Advertisement
E-Paper

দ্বন্দ্বে জড়িয়ে ‘শো-কজ’ নোটিস পেলেন দুই নেতা

কলেজে ঢুকে গোলমাল পাকানোর অভিযোগে দল থেকে বহিষ্কৃত হয়েছেন বিধায়ক। শাসক দলের শৃঙ্খলারক্ষা কমিটি বুধবার ডায়মণ্ড হারবারের বিধায়কের বিরুদ্ধে যখন এই সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন, তখন রাজ্য নেতৃত্বের নির্দেশেই ফুলিয়ার বিবাদমান দুই তৃণমূল নেতাকে ‘শো-কজ’ নোটিস ধরানো হল।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৫ ০০:২৯

কলেজে ঢুকে গোলমাল পাকানোর অভিযোগে দল থেকে বহিষ্কৃত হয়েছেন বিধায়ক। শাসক দলের শৃঙ্খলারক্ষা কমিটি বুধবার ডায়মণ্ড হারবারের বিধায়কের বিরুদ্ধে যখন এই সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন, তখন রাজ্য নেতৃত্বের নির্দেশেই ফুলিয়ার বিবাদমান দুই তৃণমূল নেতাকে ‘শো-কজ’ নোটিস ধরানো হল। দু’টি ঘটনায় আপাত কোনও সাদৃশ্য না থাকলেও লাগামছাড়া গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে লাগাম পড়ানোর এই প্রক্রিয়াকে তাৎপর্যপূর্ণ বলে মানছেন শাসক দলের একটি অংশই।

তৃণমূলের নদিয়া জেলা সভাপতি গৌরীশঙ্কর দত্ত বুধবার জানান, দলের ঊর্দ্ধতন নেতৃত্বের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমেই শান্তিপুর পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি রঘুনাথ চট্টোপাধ্যায় এবং যুব তৃণমূলের জেলা কমিটির কার্যকরি সভাপতি শুভঙ্কর মুখোপাধ্যায় ওরফে পিটারকে শো-কজ করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। জেলা সভাপতির কথায়, ‘‘উত্তর পাওয়ার পরে পরবর্তী পদক্ষেপ ঠিক করা হবে।’’

বুধবার কৃষ্ণনগরের এভি স্কুলে বাঘাযতীনের আত্মোৎসর্গের শতবর্ষ পালন উৎসবে এসেছিলেন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। পিটার-রঘুনাথের দ্বৈরথ প্রসঙ্গে তাঁর স্পষ্ট বার্তা, ‘‘তাঁরা সংযত না হলে দলের তরফে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কাউকেই বরদাস্ত করা হবে না।’’ নদিয়ায় শাসক দলের নানা গোষ্ঠীর কোন্দল দীর্ঘ দিনের। এর আগে একাধিকবার সে দ্বন্দ্ব সামনে এলেও জেলা নেতারা কখনই সে কথা প্রকাশ্যে মানতে চাননি। সে প্রসঙ্গ তুলতেই বিরোধী দলের এক নেতার টিপ্পনি, ‘‘শো-কজের ঘটনা জেলায় দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব রয়েছে, সে কথা অন্তত প্রমাণ করল।’’

গত রবিবারই ফুলিয়ায় দুই তৃণমূল নেতা পিটার-রঘুনাথের দ্বৈরথ সামনে আসে। পিটারের নামের সঙ্গে দলের ‘যুবরাজ’ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম সরাসরি জড়িয়ে যাওয়ায় আর কোন্দল রোধে বার্তা দিতে তৎপর হন তৃণমূল নেতৃত্ব। সেই কারণে গত তিন দিন ধরে এই দুই নেতাকে ফোন করে সতর্ক করে দেওয়ার পাশাপাশি এক ধাপ এগিয়ে তড়িঘড়ি এ দিন শো-কজ করা হয়। এমনই দাবি তৃণমূলের একটি সূত্রের।

ফুলিয়ায় তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব দীর্ঘ দিনের। তৃণমূল সূত্রে খবর, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত ধরে পিটারের উত্থানের পরে সেই দ্বন্দ্ব বড় আকার নেয়। দলীয় কর্মীরা জানালেন, শান্তিপুর পঞ্চায়েত সমিতির সহ সভাপতি রঘুনাথ চট্টোপাধ্যায় তৃণমূলের জন্মলগ্ন থেকেই এলাকায় দলের নেতৃত্ব দিয়ে আসছেন। তার মাঝে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত ধরে ধুমকেতুর মতো উত্থান হয় পিটারের। পিটারকে তৃণমূল যুবার জেলা সভাপতি করা হয়। তৃণমূল যুবার বিলুপ্তির পরে তাঁকে যুব তৃণমূল কংগ্রেসের জেলার কার্যকরি সভাপতি করা হয়। এরই মধ্যে পিটারের বিরুদ্ধে বৃদ্ধার জমি দখল করতে চাওয়া থেকে তোলাবাজিতে নাম জড়ায়। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ট বলে তাঁর বিরুদ্ধে কেউ ব্যবস্থা নিতে পারেনি বলে অভিযোগ।

দুই নেতার এমন দ্বন্দ্বের আবহেই রবিবার রাতে নিজের বাড়ির কাছেই রঘুনাথবাবু ও তাঁর মেয়ে-জামাই আক্রান্ত হন। হামলায় নাম জড়ায় পিটারের। তারপরে পুলিশও কোনও ব্যবস্থা নেয়নি। এ বার সেই পরিস্থিতি বদলাতে শুরু করেছে বলে মনে করে তৃণমূলেরই একটি অংশ। একাধিক ঘটনায় পিটারের নাম জড়িয়ে যাওয়ায় বিব্রত ‘যুবরাজ’ পিটারের মাথার উপর থেকে নিজের হাত তুলে নিয়েছেন বলে দাবি তৃণমূলের এক জেলা নেতার। নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক সেই নেতা বলেন, ‘‘অভিষেক সেই সিদ্ধান্তের কথা জেলা জানিয়ে দিয়েছেন।’’

এত কিছুর পরেও মঙ্গলবার নতুন করে ফুলিয়ায় উত্তেজনা তৈরি হয়। এলাকার মানুষের দাবি, ওই দিন সকালে পিটারের ঘনিষ্ঠ বেশ কিছু বহিরাগত এলাকায় এসে নানা ভাবে তাঁদের শাসিয়েছে। কেন এমনটা হচ্ছে? স্থানীয় বিধায়ক পার্থসারথি চট্টোপাধ্যায় তার সদুত্তর দেননি। তিনি শুধু বলেন, ‘‘এলাকা মানুষ শান্তিপ্রিয়। সেই শান্তি বজায় রাখার জন্যে সকলের কাছে আবেদন করেছি। দলের তরফে কড়া পদক্ষেপ নেওয়ার কথাও বলেছি। জানতে পারছি দলও সে দিকেই এগোচ্ছে।’’

প্রতিক্রিয়া জানতে বারবার ফোন করেও পিটারের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। শো-কজ প্রসঙ্গে রঘুনাথবাবু বলেন, ‘‘চিঠি এখনও হাতে পাইনি।’’ দলকে দেওয়ার মতো জবাব তাঁর কাছে তৈরি আছে বলে
জানিয়েছেন তিনি।

Show cause notice Trinamool leader raghunath
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy