মাঠে নামার প্রস্তুতি। নিজস্ব চিত্র
জার্মানি দেশে ফেরার বিমান ধরেছে। টলোমলো পায়ে শেষ ষোলোয় পৌঁছেছে আর্জেন্টিনা। ব্রাজিল দুর্দান্ত ছন্দে। কালো ঘোড়া বেলজিয়াম।
এমনিই বাঙালির ফুটবল প্রেমের অন্ত নেই। ইস্টবেঙ্গল-মোহনবাগান তো ছিলই। এখন কোপা আমেরিকা থেকে লা লিগা— টিভির সামনে পাগল আট থেকে আশি।
সেখানে আজ, শনিবার থেকে শুরু হচ্ছে বিশ্বকাপের নক-আউট পর্ব। এক দিনের বিরতি দিয়ে ফের পাড়ায়-পাড়ায় চালু রাতজাগা।
তেমনই রাত-জাগা দু’জোড়া চোখ শুক্রবার দুপুর রোদে নবদ্বীপের দোকানে-দোকানে হন্যে হয়ে কী যেন খুঁজছিল। মাধব ঘোষ আর হৃদয় শেখ। ক্লাস সেভেনের দুই পড়ুয়া ইদ্রাকপুর থেকে গঙ্গা পেরিয়ে এসেছে ব্রাজিলের জার্সি কিনবে বলে। চেনা হলুদ জার্সি মিললেও কিছুতেই প্যান্ট পাওয়া যাচ্ছিল না। শেষে ঢপওয়ালির মোড়ে এক দোকানে পাওয়া গেল সেই প্যান্ট।
নবদ্বীপে মানিকজোড় যখন ব্রাজিল নিয়ে নাকানিচোবানি, ও দিকে বহরমপুরে ওয়াইএমএ মাঠের পাশে আর এক দোকানে ফ্রান্সের জার্সির খোঁজে হাজির বছর দশেকের রমিত রায়। দোকানি তাকে হতাশ করেননি। বিশ্বকাপ চলছে আর ফ্রান্সের জার্সি স্টকে থাকবে না এ আবার হয় নাকি!
সত্যি বলতে, বিশ্বকাপ শুরুর থেকেই চাহিদা বেড়েছে আর্জেন্টিনা, ব্রাজিল, ইংল্যান্ড, পর্তুগাল, জার্মানি, স্পেনের জার্সির। তবে খেলা যত গড়াচ্ছে নামী দলের পাশে মেক্সিকো, নাইজিরিয়া, ক্রোয়েশিয়া, সেনেগালের জার্সিও রাখতে হচ্ছে দোকানে। দোকানিরা বলছেন, “ক্রোয়েশিয়ায় খেলছেন মেসির সতীর্থ রাকেতিচ বা মাদ্রিজের মতো খেলোয়াড়। তাদের টিআরপিও তো খারাপ নয়!” যদিও সর্বত্রই চাহিদা বেশি ব্রাজিল এবং আর্জেন্টিনার জার্সির। প্রথম দিকে সমানে পাল্লা দিচ্ছিল জার্মানিও। কিন্তু এখন আর চাহিদা নেই।
নবদ্বীপের খেলোয়াড় তথা ক্রীড়া সরঞ্জাম বিক্রেতা মনোজ চট্টোপাধ্যায় বলেন, “জার্মানির জার্সি আর পতাকা দুয়েরই খুব চাহিদা ছিল। যে ম্যাচে ওরা হারল তার আগের দিনই হইহই করে সব বিক্রি হয়ে গেল। ভাগ্যিস! না হলে বিপদে পড়তাম। ”
বহরমপুরের কট্টর জার্মান সমর্থক কল্লোল পাল অবশ্য শুক্রবারও তাঁর দলের জার্সির খোঁজে বেরিয়েছিলেন। তাঁর কথায়, “হেরেছি তো কী? পরের বার ঠিক জিতব।” কৃষ্ণনগরের দোকানি জয়দেব ঘোষ জানান, এখন সবচেয়ে চাহিদা ব্রাজিল-আর্জেন্টিনার ১০ নম্বর আর পর্তুগালের ৭ নম্বর জার্সির। অর্থাৎ নেমার, মেসি আর ক্রিস্টিয়ানো রোনাল্ডো! জয়দেবের মতে, “পতাকা বিক্রি হয় দলের ওজনে। আর জার্সি বিক্রি হয় তারকা খেলোয়াড়দের কারণে।’’
দাম কেমন?
বহরমপুরের বাজার বলছে, সস্তার জার্সি ৭০-৮০ টাকা থেকে শুরু। দামি হলে ৩৫০-৪০০ টাকা। তবে বাজারে বেশি বিকোচ্ছে ১২০-২০০ টাকার জার্সিই। দু’রকমের পতাকা কাটছে বেশি। আঠারো বাই চার ৫৪০ টাকায় এবং সাত বাই চার ২৫০ টাকায়। নবদ্বীপে অবশ্য বড় পতাকা বিক্রি হচ্ছে ৬০০ টাকায়। কৃষ্ণনগরে সাইজ অনুযায়ী মোটামুটি ৩০০-৫০০ টাকার মধ্যে।
আমরা না হয় বিশ্ব ফুটবলের ধারে-কাছে নেই। তা বলে কি জার্সি পড়ব না?
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy