Advertisement
E-Paper

হাতুড়ের উপর থেকে উঠল বয়কট

একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে নিতাইবাবু বলছেন, ‘‘যাক!’’ বাপ-ঠাকুর্দার গ্রামটা শেষ পর্যন্ত ছেড়ে যেতে হচ্ছে না তাঁকে। অথচ মাস কয়েক ধরে, ধোপা-নাপিত তো বটেই, গ্রামের মুদির দোকানে পা দিলেও তাঁকে শুনতে হত— ‘‘উঁহু, এখানে হবে না ডাক্তার!’’

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৪ জুলাই ২০১৬ ০১:০৫

একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে নিতাইবাবু বলছেন, ‘‘যাক!’’

বাপ-ঠাকুর্দার গ্রামটা শেষ পর্যন্ত ছেড়ে যেতে হচ্ছে না তাঁকে। অথচ মাস কয়েক ধরে, ধোপা-নাপিত তো বটেই, গ্রামের মুদির দোকানে পা দিলেও তাঁকে শুনতে হত— ‘‘উঁহু, এখানে হবে না ডাক্তার!’’

খান আশি পরিবারের হরিহরপাড়ার গোবিন্দপুর হাতুড়ে নিতাই বিশ্বাসকে এক ঘরে রেখেছিলেন, তা প্রায় বছরখানেক ধরে। বন্ধ হয়েছিল ধোপা নাপিতের সঙ্গেই তাঁর বাড়িতে কোনও সামাজিক অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়া। এমনকী শাশুড়ি মারা যাওয়ার পরে দাহ করার জন্য পড়শিদেরও পাশে পাননি তিনি।

কেন? গত বছর জৈষ্ঠ্য মাসে গ্রামের শিব মন্দিরে বাৎসরিক কীতর্ণে তেরোশো টাকা দিতে রাজি ছিলেন না নিতাই। বলেছিলেন, ‘‘তেমন পসার তো আর নেই আমি সাতশো টাকা আর তিন কেজি চাল দেব।’’ তাতেই বেঁকে বসেছিল গোবিন্দপুর।

মোড়লরা সভা ডেকে গ্রামের বাসিন্দাদের জানিয়ে দেয় যা ধার্য হয়েছে তাই দিতে হবে, অন্যথা হলে একঘরে। তার পর থেকেই চলছে নিতাই বিশ্বাসের সঙ্গে সামাজিক বয়কট। নিতাই জানান, তাঁকে গ্রামের কোনও দোকানে মাল দেয় না। গত এক বছর ধরে চিকিৎসার জন্যও কেউ তাঁকে বাড়িতে ডাকে না। চোখের জল মুছে নিতাই জানিয়েছিলেন, ‘‘জানেন, কেউ আমার সঙ্গে কথাও বলে না।’

মাসখানেক আগে তাঁর শাশুড়ি মারা যান। গ্রামের লোক এক জোট হয়ে দাবি জানায় আগে চাঁদা দাও তারপর সৎকার।

এ খবর আন্দবাজার পত্রিকায় প্রকাশের পরেই প্রশাসনিক তৎপরতা তুঙ্গে ওঠে। বুধবার হরিহরপাড়া ব্লকের বিডিও-র ঘরে গোবিন্দপুর গ্রামের মোড়ল ও নিযার্তিত নিতাই বিশ্বাসকে নিয়ে বৈঠকে বসেন জেলা কর্তারা। পৌরহিত্য করেন বিডিও সুশান্ত বালা। সেখানেই গাঁয়ের মোড়লদের স্পষ্ট জানানো হয়, বয়কট তো তুলতেই হবে, সঙ্গে মাফও করতে হবে চাঁদা।

হরিহরপাড়া ব্লকের বিডিও সুশান্ত বালা বলেন, ‘‘‘দু পক্ষকে ডেকে কথা বলা হয়েছে। সামাজিক বয়কট তোলা হয়েছে। আজ সন্ধ্যায় মন্দিরে গিয়ে হাত মিলিয়ে নেওয়ার কথা বলেছি। না হলে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

Social boycott quack doctor
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy