Advertisement
E-Paper

ঠান্ডা মাথাতেই খুন কি, সন্দেহ জোরালো হচ্ছে

তিন-তিনটে দিন কেটে গিয়েছে, আশ্বাসই সার। মঙ্গলবার রাতে নবদ্বীপের নন্দীপাড়ায় নিজের বাড়িতেই খুন হওয়া নমিতা সাহার আততায়ী কে, সে কুয়াশা কাটাতে পারল না পুলিশ।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ০১:৪৮

তিন-তিনটে দিন কেটে গিয়েছে, আশ্বাসই সার।

মঙ্গলবার রাতে নবদ্বীপের নন্দীপাড়ায় নিজের বাড়িতেই খুন হওয়া নমিতা সাহার আততায়ী কে, সে কুয়াশা কাটাতে পারল না পুলিশ। স্বাভাবিক ভাবেই, ‘পুলিশি তৎপরতা’ দেখে ক্ষুব্ধ তাঁর আত্মীয়-স্বজনেরা।

শুক্রবার রাতেই সৎকার হয়েছে নমিতাদেবীর। মাঝের ক’টা দিন এ হাসপাতাল থেকে অন্য হাসপাতালের মর্গে ঘুরেছে মৃতদেহ। প্রথমে কৃষ্ণনগরে পাঠানো হয়। তার পর সেখান থেকে তদন্তের স্বার্থে মৃতদেহ পাঠানো হয় এনআরএসে। তাতেও প্রশ্ন উঠছে, কী এমন ঘটল, যে ময়নাতদন্ত করতে কলকাতায় নীলরতনে পাঠাতে হল দেহ। সে নিয়ে অবশ্য খোলসা করে কিছুই বলতে চাইছে না পুলিশ।

শুক্রবার বিকেলে কলকাতার নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজে ময়নাতদন্তের শেষে নমিতাদেবীর দেহ তুলে দেওয়া হয় তাঁর পরিবারের হাতে। ওই দিন বেশি রাতে নবদ্বীপ শ্মশানে শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়।

তবে প্রাথমিক তদন্তে একটা বিষয় ক্রমশ স্পষ্ট হয়ে উঠছে। বৃদ্ধাকে খুন করতেই রাতের অন্ধকারে হানা দিয়েছিল দুষ্কৃতীরা। লন্ডভন্ড ঘর, হাট করে খোলা আলমারি— স্রেফ দৃষ্টি ঘোরাতেই করা হয়েছিল। কারণ, ডাকাতিই যদি করতে আসে তারা, তা হলে নমিতাদেবীর হাতের দু’গাছা সোনার চুরি অক্ষত রইল কী ভাবে? এমনকী, কী কী খোয়া গিয়েছে, আদৌ কিছু খোয়া গিয়েছে কি না, তা-ও স্পষ্ট নয়। তবে তদন্তের স্বার্থে মুখে কুলুপ এঁটেছে পুলিশ। জেলা পুলিশের কর্তারা জানিয়েছেন, এখনই বলার মতো কিছু নেই।

এ নিয়ে ক্ষোভ চেপে রাখতে পারেননি পরিজনেরা। তিন দাদার এক মাত্র ছোট বোন ছিলেন নমিতাদেবী। বছর পাঁচেক আগে স্বামী মারা যাওয়ার পর থেকে ২৩ নম্বর ওয়ার্ডের ওই বাড়িতে একাই থাকতেন নিঃসন্তান বৃদ্ধা। দাদাদের চোখের সামনে বোনের এমন মর্মান্তিক মৃত্যু মেনে নিতে পারছেন না তাঁরা। মেজদা অমলেন্দু সাহার প্রশ্ন, “আমার চেয়ে দশ বছরের ছোট বোন এ ভাবে খুন গেল, কী অসহায় লাগছে বলুন!”

পরিবারের সকলের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ থাকলেও আসা-যাওয়া বেশি করতেন ভাইপো অনিব্রত। সাপ্তাহিক বাজার করা থেকে পিসির একাদশীর ফল-মিষ্টি, সব নিয়ম করে পৌঁছে দিতেন তিনিই। নমিতাদেবী খুন হওয়ার আগের দিনও তিনি বাজার নিয়ে গিয়েছিলেন। এ দিন তিনি বলেন, “পিসির কোলেপিঠেই বড় হয়েছি। প্রতি সপ্তাহে বাজার করে দিয়ে আসতাম। কিছুই কার্যত খেতেন না। ফলে বাজার নিয়ে আসার কোনও নির্দিষ্ট দিন ছিল না। জিনিসপত্র ফুরিয়ে গেলে আসতে হত।”

খুনের পিছনে কাউকে সন্দেহ হয় নাকি, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘‘বৃদ্ধ পিসিকে নানা রকম উপদ্রব সহ্য করতে হত। নানা ভাবে উত্যক্ত করা হত। এমনও হয়েছে সকাল বেলায় পিসির ফোন পেয়ে ছুটে এসেছি। বাড়ির গেটের সামনে নোংরা আবর্জনা, ডালপালা ফেলে আটকে দেওয়া হয়েছে। প্রায়শই এমন হত। কারা করত, কেন করত, খুনের সঙ্গে তাদের কোনও যোগাযোগ আছে কি না, এ সব নিয়েই প্রশ্ন জাগছে। উত্তরের অপেক্ষায় আছি।”

একই অভিযোগ অমলেন্দু বাবুরও। তাঁর কথায়, “নবদ্বীপের মতো শহরে অতটা জায়গা নিয়ে দোতলা বাড়ি। অনেকেরই নজর থাকতে পারে। বোন মাঝেমাঝেই বলত, কারা যেন লুকিয়ে বাড়িতে ঢোকে। পুলিশকে সব জানিয়েছি।”

তবে এ সব নিয়ে টু শব্দটি করতে রাজি নন নমিতাদেবীর প্রতিবেশীরাও। বাগানঘেরা তালাবন্ধ বাড়িটার মতোই থমথম করছে গোটা পাড়া।

Cold Blooded Murder Murder
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy