Advertisement
E-Paper

ফলের সুতোয় ঝুলে কামরু

উনিশ তারিখটা তাঁর দলের নেতাদের কাছে যে কারণেই গুরুত্বপূর্ণ হোক না কেন, তৃণমূল নেতা কামরুজ্জামানেরে কাছে বাস্তবিকই বাঁচা-মরার দিন ডোমকলের লোকেরা বলছেন, ‘ওই দিন তৃণমূল সরকার গড়ার মতো আসন কুড়িয়ে নিলে বেঁচে গেল লোকটা, না হলে ও মরল!’

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৫ মে ২০১৬ ০২:৪৫

উনিশ তারিখটা তাঁর দলের নেতাদের কাছে যে কারণেই গুরুত্বপূর্ণ হোক না কেন, তৃণমূল নেতা কামরুজ্জামানেরে কাছে বাস্তবিকই বাঁচা-মরার দিন!

ডোমকলের লোকেরা বলছেন, ‘ওই দিন তৃণমূল সরকার গড়ার মতো আসন কুড়িয়ে নিলে বেঁচে গেল লোকটা, না হলে ও মরল!’

২১’শে এপ্রিল ভোটের সকালে প্রায় নিয়ম মেনেই রক্ত ঝরেছিল ডোমকলে। আর সেই রক্ত-স্রোতে ভেসে গিয়েছিল কামরু। এমনই যে তারপর পক্ষকাল পেরিয়ে গেলেও নিজের গ্রামে পিরতে পারেননি।

সিপিএম কর্মী তাহিদুল মণ্ডল খুনে প্রধান অভিযুক্ত ছিল ডোমকলের টাউন তৃণমূল সভাপতি কামরু। এটা যদি তার দলীয় পরিচিতি হয়, তাহলে তার প্রধান পরিচয়, স্থানীয় তৃণমূল প্রার্থী সৌমিক হোসেনের ছায়া সঙ্গী। শাসকের ভয়ে তাই কি ১৯ তারিখ পর্যন্ত কামরুকে ছুঁতে পারছে না পুলিশ? মানছেন না মুর্শিদাবাদ পুলিশ সুপার। তিনি নাগাড়ে বলে লেছেন, ‘ওর খোঁজ চলেছে।’ কিন্তু কামরু কোথায়? সৌমিক বলছেন, ‘‘ও কি বাচ্চা ছেলে যে আমি ওকে আগলে রাখব, শেল্টার দেব!’’

তাহলে গায়েব হয়ে গেল কামরু? ডোমকলের এক তৃণমূল নেতা বলছেন, ‘‘যদি ক্ষমতায় আসে জোট তাহলে ও হয় জেলের ঘানি টানবে। না হলে পালাতে হবে সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশ।’’ ১৯ তারিখই সেই দিন, যে দিন কামরুর গন্তব্য পরিস্কার হয়ে যাবে।

তাহলে কি কামরু কোথায় জেনেও পুলিশ তাকে ধরতে চাইছে না? পুলিশের এক জেলা কর্তা বলছেন, ‘‘এটা বড় কঠিণ প্রশ্ন। তবে পুলিশ চেষ্টা করলে তাকে কী আর খুঁজে বের করতে পারত না!’’

বিরোধীরাও বার বার দাবি করছেন, পুলিশ তৎপর হলে প্রশ্নটাই উঠত না। ১৯ তারিখের আগে তাকে গ্রেফতার করার সাহস দেখাচ্ছে না বলেই অভিযোগ করেছেন জেলা কংগ্রেসের এক নেতা। আর সিপিএমের এক জেলা নেতা বলছেন, ‘‘আর ক:টা দিন সবুর করুন, তারপর কে কাকে ধরে দেখবেন!’’ সিপিএমের ডোমকল জোনাল সম্পাদক মুস্তাফিজুর রহমানের দাবি, ‘‘কেবল কামরুজ্জামান নয়, পুলিশও তাকিয়ে আছে ১৯ মে’র দিকে। আমরাও নজর রাখছি পুলিশের উপরে। জোটের সরকার গড়ার পরে আমাদের প্রথম কাজ হবে তহিদুলের খুনিদের ধরতে পুলিশকে বাধ্য করা।

এ রাজ্যের বিভিন্ন জেলা এবং কলকাতাতেও কামরুর নিয়মিত যাতায়া আছে বলেই জানতে পেরেছে পুলিশ। ইতিমধ্য়েই বেশ কয়েক বার সে কলকাতা গিয়েছে। আইনজীবীদের সঙ্গে কথাও বলেছে। তবে কলকাতাতেই গোপনে লুকিয়ে আছে কামরু, এমনটা অন্তত জেলা পুলিশ মনে করছে না। দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, তার ঠিকানা কখনও বদলে যাচ্ছে পূর্ব মেদিনীপুরে কখনও বা ‘কেষ্টদা’র জিম্মায় বোলপুরে। টাওয়ার লোকেশন ধরেও তাকে খুঁজে পেরা দায়। কারণ, নিত্যই সে সিম বদলাচ্ছে বলে পুলিশের কাছে খবর।

নিবার্চনের দিন সকালে ডোমকলের হরিডোবা গ্রামে বুথের বাইরে আক্রান্ত হয়েছিলেন তহিদুল মণ্ডল। বোমা-হাঁসুয়ার কোপে তাঁকে বুথের বাইরে খুন করেছিল তৃণমূল। এমনই অভিযোগ সিপিএমের। তার পর থেকে সে পলাতক।

যদিও প্রথম কয়েক দিন সে এলাকাতেই ছিল বলে জানা গিয়েছে স্থানীয় সূত্রে। সিপিএমের দাবি, প্রথম থেকে আমরা বুঝতে পেরেছিলাম কামরুজ্জামান শাসক দলের এখন সম্পদ। ফলে ওকে ধরতে বেগ পেতে হবে। ঘটনার পর তিন দিন এলাকায় থাকলেও পুলিশ গা ছেড়ে থেকেছে। কংগ্রেসের দাবি, পুলিশ মুখে কামরুকে গ্রেফতারের কথা বললেও আদতে তারা জল মাপছে।

১৯ তারিখ সেই জল মাপা শেষ হয় কিনা, সে দিকেই তাকিয়ে সিপিএম।

votes result
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy