষ্টির দোকানে, কেউ আনাজের দোকানে কাজে লেগেছে। নবম, দশম, একাদশ, দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্ররা কেউ ওড়িশা, দিল্লি, বিহার গিয়ে কাজে লেগেছে। আমি তাদের ফোন করে জানতে চেয়েছিলাম। তারা পরিস্কার জানিয়েছে তারা নতুন করে স্কুলে আসবে না।” তিনি বলেন, “আমাদের স্কুলে ভর্তি অনেকটা এগিয়ে গিয়েছে। সেখানেই উঠে আসছে নতুন স্কুল ছুটের সংখ্যা।”

প্রাথমিক ভাবে স্কুল মনে করছে, সপ্তম শ্রেণিতে স্কুলছুটের হার ২-৩ শতাংশ। নবম থেকে দ্বাদশ পর্যন্ত সেই সংখ্যা প্রায় ২৫-৩০ শতাংশ। নওদার আমতলা হাইস্কুলের শিক্ষক শমিক মণ্ডল বলেন, “টানা স্কুল বন্ধ থাকার ফলে অনেক সমস্যা বাড়ছে। তার মধ্যে স্কুল ছুটের সংখ্যা বাড়ছে। আমার এলাকার তোকিয়া এলাকার বেশ কিছু ছাত্র ভিন রাজ্য গিয়ে কাজ করছে।” রেজিনগরের রামপাড়া মাঙ্গনপাড়া হাইস্কুলের শিক্ষক সাবির চাঁদ বলেন, “অনেক ছাত্র ভিন্ রাজ্যে কাজে হাত লাগিয়েছে। ফলে সব স্কুলে স্কুট ছুট বাড়বে। এটা আগামী দিনে বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়াবে।” বহরমপুর আইসিআই স্কুলের প্রাক্তন শিক্ষক ও এবিটিএর জেলা সম্পাদক দুলাল দত্ত বলেন, “করোনা পরিস্থিতির বলি ছাত্ররা। টানা স্কুল বন্ধ থাকায় ছাত্রদের স্কুল ছুট হতে সাহায্য করছে। অনেক ছাত্র এই সুযোগে বাইরে কাজে চলে যাচ্ছে।” বেলডাঙার দেবকুণ্ড এসএআরএম গার্লস মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষিকা মুর্শিদা খাতুন বলেন, “টানা স্কুল বন্ধ। তার জেরে মেয়েরা স্কুলে আসছে না। আগে তাদের প্রতিদিন স্কুলে দেখতে পেতাম। কিন্তু এখন তা হচ্ছে না। এর মধ্যে নাবালিকা বিয়েও হচ্ছে। অনেকে স্কুল ছুট হয়ে যাচ্ছে। যেটা তাদের কাছে অভিশাপ।” এই প্রসঙ্গে জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক(মাধ্যমিক)অমর কুমার শীল বলেন, “যারা বাইরে গিয়েছে বলে শোনা যাচ্ছে, নিশ্চয় স্কুল খুললে স্কুলে আসবে। স্কুল খোলার পরে এই নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হবে। স্কুল ছুট যাতে কেউ না হয় সেই বিষয়ে আমরা সচেষ্ট হব।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

School Students work other states
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE