Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

কাজের খোঁজে মালয়েশিয়ায়, ঠাঁই দূতাবাসে

চাকরির টোপ দিয়ে বিদেশে নিয়ে গিয়ে কার্যত বন্দি করে রাখা হয়েছে কয়েক জনকে। সম্প্রতি নদিয়া জেলাশাসক সুমিত গুপ্তার কাছে এ অভিযোগ জানিয়েছিলেন নদিয়ার পলাশিপাড়ার বাসিন্দা কালাম হালসানা। আর তার জেরেই মঙ্গলবার কর্মস্থল থেকে পালিয়ে কুয়ালা লামপুরে ভারতীয় দূতাবাসে এসে আশ্রয় নিতে হল নদিয়ার ছয় যুবককে।

মুর্শিদের আবেদন। —নিজস্ব চিত্র

মুর্শিদের আবেদন। —নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
কৃষ্ণনগর শেষ আপডেট: ০৫ জানুয়ারি ২০১৭ ০১:২৯
Share: Save:

চাকরির টোপ দিয়ে বিদেশে নিয়ে গিয়ে কার্যত বন্দি করে রাখা হয়েছে কয়েক জনকে। সম্প্রতি নদিয়া জেলাশাসক সুমিত গুপ্তার কাছে এ অভিযোগ জানিয়েছিলেন নদিয়ার পলাশিপাড়ার বাসিন্দা কালাম হালসানা। আর তার জেরেই মঙ্গলবার কর্মস্থল থেকে পালিয়ে কুয়ালা লামপুরে ভারতীয় দূতাবাসে এসে আশ্রয় নিতে হল নদিয়ার ছয় যুবককে।

নামী কোম্পানি, মোটা মাইনে। স্থানীয় এজেন্টের কাছ থেকে বিদেশে চাকরির এমন লোভনীয় প্রস্তাব পেয়ে ২০১৫ সালের জুন মাসে মালয়েশিয়ায় পাড়ি দিয়েছিলেন নদিয়ার পলাশিপাড়ার বেশ কিছু যুবক। তাঁদের দাবি, তেহট্টের জিতপুরের বাসিন্দা আনারুল শেখের মাধ্যমে তাঁরা মালয়েশিয়ায় যান। সে জন্য মাথা পিছু আনারুল শেখ তাঁদের কাছ থেকে এক লক্ষ টাকা নিয়েছিল। মাস গেলে ভারতীয় টাকায় বিশ-পঁচিশ হাজার বেতনের স্বপ্ন দেখিয়েছিল। কিন্তু সেখানে গিয়ে নামী সংস্থার চাকরি তো দূরস্থান, মাঝেমধ্যেই কাজ জুটত না। এমনকী যেটুকু কাজ পেতেন, তার বেতনও হাতে আসত না। ফলে তাঁরা দেশে ফিরে আসতে চেয়েছিলেন।

কিন্তু দেশে ফেরার নাম করতেই শুরু হয় অত্যাচার। শর্তমাফিক চাকরিতে ঢোকার সময় তাঁদের ভিসা-পাসপোর্ট এজেন্টের কাছে জমা দিতে হয়েছিল। সে সব ফেরত চাইতেই শুরু হয় মারধর। শেষ পর্যন্ত তাঁরা বাড়িতে জানান গোটা বিষয়টা। গত ১ ডিসেম্বর পলাশিপাড়ার মুর্শিদ হালসানার বাবা কালাম হালসানা নদিয়ার জেলাশাসকের কাছে নিজের ছেলে-সহ মোট ৬ জনকে দেশে ফেরানোর জন্য আবেদন জানান।

এর পরই অত্যাচারের তালিকায় নতুন সংযোজন— দেশে যাওয়ার নাম করলেই মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে দিয়ে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হবে বলে ভয় দেখানো। বাধ্য হয়ে কর্মস্থল থেকে পালান ওই ছয় যুবক। আশ্রয় নেন কুয়ালা লামপুরে ভারতীয় দূতাবাসে। সব অভিযোগই তাঁরা দূতাবাসে জানিয়েছেন।

এ দিন জেলাশাসক সুমিত গুপ্তা বলেন, ‘‘ওঁদের আবেদন পাওয়ার পর আমরা তা রাজ্যের স্বরাষ্ট্র দফতরে পাঠিয়ে দিয়েছিলাম। স্বরাষ্ট্র দফতর সেটি বিদেশ মন্ত্রকে পাঠিয়ে দিয়েছে।’’ তবে জেলাশাসকের দাবি, পরে তাঁরা পালিয়ে এসে ভারতীয় দূতাবাসে আশ্রয় নিয়েছেন কি না, তা তাঁদের জানা নেই।

কালামের ছেলে মুর্শিদ হালসানা এ দিন কুয়ালালামপুরে ভারতীয় দূতাবাস থেকে টেলিফোনে জানান, ‘‘গত শনিবার আমরা ৬ জন পালিয়ে গিয়ে এক বাংলাদেশির কাছে আশ্রয় নিই। তাঁরই সাহায্যে মঙ্গলবার কুয়ালা লামপুরে ভারতীয় দূতাবাসে এসে আশ্রয় নিয়েছি।’’ তেহট্টের রাধানগরের আনোয়ার শেখ বলেন, ‘‘এখনও ভয়ে রয়েছি। ভিসা-পাসপোর্ট তো এজেন্টের হাতে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Malaysia Embassy
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE