E-Paper

এক ঘণ্টাতেই গঙ্গায় পড়ল ২৫টি বাড়ি

সোমবার সকাল সাড়ে ৯টা থেকে নতুন শিবপুরে হঠাৎই একের পর এক বাড়ি ভাঙনের কবলে পড়ে। গঙ্গাগর্ভে পড়ে গঙ্গাপাড়ের একাধিক পাকা বাড়ি।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ৩০ জুলাই ২০২৪ ০৮:১৭
মুর্শিদাবাদের সামসেরগঞ্জের নতুন শিবপুর ভাঙা লাইনে নতুন করে শুরু হয়েছে গঙ্গার ভাঙন।চোখের সামনে তলিয়ে যাচ্ছে বাড়ি।

মুর্শিদাবাদের সামসেরগঞ্জের নতুন শিবপুর ভাঙা লাইনে নতুন করে শুরু হয়েছে গঙ্গার ভাঙন।চোখের সামনে তলিয়ে যাচ্ছে বাড়ি। ২৯ জুলাই, ২০২৪। ছবি: অর্কপ্রভ চট্টোপাধ্যায়

ঘন্টা খানেকের ভাঙনে শমসেরগঞ্জের নতুন শিবপুর গ্রামের অন্তত ২৫টি বাড়ি ধসে পড়ল গঙ্গায়। পাড় লাগোয়া ৪৮টি বাড়ির লোকজন আতঙ্কে ঘর ছেড়েছে এ দিন। গ্রামের প্রাথমিক স্কুল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ২০২০ সাল থেকে ভাঙন চলছে শমসেরগঞ্জে। ২০২১ সালেও ভয়ঙ্কর ভাঙনের কবলে পড়ে নতুন শিবপুর।

গঙ্গা ভাঙন প্রতিরোধ বিভাগের রঘুনাথগঞ্জ ডিভিসনের এগজ়িকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার সঞ্জয় সিংহ বলেন, ‘‘শমসেরগঞ্জে গঙ্গার জল প্রতিদিনই কমতে কমতে সোমবার ১৯.৯০ মিটারে নেমে যায়। জল কমে যাওয়ায় পাড়ের জমিতে শুষে থাকা জল নদীতে ফিরে যেতে চেষ্টা করে। ফলে আলগা হয়ে গেছে পাড়ের মাটি। তাতেই এই ভাঙন। জল কমতে থাকলে ভাঙন আরও বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে।”

সোমবার সকাল সাড়ে ৯টা থেকে নতুন শিবপুরে হঠাৎই একের পর এক বাড়ি ভাঙনের কবলে পড়ে। গঙ্গাগর্ভে পড়ে গঙ্গাপাড়ের একাধিক পাকা বাড়ি। বিশাল পাকা বাড়ি যখন কাঁপতে শুরু করে তখনই বিপদ বুঝে বাড়ি ছেড়ে বেরিয়ে আসেন বাদল মণ্ডল, সুনীল মণ্ডল সহ ৪ ভাইয়ের পরিবার। মিনিট পনেরোর মধ্যে চোখের সামনে ধসে পড়ে সেই বাড়ি। পাশেই পাকা বাড়ি রাজকুমার মণ্ডলের। ভাই ও ছেলেরা মিলিয়ে ৬টি পরিবার থাকতেন সেখানে। বাড়িতে তখন জলখাবার তৈরির প্রস্তুতি চলছিল। তার মাঝেই ‘গেল গেল’ চিৎকারে বাড়ি ছেড়ে বেরিয়ে আসেন তাঁরা। মিনিট দশেক সময় পেয়েছেন বড় জোর। তার মধ্যেই গঙ্গার মধ্যে পড়েছে আস্ত পাকা বাড়ি।

নদীর পাড়েই বাড়ি ছিল রাধারানী সিংহের। তিনি বলছেন, ‘‘সকাল সাড়ে ৯টা বাজে তখন। বাড়ি ধসে পড়ল। এখন কোথায় যাব কিছুই জানি না।’’ নমিতা মণ্ডল বলছেন, “স্বামী ভিন্ রাজ্যে কাজে গেছে। আজ সকালে বাড়ি ভেঙে পড়ল। কিছু রক্ষা করতে পারব ভেবেছিলাম। সব শেষ।”

খবর পেয়ে ছুটে আসেন গ্রামের মহিলা পঞ্চায়েত সদস্য সাবিনা খাতুনের স্বামী নাইরুল শেখ। তিনি বলেন, “এ দিনের ভাঙনে অন্তত ২৫টি বাড়ি তলিয়ে গেছে গঙ্গায়। অন্তত ৪৫টি পরিবার, শুধু বাড়ি নয়, সর্বস্ব হারিয়েছেন এ দিন। ৪৮টিরও বেশি বাড়ি প্রায় ঝুলে রয়েছে গঙ্গায়।’’ চাচণ্ড গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান ফিরদৌসি খাতুন বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী ১০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করেন গত বছর। তাতে কিছুটা কাজ হলেও এখন কাজ বন্ধ হয়ে রয়েছে। দুর্গতদের থাকার কোনও ব্যবস্থা এখনও করা যায়নি। আপাতত খাবারের ব্যবস্থা হয়েছে।”

শমসেরগঞ্জ ব্লকের বিডিও সুজিত কুমার লোধ বলেন, ‘‘ভাঙন দুর্গত এলাকায় একটি টিম পাঠানো হয়েছে। প্রাথমিক যা রিপোর্ট, কিছু বাড়ি গঙ্গায় তলিয়ে গেছে। টিম ফিরে রিপোর্ট দিলেই সব ব্যবস্থা করা হবে।”

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

River Erosion Samsherganj

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy