বাবা ঘরে নেই।
কোথায় গেলেন? রাখিবুল আমতা আমতা করে, ‘‘এই সময়টা মাঠে সময় দিতে হয় তো।’’
হাঁটু তোলা খেটো ধুতি। ঘাম-স্নানে আপ্লুত রাখিবুলের বাবা নেহাজুদ্দিন মণ্ডল মাঠ ছাড়া বোজে না কিছুই। বলছেন, ‘‘মাধ্যমিকের পর আর পড়া হয়নি। ছেলেএমন রেজাল্ট করবে ভাবব কী করে!’’
বেথুয়াডহরির রাখিবুল মণ্ডল, শেষতক ‘এমন’ রেজাল্ট করে শুধু তাক লাগিয়ে দেওয়াই নয়, তার আটপৌরে স্কুলটাকে একেবারে রাজ্যের শিক্ষা মানচিত্রের সামনের দিকে এনে দিয়েছে। কলা বিভাগ থেকে প্রায় ৯৫ শতাংশ নম্বর পেয়ে নদিয়া জেলায় সেই প্রথম।
মাধ্যমিকের সময়ে হাতের লেখা তেমন ভাল ছিল না তার। তাঁর শিক্ষকেরা জানাচ্ছেন, গতি বড্ড কম ছিল। উচ্চমাধ্যমিকে টেস্টেও তাই ফল হয়নি তেমন, সাকুল্যে ৮৬ শতাংশ। ফাইনাল পরীক্ষায় তাই লেখার গতি বাড়াতে মন দিয়েছিল। রাকিবুল বলছে, ‘‘দুপুরটা হাতের লেখা প্র্যাকটিস করতাম।’’
বেথুয়াডহরি জেসিএম হাইস্কুলের ছাত্রটির নম্বর ৪৭৫। চাপড়ার হাতিশালা পঞ্চায়েতের মহেশনগর রাখিবুল দশ কিলোমিটার দূরে, নাকাশিপাড়ার বেথুয়াডহরি জেসিএম হাইস্কুলে আসত সাইকেল ঠেঙিয়ে। বেথুয়াডহরি জেসিএম হাইস্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সত্যরায় বর্ধন বলছেন, “রাখিবুল টেস্টে এত ভালো ফল করেনি। টেস্টের পরে কয়েক মাস লেখা পড়ার দিকে আরও বেশি নজর দিয়েছিল। যার ফলে সে খুব ভাল ফল করেছে।” ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দাবি, কলা বিভাগে এত নম্বর খুবই কঠিন। আমাদের স্কুলের শিপ্রা অধিকারী নামে আর এক ছাত্রী কলা বিভাগে ৯২শতাংশ নম্বর পেয়েছে।’’