মাটিতে লুটিয়ে পড়েছে কলাগাছ। —নিজস্ব চিত্র
বছর খানেক আগে বিঘা তিনেক জমিতে কলাচারা লাগিয়েছিলেন রানাঘাটের কুশাবেড়িয়া গ্রামের বাসিন্দা পিন্টু বিশ্বাস। গাছে কাঁদিও নেমেছিল। আশায় বুক বেঁধেছিলেন পিন্টু। রবিবারের ঝড়ে মুখ থুবড়ে পড়ে বাগান। সেই থেকে মুখে কোনও কথা নেই পিন্টুর। বাগানের সামনে দাঁড়িয়ে বিড়বিড় করে বকে চলেন। জি়জ্ঞাসা করতে ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে থাকেন। তারপর হঠাৎ দু’হাতে মাথা চেপে বসে পড়েন। বাগানের দিকে তাকিয়ে সজল চোখে বলেন, ‘‘সব শেষ হয়ে গেল।’’
শুধু পিন্টু নন, রবিবারের ঝড়ে রবিবারের ঝড়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে দুই জেলায়। রবিবারের ওই ঝড়ে কোথাও তছনছ হয়ে গিয়েছে কলার বাগান। কোথাও গাছ ভেঙে চাপা পড়েছে বাড়ি। সর্বশান্ত হয়েছেন দুই জেলার কয়েকশো চাষি। রানাঘাট-২ নম্বর ব্লকের দত্তফুলিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের বিভিন্ন গ্রামের কয়েকশো চাষি কলাচাষ করেন। ঝড়ে কলাবাগান পড়ে যাওয়ায় বিস্তর ক্ষতির মুখে পড়েছেন তাঁরা। যদিও প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ক্ষয়ক্ষতির এখনও কোনও হিসেব মেলেনি।
রানাঘাট-২ নম্বর ব্লকের দত্তফুলিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের বিভিন্ন গ্রামে কয়েকশো চাষি কলা চাষ করেন। বছর খানেক আগে প্রতি বিঘা জমিতে ৪০০ গাছ লাগানো হয়। এ দিনের ঝড়ে সব কলাগাছ মুখ থুবড়ে পড়ে। স্থানীয় চাষি নিমাই বিশ্বাস বলেন, ‘‘দোকান থেকে আট হাজার টাকা ধার করে সার কিনেছিলাম। এখন কী করে সেই ধার শোধ করব বুঝতে পারছি না।’’
অন্য দিকে, এ দিন বহরমপুরের সাটুইতে ঝড়ের সময় মাঠে কাজ করছিলেন তিন চাষি। সে সময় বাজ পড়ে মৃত্যু হল এক চাষির। মৃতের নাম বিশ্বনাথ দাস (৩৩)। বাড়ি সাটুইয়ের ভগবানবাটি এলাকায়। জখম হন বাকি দুই চাষিও। তাঁদের মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ইসলামপুরের হাড়িভাঙায় বাজ পড়ে পুড়ে যায় তিনটি বাড়িও।
ঝড়ে গাছচাপা পড়ে মৃত্যু হল এক যুবকের। মৃতের নাম জাপান শেখ (২৮)। বাড়ি হরিহরপাড়ার লালনগরে। এ দিন বিকেলে ঝড়ে বাড়ির সামনে আম পড়তে শুরু করলে তিনি কুড়োতে যান। সে সময় একটি খেজুর গাছ তাঁর উপর ভেঙে পড়ে। হাসাপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে তাঁর মৃত্যু হয়।
Tag:
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy