Advertisement
E-Paper

দ্বিতীয় বৈদ্যুতিক চুল্লি তৈরির কাজ শুরু হল

এত দিন মরেও যেন শান্তি ছিল না জঙ্গিপুরে। শ্মশানের চুল্লি বিভ্রাটে প্রায়শই মৃতদেহের সৎকার নিয়ে হয়রানির একশেষ হতে হতো মৃত ব্যক্তির পরিবারকে। এ বারে সম্ভবত সেই দুর্ভোগ থেকে রেহাই মিলতে চলেছে জঙ্গিপুরবাসির।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৪ জুলাই ২০১৬ ০১:১৫
উদ্বোধনে অভিজিৎ মুখোপাধ্যায়। — নিজস্ব চিত্র।

উদ্বোধনে অভিজিৎ মুখোপাধ্যায়। — নিজস্ব চিত্র।

এত দিন মরেও যেন শান্তি ছিল না জঙ্গিপুরে। শ্মশানের চুল্লি বিভ্রাটে প্রায়শই মৃতদেহের সৎকার নিয়ে হয়রানির একশেষ হতে হতো মৃত ব্যক্তির পরিবারকে। এ বারে সম্ভবত সেই দুর্ভোগ থেকে রেহাই মিলতে চলেছে জঙ্গিপুরবাসির। বুধবার থেকে রঘুনাথগঞ্জ মহাশ্মশানে দ্বিতীয় বৈদ্যুতিক চুল্লি তৈরির কাজ শুরু হল। প্রাথমিক পর্যায়ে খরচ হবে ৬৭ লক্ষ টাকা। সমস্ত টাকাটাই মিলেছে জঙ্গিপুরের সাংসদ অভিজিৎ মুখোপাধ্যায়ের সাংসদ তহবিল থেকে।

২০১১ সালে ওই শ্মশানে প্রথম বৈদ্যুতিক চুল্লি তৈরি হয়েছিল। তা চালু হতেই কাঠে শবদাহ করার ব্যবস্থা তুলে দেয় জঙ্গিপুর পুরসভা। কিন্তু গত ৫ বছরে একাধিক বার সেই বৈদ্যুতিক চুল্লি বিকল হওয়ায় শবদাহ নিয়ে চরম দুর্ভোগে পড়তে হয়েছে মানুষজনকে। ভাগীরথীর ভাঙনে ইতিমধ্যেই শ্মশানের কাঠের সব ক’টি চুল্লি নদী গর্ভে চলে গিয়েছে। তাই কাঠ মিললেও চুল্লি সাজানোর জমি মিলত না শ্মশানে।

এক পুরকর্তা জানান, বৈদ্যুতিক চুল্লির যে ফার্নেস রয়েছে অত্যধিক আগুনের তাপে প্রতি বছরই তা ভেঙে যায়। ফলে বদলাতে হয়। ফার্নেস ঠান্ডা হতে ৫ দিন, পরিষ্কার করতে দু’দিন এবং নতুন ফার্নেস লাগাতে ৫ দিন ছাড়াও বাড়তি আরও ৪-৫ দিন কেটে যায়। শ্মশানে দ্বিতীয় চুল্লি না থাকায় প্রতি বছরই মোটামুটি দিন ২০ বন্ধ রাখতে হয় চুল্লি। এ ছাড়াও নানা কারণে মাঝেমধ্যেই বিগড়েছে চুল্লিটি। সে ক্ষেত্রে কাঠের বিকল্প ব্যবস্থা না থাকায় দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছিল শবযাত্রীদের। দ্বিতীয় চুল্লি চালু হলে এই দুর্ভোগ অনেকটাই কমবে।

ভাগীরথীর তীরে কয়েকশো বছরের প্রাচীন রঘুনাথগঞ্জের এই মহাশ্মশানে মৃতদেহ সৎকারের জন্য বীরভূম, ঝাড়খণ্ডের বহু মানুষজন আসেন নিয়মিত। আগে প্রতিদিন গড়ে অন্তত ১০টি করে শবদাহ হতো কাঠে পুড়িয়ে। কাঠের জোগান দিত পুরসভা নিযুক্ত ঠিকাদার নির্দিষ্ট পয়সার বিনিময়ে। কাঠ পুড়িয়ে এ ভাবে শবদাহের ফলে এলাকায় ব্যাপক মাত্রায় দূষণ হতো তা-ই নয়, বহু ক্ষেত্রে দাহ অসমাপ্ত অবস্থাতেই নদীতে ফেলে দেওয়ায় ভাগীরথী জলে দূষণ বাড়ছিল। আশপাশের মানুষ নদীর জল ব্যবহার করতে পারতেন না। বছর পাঁচেক আগে গঙ্গা দূষণ রোধ প্রকল্পে কেন্দ্রীয় সরকারের আর্থিক সাহায্যে বৈদ্যুতিক চুল্লিটি চালু করা হয়।

বৈদ্যুতিক চুল্লি চালুর ফলে শবদাহ করার সময় যেমন ৪ ঘণ্টা থেকে কমে দাঁড়িয়েছে ৪৫ মিনিট। তেমনই ভাগীরথীর দূষণও কমে গিয়েছে অনেকটাই। ফলে বৈদ্যুতিক চুল্লির সুবিধা নিতে শবদাহের সংখ্যাও বেড়েছে। শ্মশানে বৈদ্যুতিক চুল্লি চালুর ফলে পুরসভাও কাঠ দিয়ে শবদাহ ব্যবস্থা বন্ধ করে দেয়। বন্ধ করে দেওয়া হয় কাঠ সরবরাহের জন্য ঠিকাদার নিয়োগও। আর এতেই সমস্যায় পড়তে হতো শবদাহের জন্য আসা আত্মীয় পরিজনেদের। দ্বিতীয় চুল্লির নির্মাণ কাজ শেষ হলে সে সমস্যা মিটে যাবে। পুরপ্রধান মোজাহারুল ইসলাম বলেন, “প্রথম চুল্লি তৈরির সময় দ্বিতীয় চুল্লি তৈরির সংস্থান রাখা হয়েছিল। তাই দ্বিতীয় চুল্লি তৈরির খরচ অনেকটাই কমে যাবে।”

electric furnace
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy