Advertisement
E-Paper

শিক্ষক সাসপেন্ডে অশান্ত উইমেন্স, হল পথ অবরোধ

শুক্রবার দুপুরে শিক্ষকদের সঙ্গে ছাত্রীরাও দীর্ঘ সময় রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখান। জেলাশাসক পরে সেই সাসপেনশন বাতিল করলে অবরোধ তুলে নেওয়া হয়। কিন্তু এই ঘটনার পর অধ্যক্ষের সঙ্গে শিক্ষকদের বিবাদ আরও চরম আকার নিল বলেই মনে করছে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষ।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৬ মার্চ ২০১৯ ০৫:০২
উইমেন্স কলেজের পড়ুয়াদের বিক্ষোভ। ছবি: প্রণব দেবনাথ

উইমেন্স কলেজের পড়ুয়াদের বিক্ষোভ। ছবি: প্রণব দেবনাথ

বিরোধটা চলছিল দীর্ঘদিন ধরেই। বৃহস্পতিবার রাতে কৃষ্ণনগর উইমেন্স কলেজের অধ্যক্ষ মানবী বন্দ্যোপাধ্যায় শিক্ষক সুদর্শন বর্ধনকে সাসপেন্ড করার নোটিস ঝোলাতেই তা ফের প্রকাশ্যে চলে এল।

শুক্রবার দুপুরে শিক্ষকদের সঙ্গে ছাত্রীরাও দীর্ঘ সময় রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখান। জেলাশাসক পরে সেই সাসপেনশন বাতিল করলে অবরোধ তুলে নেওয়া হয়। কিন্তু এই ঘটনার পর অধ্যক্ষের সঙ্গে শিক্ষকদের বিবাদ আরও চরম আকার নিল বলেই মনে করছে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষ।

২০১৫ সালের জুনে কৃষ্ণনগর উইমেন্স কলেজে অধ্যক্ষ হিসাবে যোগ দিয়েছিলেন মানবী। দেশের প্রথম রূপান্তরিত অধ্যক্ষ হিসেবে গোড়ায় তাঁকে নিয়ে শিক্ষকেরা উচ্ছ্বসিত হলেও কিছু দিন পর থেকেই নানা কারণে দূরত্ব তৈরি হতে থাকে। শেষ পর্যন্ত পারস্পরিক সম্পর্ক এমন তিক্ত হয়ে যায় যে এক শিক্ষিকা ছাড়া বাকি প্রায় সকলেই তাঁর বিরুদ্ধে চলে যান। অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে বেশ কিছু অভিযোগ তুলে তাঁকে অপসরনের দাবিতে ছাত্রীদের সঙ্গে নিয়ে কৃষ্ণনগর শহরে মিছিলও করেন শিক্ষকেরা।

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

কিন্তু তার পরেও পরিস্থিতির কোন উন্নতি হয়নি, বরং দূরত্ব আরও বেড়ে ব্যক্তিগত কাদা ছোঁড়াছুঁড়ির পর্যায়ে পৌঁছেছে। অধ্যক্ষকে সরানোর দাবি তুলে দিনের পর দিন টিচার্স রুমে না বসে কলেজের বারান্দায় বসেছেন শিক্ষকেরা। একাধিক দিন কর্মবিরতিও করেছেন।

রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে একাধিক বার দেখা করেছেন তাঁরা। কিন্তু লাভ হয়নি। এ দিন সুদর্শনকে সাসপেন্ড করে কার্যত আগুনে ঘি ঢালেন মানবী। শিক্ষকদের পাশাপাশি ছাত্রীদেরও একটা বড় অংশ ক্ষোভে ফেটে পড়েন। তাঁদের অভিযোগ, এ নিয়ে অধ্যক্ষের সঙ্গে কথা বলতে গেলে তিনি কোনও কথা শুনতে রাজি হননি।

এর পরই জেলাশাসকের দফতরের সামনে গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন শিক্ষক ও ছাত্রীরা। সুদর্শনের সাসপেনশন তুলে নেওয়ার পাশাপাশি মানবী হটানোর দাবিও তোলা হয়। জেলা প্রশাসনের কর্তারা শিক্ষকদের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেন। তার পরেই জেলাশাসক চিঠি দিয়ে জানান, এই সাসপেনশন অবৈধ। খবর পেয়ে উল্লাসে ফেটে পড়েন পড়ুয়ারা। তাঁরা মিছিল করে করে কলেজে যান। সুদর্শনের দাবি, “এটা আমাদের নৈতিক জয়। আমরা যে বারবার বলে আসছি অধ্যক্ষ নানা অনৈতিক কাজ করছেন, এই সিদ্ধান্ত সেটাই প্রমাণ করে।”

কেন সুদর্শনকে সাসপেন্ড করার সিদ্ধান্ত নিলেন মানবী? সাসপেন্ড করার কারণ হিসাবে লিখিত ভাবে জানানো হয়েছে, অধ্যক্ষ ও কর্মীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করাতেই এই শাস্তি। তবে শিক্ষকদের একটা অংশের দাবি, সুদর্শন শিক্ষকদের মানবী-বিরোধী বিক্ষোভের প্রধান মুখ হয়ে উঠেছেন। তাই চাপ তৈরি করতেই তাঁর উপরে খাঁড়া নামানোর পরিকল্পনা।

প্রশ্ন হল, যেখানে মাথার উপরে ‘অ্যাডমিনিস্ট্রেটর’ হিসাবে জেলাশাসক আছেন, অধ্যক্ষ কি কাউকে সাসপেন্ড করতে পারেন? মানবীর দাবি, “আমার উপরে মানসিক নির্যাতন চালাচ্ছেন ওই শিক্ষক। বাধ্য হয়েই আমি ওঁকে সাসপেন্ড করার জন্য জেলাশাসকের অনুমতি চেয়েছিলাম। দীর্ঘদিন ধরে উনি সেটা নিয়ে কিছু না বলায় নিজেই সাসপেন্ড করতে আমি বাধ্য হয়েছি।” তিনি আরও বলেন, “আমি নিজে সাসপেন্ড হয়ে গেলেও সুদর্শন বর্ধনের সাসপেনশন প্রত্যাহার করব না।”

তবে সাসপেনশন বাতিল করে জেলাশাসক সুমিত গুপ্ত বলেন, “যদি কাউকে সাসপেন্ড করার প্রয়োজন হয়, আমিই করব। অধ্যক্ষের সেই ক্ষমতা নেই। বিষয়টি নিয়ে তাঁর সঙ্গে কথা বলব।”

Krishnanagar Women's College Student agitation Teacher Suspension
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy