করিমপুর থেকে কল্যাণীর বাজারে পৌঁছে গিয়েছে বাংলাদেশের ইলিশ। শনিবার, কৃষ্ণনগরের গোয়াড়ি বাজারে। নিজস্ব চিত্র
বর্যার গোড়ায় খাঁ-খাঁ করলেও আপাতত এখন কয়েক দিন ধরে ইলিশ-রাজত্ব চলছে বাজারে। কল্যাণী থেকে করিমপুর, কৃষ্ণনগর থেকে নবদ্বীপ, কোনও ব্যতিক্রম নেই। তার চেয়েও বড় সুসংবাদ, জোগান বাড়ায় কমছে দাম। কৃষ্ণনগরের গোয়াড়িবাজারে গত এক সপ্তাহে সাইজ় অনুযায়ী ইলিশের দাম কমেছে ২০০ টাকা থেকে ৫০০ টাকা পর্যন্ত। এক আড়তদার সাবির দফাদার বলেন, “শনিবার এই বাজারে প্রায় ৫ কুইন্টাল বাংলাদেশি ইলিশের আমদানি হয়েছে। রবিবার সেটা ৮ থেকে ১০ কুইন্টাল হতে পারে।” কৃষ্ণনগরেরই পাত্রবাজারের মাছ বিক্রেতা সুভাষ হালদারের কথায়, “কিছু দিন আগেও বিশেষ শ্রেণির ক্রেতা ছাড়া ইলিশের দিকে কেউ তাকাচ্ছিলেন না। দাম কমায় এখন টুকটাক ভালই বিক্রি হচ্ছে। শনিবার ১০ কেজি মতো ইলিশ বিক্রি করেছি। রবিবারের বাজারে মনে হয় ২৫ কেজি বিক্রি করতে পারব।”
করিমপুরের মাছ ব্যবসায়ী গোবিন্দ হালদার জানান, শুরুর দিকে মূলত ডায়মন্ড হারবারের ছোট ইলিশের আমদানিই বেশি ছিল। যেগুলো ৭০০-৮০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে। তখন বাংলাদেশ থেকে কিছু বড় ইলিশ আসত। সেই ইলিশ প্রতি কেজি ১৬০০ থেকে ১৮০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।” গত কয়েক দিনে দুই রকম ইলিশের আমদানি বেশি হওয়ায় দাম অনেকটা কমে বাংলাদেশের ইলিশ এখন ১২০০-১৩০০ টাকায়, ডায়মন্ড হারবারের ইলিশ ৪০০-৫০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
ইলিশের দাম কমায় খুশি ক্রেতা-বিক্রেতা সকলেই। পীযূষ সাহা নামে এক সরকারি কর্মচারি বলেন, “গত সপ্তাহেও ইলিশ কিনতে গিয়ে দাম শুনে শেষে চিংড়ি কিনে বাড়ি ফিরেছি। দাম কমেছে শুনছি, রবিবার কেনার ইচ্ছে আছে।” বিক্রেতাদের অনেকেই জানাচ্ছেন, এমনিতেই খুব বড় মাপের ইলিশ কেনার ক্রেতা কম। করোনা পরিস্থিতিতে সেই ক্রেতা আরো কমে গিয়েছে। বড় হোটেল-রেস্তরাঁ সে ভাবে না খোলাও বড় ইলিশের বিক্রি কমার অন্যতম কারণ। বরং মাঝারি ইলিশ বিক্রির দিকেই তাকিয়ে বিক্রেতারা।
হুগলির সিঙ্গুর কলেজের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান তথা মৎস্যবিদ দেবজ্যোতি চক্রবর্তী বলেন, “সাধারণত জুন মাস থেকেই বঙ্গোপসাগর দিয়ে ঝাঁকে-ঝাঁকে ইলিশ ডিম পাড়ার জন্য গঙ্গা-পদ্মায় এসে পৌঁছয়। এ বছর লকডাউনের কারণে ইলিশ ধরার মরসুম ও দুই দেশের মধ্যে আমদানি-রফতানি কিছুটা ব্যাহত হওয়ায় বাজারে ইলিশ আসতে কিছু দিন দেরি হয়েছে”। অক্টোবর পর্যন্ত নদীতে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ মিলতে পারে বলেও অনুমান তাঁর।আশ্বিন এ বার মলমাস। পুজো পিছিয়ে গিয়েছে। আজ, রবিবার থেকে নয় ইলিশের ঘ্রাণেই আশ্বিন কাটুক!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy