বিয়ের মরসুমে সোনার দাম চড়ায় বাংলাদেশ থেকে সোনার পাচার ক্রমশ বাড়ছে। এই মুহূর্তে বাংলাদেশে ভারতীয় মুদ্রায় ২৪ ক্যারাট ১০ গ্রাম সোনার দাম ৪৪ হাজার টাকার আশপাশে। পশ্চিমবঙ্গের বাজারে সেই সোনার দাম প্রায় ৬২ হাজার টাকা। আর এই ফারাকের কারণেই বাংলাদেশ থেকে দক্ষিণবঙ্গের সীমান্ত পথে নানা কৌশলে সোনার পাচার বেড়েছে।
এ বছর গত সাড়ে ৪ মাসে এ পর্যন্ত শুধু মুর্শিদাবাদের সীমান্ত পথেই বিএসএফ জওয়ানদের হাতে ধরা পড়েছে ২.৯৮১ গ্রাম সোনা। বিএসএফের হিসেবে তার বাজার দাম প্রায় ১.৯৭ কোটি টাকা। আর দক্ষিণবঙ্গের তিন সীমান্ত জেলা উত্তর ২৪ পরগনা, নদিয়া ও মুর্শিদাবাদ মিলিয়ে গত দেড় মাসে বিএসএফের হাতে ধরা পড়েছে ২২ কিলো ৭৪৩ গ্রাম সোনা, যা অতীতে কখনও ধরা পড়েনি। যার দাম ১৪ কোটি টাকারও বেশি।
কেউ পায়ুদ্বারের মধ্যে ভরে, কেউ বা সাইকেলের টায়ার, টিউবের মধ্যে ভরে নিয়ে আসছে বাংলাদেশ থেকে সোনার বিস্কুট। এই পাচারের কাছে লাগানো হচ্ছে নানা রকমের মানুষকে।
কিন্তু কথায় আছে চোরের মন বোঁচকার দিকে। তাই যতই সতর্ক ভাবে সোনা নিয়ে আসা হোক, বিএসএফ চৌকি পেরনোর পথে তাদের সন্দেহজনক গতিবিধি দেখে বুঝে ফেলছেন বিএসএফ জওয়ানেরা। লালগোলার আটরশিয়া সীমান্তে দু’সপ্তাহে দু’বারে ১ কিলো (৯৯৯ গ্রাম) সোনা পাচারের সময় ধরেছে বিএসএফ। এক ব্যক্তিকে মেটাল ডিটেক্টর দিয়ে তল্লাশি করানোর সময় জানা যায় ধাতব কিছু রয়েছে তাঁর শরীরে। বহরমপুরে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে এক্সরে করে সেখানকার চিকিৎসকরা তাঁর শরীর থেকে বের করেন ছ’ ছটি সোনার বিস্কুট। যার ওজন প্রায় সাড়ে ছশো গ্রাম।
কেউ পোশাকের মধ্যে ব্ল্যাকটেপ দিয়ে এঁটে সোনা নিয়ে আসছে। কেউ মাছের গাড়ির মধ্যে লুকিয়ে, কেউ বা সীমান্তের বেড়ার ওপার থেকে ছুড়ে দিচ্ছে এপারে সোনার বাট, তা কুড়িয়ে নিচ্ছে অন্য জন। বিএসএফের দক্ষিণবঙ্গ সীমান্তের জনসংযোগ অধিকর্তা জানান, সীমা সাথী হেল্পলাইন নম্বর ১৪৪১৯-তে যোগাযোগ করে সোনা চোরাচালান সংক্রান্ত তথ্য জানাতে বলা হয়েছে।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)